সংরক্ষিত আসন পেতে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের (এসআইসি) সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।
সংরক্ষিত আসনের অভাবে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে সরকার গঠন করতে বাধার সম্মুখীন হবে বুঝতে পেরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
পিটিআই-এর একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিটিআই স্বতন্ত্র সদস্যরা হলফনামা জমা দেওয়ার পর ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে যোগ দেবেন। যদিও এর আগে দেশটির আরেক রাজনৈতিক দল মজলিশ ওয়াহদাত-ই-মুসলিমিনের (এমডব্লিউএম) সঙ্গে কেন্দ্রে এবং পাঞ্জাব প্রদেশে জোট গঠন করার ঘোষণা দিয়েছিল পিটিআই। কিন্তু এই ঘোষণার পর দলের কিছু সদস্য এমডব্লিউএম’র সঙ্গে জোট গঠনের বিরোধিতা করেন।
পিটিআই’র একাধিক সূত্র বলেছে, তারা কেন্দ্র এবং পাঞ্জাবে সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কোনও দলই সরকার গঠন করার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ৯২টি আসনে জয় পেয়েছেন ইমরান খানের পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নিজেদের পক্ষের আসনসংখ্যা বাড়াতে সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সঙ্গে জোট করার বিষয়ে পিটিআই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে তারা নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত আসন দাবি করবে।
বিরোধী দলের ভূমিকায় সংসদে যেতে নির্দেশ ইমরানের
কেন্দ্রীয় ও পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে (সংসদে) বিরোধী দল হিসেবে যোগদানের জন্য দলীয় নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান নেতা ইমরান খান। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছেন পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিষ্টার সাইফ।
তিনি বলেছেন, দলীয় প্রধানের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে বিরোধী দল হিসেবে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
রাজধানী ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের ব্যারিস্টার সাইফ আরও জানিয়েছেন, ইমরান খানের নির্দেশনা অনুযায়ীই তারা অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৬টি আসনের মধ্যে ২৬৫ আসনে নির্বাচন হয়। তবে দলীয় প্রতীক না থাকায় এবারের নির্বাচনে ইমরান খানের মনোনীত ব্যক্তিরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর ব্যানারে নির্বাচন করেন। স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করেও পিটিআই ৯২টি আসনে জয় পায়।
তবে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করলও পিটিআইয়ের স্বতন্ত্রদের যে কোনো একটি রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে হবে এবং ওই দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে হবে।
সূত্র: জিও টিভি, দ্য ডন
নওয়াজ নন যে কারণে শেহবাজ হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এতে কোনও রাজনৈতিক দলই সরকার গঠনে এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরানের খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসনে জয় পেয়েছেন। কিন্তু তারপরও সরকার গঠন করতে পারছে না দলটি। এই পরিস্থিতিতে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজ করছে এক অস্থিরতা। তবে জোট গঠনের মাধ্যমে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে নওয়াজ শরিফের দল পিএলএম-এন। তবে নওয়াজ শরিফ নন, প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন তার ছোট ভাই শেহবাজ শরিফ। কিন্তু কেন?
