সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমান জনগোষ্ঠীকে আবারও ‘বেঙ্গলি’ হিসেবে অভিহিত করেছে মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নকে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্র ‘জেনোসাইড’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মিয়ানমার ওই শব্দ ব্যবহার করেছে। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিজেদের নাগরিক বলে স্বীকার করে না। তৎকালীন বেঙ্গলের (বর্তমানে বাংলাদেশ) বাসিন্দা বোঝাতে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ‘বেঙ্গলি’ বলে থাকে।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার ফেসবুক পেজে গতকাল মঙ্গলবার জেনোসাইডের অভিযোগ নাকচ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে মিয়ানমার লিখেছে, জেনোসাইড প্রতিরোধবিষয়ক সনদের অন্যতম পক্ষ হিসেবে জাতিসংঘের সনদসহ সংশ্লিষ্ট সব ধরনের বাধ্যবাধকতা পূরণে মিয়ানমার বদ্ধপরিকর। মিয়ানমার এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের জেনোসাইডের কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়নি। তা ছাড়া জাতি, ধর্ম কিংবা অন্য কোনো গোষ্ঠীকে পুরোপুরি কিংবা আংশিকভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার কোনো কাজ মিয়ানমার করেনি।
সৌজন্যে : আমরা সবাই (সমাজ ও মানব উন্নয়ন মূলক সংগঠন)
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন রোহিঙ্গা নিপীড়নকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে অভিহিত করতে গিয়ে যে বর্ণনা দিয়েছেন তা বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। তাঁর বর্ণনায় যা উঠে এসেছে, তা অবিশ্বস্ত সূত্র এবং যাচাই না করেই প্রচারিত ঢালাও মন্তব্য। তাই মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁর ওই বিবৃতি জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। মিয়ানমার বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।
উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা জেনোসাইডের অভিযোগে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার মামলা চলছে। আইনি সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘জেনোসাইড’ ‘গণহত্যার’ (মাস কিলিং) চেয়েও বড় কিছু। এর মূল উদ্দেশ্য কোনো জাতি বা গোষ্ঠীকে ধ্বংস বা নিশ্চিহ্ন করা।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন বলেছেন, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হামলার মাধ্যমে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমান জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করার স্পষ্ট অভিপ্রায় ছিল।