ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার নিন্দা ও হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ ৩৫টি দেশ। তারা সবাই প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান না নিয়ে ‘অ্যাবস্টেইন’ (পক্ষে, বিপক্ষে কোনোটাই নয়) ভোট দিয়েছে।
গতকাল বুধবার প্রস্তাবটি শেষ পর্যন্ত ১৪১-৫ ভোটে গৃহীত হয়েছে। প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়া পাঁচটি দেশ হলো রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া ও সিরিয়া।
আফগানিস্তান, মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটান প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
এর আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সংযত আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। গত মঙ্গলবার রাতে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বিশেষ অধিবেশনে আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থায়ী প্রতিনিধি মো. মনওয়ার হোসেন এ আহ্বান জানান।
মনওয়ার ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব বিষয়ে জাতিসংঘের নীতির প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন জানান।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের উপস্থায়ী প্রতিনিধি জাতিসংঘ মহাসচিবকে উভয় পক্ষের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা শুরুর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি ইউক্রেন ছাড়তে আগ্রহীদের নিরাপদে ইউক্রেন থেকে বের হওয়ার সুযোগ দেওয়ার ও নির্বিঘ্নে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
রাশিয়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ শুরুর বেশ আগে থেকেই এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কূটনৈতিক তত্পরতা চলছে। এর প্রভাব ঢাকায়ও পড়েছে। দূতাবাসগুলো বাংলাদেশ সরকারের কাছে তাদের অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করছে। রাশিয়া দূতাবাস ইউক্রেনে তার ‘নিরাপত্তা ঝুঁকির’ বিষয়টি তুলে ধরেছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও বিভিন্ন পশ্চিমা দূতাবাস রাশিয়ার অভিযানের বিরুদ্ধে সরব রয়েছে।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন আগেই বলেছেন, এ সংকটে বাংলাদেশ কারো পক্ষ নিতে চায় না। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশ তার প্রতিবেশীসহ সমমনা দেশগুলোর অবস্থান পর্যবেক্ষণ করছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন—দুই দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক আছে। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউর সঙ্গেও বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ কারো পক্ষে বা কারো বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গত মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে একটি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ‘আমরা সব ধরনের যুদ্ধের বিরুদ্ধে। জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগে এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক, আমরা সেটাই চাই। ’
তিনি জানান, ক্ষুদ্র দেশ হিসেবে সব ধরনের যুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক সংকট বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী।
সৌজন্যে : আমরা সবাই (সমাজ ও মানব উন্নয়ন মূলক সংগঠন)