গত দশকের মাঝপথে দুর্নীতির মামলায় আজীবন নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত হয়ে ব্রিটেনে পাড়ি জমান পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
এ সময় সর্বমহলের কাছে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার ছিল, নওয়াজকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতায় বসাতে মরিয়া। তবে ভোটে ইমরানপন্থীদের অবিস্মরণীয় জয়ের পর জোট রাজনীতির ঘটনাপ্রবাহে নিজেকে প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড় থেকে সরিয়ে নিয়েছেন নওয়াজ। আর এর পেছনের কারণ খুঁজতে নানা সমীকরণ মিলিয়ে দেখছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলো।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে অনাস্থা ভোটে হারানোর পর জোট সরকারের নেতৃত্ব দেন নওয়াজের ভাই শেহবাজ শরিফ। ভাইয়ের প্রত্যাবর্তনের পর থেকে ভোটের ফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত নানা সময় তিনি বলেছেন, পিএমএল-এন-এর প্রধান নওয়াজ শরিফকে চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে মুখিয়ে রয়েছেন তিনি।
এই নির্বাচনে ইমরানপন্থী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ৯৩ আসনে জয় পেলেও দল হিসেবে সর্বোচ্চ আসন পাওয়া পিএমএল-এন সরকার গঠনে ভুট্টো পরিবারের পিপলস পার্টির (পিপিপি) দ্বারস্থ হয়েছে, যারা পেয়েছে ৫৪ আসন। মঙ্গলবার ইসলামাবাদে মুসলিম লীগ-কায়েদে আজম (পিএমএল-কিউ) প্রধান চৌধুরী সুজাতের বাসভবনে মিলিত হন শেহবাজ, পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারিসহ এমকিউএম-পি, আইপিপি ও অন্যান্য দলের নেতারা।
পরে সংবাদ সম্মেলনে জোট সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরই নওয়াজকন্যা মরিয়ম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, শেহবাজ হচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং তিনি হচ্ছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। নওয়াজ তাদের পর্দার আড়াল থেকে নির্দেশনা দেবেন।
কেন নওয়াজ শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ালেন— বিষয়টি ব্যাখা করতে গিয়ে পাকিস্তানি সাংবাদিক রিজওয়ান শেহজাদ বলেন, “নির্বাচনী রায়ের বিভক্তি, শেষ মুহূর্তে তার ভাই শেহবাজের অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেকে নতুন একটি রাজনৈতিক ভূমিকায় দেখা ছাড়া বিকল্প কিছু খুঁজে পাননি নওয়াজ শরিফ।”
নওয়াজের নিজের অবস্থানের ব্যাপারটি কেমন— এমন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মেয়ে মরিয়ম। তিনি বলেন, “নওয়াজ দলের ‘নির্বাচক’ বা ‘মনোনয়নকারীর’ ভূমিকায় থাকবেন, যিনি পর্দার আড়াল থেকে ভূমিকা রাখবেন।”
আবার ওই সংবাদ সম্মেলনের সঙ্গেও নওয়াজের সিদ্ধান্তের যোগসূত্র খোঁজা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন না পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। আবার বাবা আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে তার বেশ কিছু মতভেদও পরিষ্কার হয় সংবাদ সম্মেলনে। তার অনুপস্থিতির সঙ্গে কি নওয়াজের সিদ্ধান্তের কোনও সম্পর্ক রয়েছে— এমন জল্পনা এখন পাকিস্তানজুড়ে।
পিএমএল-এনের নেতাকর্মীদের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষা রয়েছে। তবে এ নিয়ে কেউই প্রকাশ্যে কথা বলছে না। অন্তত বুধবার পর্যন্ত পরিস্থিতি তেমনই। অনেকে বলছেন, নওয়াজের এই সিদ্ধান্তের পেছনে নিশ্চয়ই কোনও জটিলতা রয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আপনা-আপনি আসেনি। বাইরের কোনও জটিলতাই তাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে তাড়িত করেছে।
নওয়াজের ওপর থেকে যখন একের পর এক আইনি ঝামেলা উঠে যাচ্ছিল, তার বিরুদ্ধে থাকা মামলা খারিজ হচ্ছিল; ওই সময় অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী পদে না-ও দেখা যেতে পারে নওয়াজকে। তখন আরও বলা হচ্ছিল, শেহবাজের নেতৃত্বে পিপিপি, পিএমএল-এন, জেইউআই-এফ এবং অন্যান্য দল নিয়ে গঠিত পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) জোট সরকারের প্রথম দফার শাসন আরও এক দফা আসতে পারে। বাস্তবতা হচ্ছে, চৌধুরী সুজাতের বাসায় একমাত্র জেইউআই-এফ ছাড়া পিডিএম সরকারের প্রধান প্রধান শরিকরা ছিল। বরং আরও কিছু দল বেড়েছে। অর্থাৎ পাকিস্তানের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের মোড় সেই দিকেই।
এখন দ্বিতীয় দফায় পিডিএম বা সেই ধরনের কোনও জোট সরকারের গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ বলছে, শেহবাজের সঙ্গে বর্তমান এস্টাবলিশমেন্ট (সামরিক বাহিনী) নেতৃত্বের সম্পর্ক উষ্ণ। নওয়াজের বদলে শেহবাজকেই নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করার নির্দেশনা তারাই দিতে পারে।
২০১৮ সালে পিটিআই সর্বোচ্চ আসনে জয়লাভ করে জোট সরকার গঠন করে তিন বছরেরও বেশি ক্ষমতায় থাকার পর পিডিএম জোটের কাছে আস্থা ভোটে হেরে যায়। ওই সময় শেহবাজের নেতৃত্বাধীন সরকার নিয়ে ভোটের আগে বহুবার কথা বলেছেন বিলাওয়াল। তিনি বলতেন, “তিনি বাবাদের (বড়দের) রাজনীতি আর চান না।”
কিন্তু সর্বশেষ জোটপ্রক্রিয়াকে পিডিএম জোটের সম্প্রসারণ বললে একদমই ভুল হয় না।
আবার ওই সংবাদ সম্মেলন হওয়ার আগে ইসলামাবাদে আলাদা সংবাদ সম্মেলন করে বিলাওয়াল জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ চান না, তবে তার দল পদটির জন্য পিএমএল-এনের প্রার্থীকে সমর্থন করবে। আবার তিনি এ-ও জানান, পিপিপি নতুন সরকারের অংশ হবে না। কিন্তু চৌধুরী সুজাতের বাসার সংবাদ সম্মেলনে জানা যায়, পিপিপি নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগদান করবে। অবশ্য দ্বিতীয় পর্যায় থেকে অংশগ্রহণের কথা জানা গেছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বাবা আর ছেলের বিরোধের কোনও সমীকরণ থাকতে পারে। এতে নওয়াজের প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করার সংকটও লুকিয়ে থাকতে পারে। কারণ নির্বাচনের আগে নওয়াজকে সেনাবাহিনীর ‘নতুন প্রিয়পাত্র’ আখ্যা দিয়েছিলেন বিলাওয়াল। আবার নওয়াজকে চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী করতে সেনাবাহিনী যে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে, এমন কথা কয়েকবার বলেছেন বিলাওয়াল।
আবার পাকিস্তানের জিও টিভির একটি অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার রাতের দিকে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে বলা হয়, “শেহবাজের নেতৃত্বে জোট সরকারের প্রতি সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিপিপি। বিলাওয়ালের সংবাদ সম্মেলনে এর প্রতিফলন রয়েছে।”
অন্য দলের সাথে জোট অথবা একীভূত হবে পিটিআই
সংরক্ষিত আসনের অভাব জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে সরকার গঠনের সম্ভাবনা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বুঝতে পেরে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নীতিগতভাবে অন্য রাজনৈতিক দলের সাথে মিত্রতা বা একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার গহর আলী খান এমনটাই জানিয়েছেন।
ডন নিউজের সাথে কথা বলার সময় পিটিআইয়ের এই নেতা বলেন, তারা এই বিষয়ে বিকল্পগুলি অন্বেষণ করছেন। তবে পিটিআই অবশ্যই সম্ভাব্য জোটের জন্য পিএমএল-এন বা পিপিপির সাথে বসবে না।
ডনের শো-তে তিনি বলেন, আমরা ওই দুই দলের সাথে বসতে সঙ্গেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। তাদের (পিএমএল-এন বা পিপিপি) কারও সঙ্গে সরকার গঠন বা তাদের সঙ্গে একযোগে সরকার গঠনের বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে না।
সরকার গঠনের চেয়ে বিরোধী দলে বসা ভালো, কিন্তু আমরা মনে করি আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। তিনি বলেন, দলের ম্যান্ডেট মানা না হলে দল শক্তিশালী বিরোধী দল গঠন করবে।
নওয়াজ-বিলাওয়ালের সঙ্গে জোট নয়, প্রয়োজনে বিরোধী আসনে বসবে পিটিআই
নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) অথবা আসিফ আলি জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সঙ্গে কোনওভাবে জোট করে সরকার গঠন করবে না বলে জানিয়েছে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই)। প্রয়োজনে তারা বিরোধী দলে থাকার সুযোগকেই বেছে নেবে।
দলটির বর্তমান চেয়ারম্যান গওহর আলি খান এসব কথা জানিয়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘ডন নিউজ’কে তিনি বলেন, নির্বাচনে জালিয়াতির জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের পদত্যাগ দাবি করা উচিত।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সংরক্ষিত আসনের অভাবে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে সরকার গঠনের সুযোগ তাদের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। এটা অনুধাবন করতে পেরেছে পিটিআই। দলটির প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করায় তারা সংরক্ষিত আসন দাবি করতে পারছে না। এ জন্য পিটিআই নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা কোনও মিত্রের সঙ্গে যোগ দেবে অথবা অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিলে যাবে। এরপর তারা সুবিধা দাবি করবে।
গওহর আলি খান বলেছেন, এর প্রেক্ষিতে তারা বিভিন্ন বিকল্প পন্থা খুঁজে পেতে চেষ্টা করছেন। তবে জোট গঠনের জন্য তারা পিএমএলএন বা পিপিপির সঙ্গে অবশ্যই যুক্ত হবেন না।
তিনি বলেন, এই দুটি দলের সঙ্গে আমরা স্বস্তি বোধ করি না। তাদের কারও সঙ্গে সরকার গঠনের আলোচনা বা একসঙ্গে সরকারে থাকার আলোচনাই হবে না। তাদের সঙ্গে সরকারে থাকার চেয়ে বিরোধী আসনে বসা অনেক ভাল। আমরা মনে করি আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। তিনি আরও বলেছেন, যদি তাদের ম্যান্ডেটকে মেনে নেওয়া না হয়, তাহলে তার দল শক্তিশালী একটি বিরোধী অবস্থান সৃষ্টি করবে। যেকোনও পরিষদে সরকার গঠনের জন্য পিটিআই সংরক্ষিত আসন পেতে পারে। যদিও তারা সরাসরি নির্বাচনে সর্বোচ্চ সংখ্যক পদে নির্বাচিত হয়েছে, কিন্তু তাদের মর্যাদা হল স্বতন্ত্র, এই জন্য সংখ্যালঘু এবং নারীদের জন্য যে সংরক্ষিত আসন রাখা আছে- তারা তা দাবি করতে পারবে না।
পিএমএলএন এবং পিপিপির সঙ্গে জোট গঠনের সম্ভাব্যতাকে উড়িয়ে দেওয়ার ফলে পিটিআই এখন অন্য কোনও দলের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পারে। এক্ষেত্রে একটি অপশন হতে পারে জামায়াতে ইসলামী। খাইবার পখতুনখাওয়া প্রাদেশিক পরিষদে জামায়াত পেয়েছে তিনটি আসন। এই দুটি দলের খাইবার পখতুনখাওয়ায় একসঙ্গে মিত্র হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। তারা ২০১৩ সালে সেখানে জোট করে ক্ষমতায় গিয়েছিল। ২০১৮ সালের মে মাসে সেখানকার প্রাদেশিক পরিষদের মেয়াদ শেষের দিকে এসে সেই অংশীদারিত্ব ভেঙে যায়। এছাড়া পিটিআইয়ের অন্য অপশনগুলো হল- মজলিশে ওয়াহদাতুল মুসলিমিন।
সূত্র: ডন নিউজ
কারচুপি করে নির্বাচনে জিতেছে নওয়াজ, আদালতে পিটিআই
পাকিস্তান মুসলীম লীগ-এন (পিএমএলএন)-এর নেতা নওয়াজ শরীফ কারচুপি করে নির্বাচনে জিতেছেন বলে অভিযোগ করেছে ইমরানের দল পিটিআই। আর এ অভিযোগ নিয়ে শনিবার আদালতের দারস্থ হয়েছে দলটি। এছাড়া নওয়াজের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ করেছে তারা।
নওয়াজের বিরুদ্ধে নির্বাচন করা পিটিআইয়ের কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী আদালতে বলেছেন, ফরম-৪৫ এর ফলাফল অনুযায়ী, নওয়াজ শরীফ হেরেছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা ফরম-৪৭ এ তাকে ‘বোগাস’ বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা লাহোর হাইকোর্টে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ফরম-৪৫ হলো পাকিস্তানের প্রত্যেকটি ভোট কেন্দ্রের আলাদা ফলাফল। ফরম-৪৫ অনুযায়ী, ফরম-৪৭ এর মাধ্যমে একটি আসনের পূর্ণ ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন এবারের নির্বাচনে পিটিআইকে ব্যাট প্রতীকে নির্বাচন করতে দেয়নি। ফলে পিটিআইয়ের প্রার্থীরা স্বতন্ত্রের ব্যানারে নির্বাচন করেন। আর এতেই বাজিমাত করেন তারা।
পিটিআই দাবি করেছে, ফরম-৪৫ অনুযায়ী তাদের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে নওয়াজ শরীফকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে
৭৪ বছর বয়সী নওয়াজ শরীফ জাতীয় পরিষদের ১৩০তম আসন থেকে জয়ী হয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১ লাখ ৭২ হাজার ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। সেখানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পিটিআইয়ের ইয়াসমিন রশিদ ১ লাখ ৩০ হাজার ভোট পেয়েছেন। তবে প্রাথমিক ফলাফলে ইয়াসমিন রশিদ এগিয়ে ছিলেন।
অপরদিকে মরিয়ম নওয়াজ জয় পেয়েছেন জাতীয় পরিষদের ১১৯তম আসন থেকে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, তিনি ৮৩ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফারুক শাহজাদ ৬৮ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন।
নওয়াজ শরীফের বিরুদ্ধে নির্বাচন করা ইয়াসমিন রশিদ আদালতে অভিযোগ করে বলেছেন, ফরম-৪৫ অনুযায়ী তিনি জয় পেয়েছেন। কিন্তু ফরম-৪৭— এ নওয়াজকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
ঠিক একই অভিযোগ করেছেন মরিয়ম নওয়াজের বিরুদ্ধে নির্বাচন করা ফারুক শাহজাদ। তিনিও জানিয়েছেন, ফরম-৪৫ অনুযায়ী তিনি জয় লাভ করেছেন।
এছাড়া সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ কোরেশির মেয়েও তার পরাজয়ের বিরুদ্ধে আদালতের দারস্থ হয়েছেন।
ইমরান সমর্থিত বিজয়ী প্রার্থীরা এখন কী করবেন
জল্পনা-কল্পনা পেছনে ফেলে পাকিস্তানের নির্বাচনে ফলাফলে এগিয়ে রয়েছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পিটিআই। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলেছিলেন জেলে থেকে এবার সুবিধাজনক অবস্থানে যেতে পারবেন না ইমরান খান। তাদের সেই আভাস ভুল প্রমাণ করে সবচেয়ে বেশি আসন জিতে নিয়েছে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা।
গত বৃহস্পতিবার বিকালে পাকিস্তানে ভোটগ্রহণ শেষ হলেও সরকার গঠন করবে কারা তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। তবে চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগেই পিএমএল-এন প্রধান নওয়াজ শরিফ বিজয় ভাষণ দিয়ে দিয়েছেন। ওই ভাষণে তিনি জোট সরকার গঠনের ইঙ্গিত দেন। তবে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কী করবেন বা তাদের অবস্থান কোথায়, তা এখনো জানা যায়নি।
পাকিস্তানে ২৬৫ আসনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ২৫১ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ইমরানের দল পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন। আসন সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মুসলিম লীগ। তৃতীয় স্থানে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপলস পার্টি বা পিপিপি।
তবে নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্যের পরও পিটিআই এখনো সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। কারণ, এবারের নির্বাচনে তারা ব্যাট প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি পায়নি। তাদের শীর্ষ নেতা ইমরান খান একের পর এক মামলায় কারাগারে আছেন। ফল ঘোষণার দিনে ইমরান খান ১৪ মামলায় জামিন পেলেও মুক্তি পেতে জামিন নিতে হবে আরও অনেক মামলায়।
ফলে ইমরান খান সমর্থিত প্রার্থীরা সর্বোচ্চ সংখ্যক আসনে জয়ী হলেও, হয়তো সরকার গঠন করতে পারছে না পিটিআই। কারণ, সংখ্যালঘুদের জন্য নির্ধারিত আসনে তাদের জন্য কোটা বরাদ্দ থাকবে না। তাহলে পিটিআইয়ের সামনে এখন কোন পথ খোলা আছে?
পাকিস্তানি নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মিলে একটি দল গঠনের চেষ্টা করতে পারে। যার নাম হতে পারে ইনসাফ বা অন্যকোনো কিছু। সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করলে তাদের পরিণতি শুভ নাও হতে পারে।
এর আগে ১৯৮৫ সালে জেনারেল জিয়াউল হকের সময়ে এর চেয়ে বেশি স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন গোটা পার্লামেন্টই ছিল স্বতন্ত্রদের দখলে। নির্বাচিত প্রার্থীরা পার্লামেন্টে যাওয়ার পর ঐক্যবদ্ধ হলে সেই দলের নাম দেওয়া হয় পাকিস্তান মুসলিম লীগ, যার থেকে বর্তমান পিএমএল-এন এবং পিএমএল-কিউয়ের সৃষ্টি।
নির্বাচনে পিটিআই তাদের প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি না পেলেও জনগণের বিশাল সমর্থন পেয়েছে। সরকার গঠন করতে না পারলেও স্বতন্ত্ররা বিরোধীদলে থাকতে পারবেন, তবে তাদের একটি দলে যোগ দিতে হবে বলে মনে করেন সে দেশের রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
পাকিস্তানে নির্বাচন: পার্থক্য বাড়িয়ে যাচ্ছেন ইমরান-সমর্থিত প্রার্থীরা
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দী ইমরান খানের সমর্থিত প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর সঙ্গে আসন সংখ্যার পার্থক্য বাড়িয়ে চলেছেন।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায়, ২২০ আসনের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯০টি আসনে জয় পেয়েছেন। যার অধিকাংশই ইমরান-সমর্থিত প্রার্থী।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা নওয়াজের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) পেয়েছে ৬২ আসন। আর তৃতীয় স্থানে থাকা বিলাওয়ালের পাকিস্তান পিপলস পার্টি পেয়েছে ৫০টি আসন।
এছাড়া মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) ১১টি এবং ইসতিকাম-ই-পাকিস্তান পার্টি (আইপিপি), জমিয়ত ওলেমা-ই-ইসলাম পাকিস্তান (জেইউআই-পি) ও পিএমএল দুইটি করে আসনে ফল পেয়েছে। একটি আসনে জিতেছে পাখতুনখাওয়া ন্যাশনাল আওয়ামি পার্টি পাকিস্তান (পিএনএপিএফ)।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৫ আসনে (একটি স্থগিত) ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি)। কোনো দলের সরকার গঠনে প্রয়োজন হবে ১৩৪ আসন। পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের মোট আসনসংখ্যা ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট গ্রহণ হয়। আর ৬০ আসন সংরক্ষিত নারীদের জন্য ও ১০টি সংরক্ষিত সংখ্যালঘুদের জন্য।
নির্বাচন নিয়ে পাকিস্তান সেনাপ্রধানের বিবৃতি
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোট গণনাও শেষ হয়েছে। তবে ভোটের দু’দিন পার হলেও এখনো সব আসনের ফল ঘোষণা করতে পারেনি পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।
এর আগেই সফল নির্বাচনের জন্য দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল অসীম মুনির।
পাকিস্তান আইএসপিআরের এক বিবৃতিতে জেনারেল মুনির তত্ত্বাবধায়ক সরকার, পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল এবং বিজয়ী সকল প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের জনগণের তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগের জন্য অবাধ এবং বাধাহীন অংশগ্রহণ পাকিস্তানের সংবিধানে বর্ণিত গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের প্রতি তাদের অঙ্গীকার প্রদর্শন করে।
একই সঙ্গে অপ্রতিরোধ্য প্রতিকূলতার মধ্যেও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ প্রশংসার দাবিদার বলেও জানান তিনি।
এছাড়াও জাতীয় গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ, বেসামরিক প্রশাসন এবং বিচার বিভাগের সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত গঠনমূলক ভূমিকা নির্বাচন সফলে ভূমিকা রেখেছে।
বিবৃতি আরও বলা হয়, নির্বাচন জয়-পরাজয়ের শূন্য-সমষ্টি নয় বরং জনগণের ম্যান্ডেট নির্ধারণের একটি মহড়া। রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং তাদের কর্মীদের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের শাসন ও সেবা করার প্রচেষ্টাকে একত্রিত করা উচিত যা গণতন্ত্রকে কার্যকরী ও উদ্দেশ্যমূলক করার একমাত্র উপায় হতে পারে।
পাকিস্তানের জনগণ যেহেতু পাকিস্তানের সংবিধানের প্রতি তাদের সম্মিলিত আস্থা রেখেছে, এখন রাজনৈতিক পরিপক্কতা এবং ঐক্যের সঙ্গে এর প্রতিদান দেওয়া সমস্ত রাজনৈতিক দলের উপর কর্তব্য।
পাকিস্তানে আজ সাধারণ নির্বাচন; বন্ধ মোবাইল সেবা
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আর্থিক সঙ্কটে ধ্বস্ত পাকিস্তান। ‘গোদের উপর বিষফোঁড়া’ ক্রমশ সন্ত্রাসবাদী হামলার বাড়বাড়ন্ত। এই জোড়া ‘কাঁটা’র আবহেই বৃহস্পতিবার সে দেশে শুরু হল সাধারণ নির্বাচন।
পাকিস্তানে ভোট শুরু হতেই মোবাইল সেবা সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিয়েছে সে দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়। সে দেশের সংবাদপত্র ‘ডন’-এর একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি’র কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বারের নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র মধ্যে। রয়েছে কট্টরপন্থী জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম দলও। তবে ২০১৮-র নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর স্বীকৃতি পাক নির্বাচন কমিশন বাতিল করায় তারা সরাসরি ভোটের ময়দানে নেই। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বকাপজয়ী পাক ক্রিকেট অধিনায়কের দলের অনেক নেতা ‘নির্দল’ হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে দু’টি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ইমরান এখন জেলবন্দি।
২০১৮ সালের ভোটে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির আসন সংখ্যা ছিল ৩৪২। এর মধ্যে ২৭২টিতে সরাসরি ভোট হয়েছিল। তার মধ্যে পিটিআই ১১৬, পিএমএলএন ৬৪, পিপিপি ৪৩ এবং নির্দল ও অন্য দলগুলির প্রার্থীরা ৪৯টি আসনে জয়ী হয়েছিলেন।
পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে এখন মোট আসন ৩৩৬। কিন্তু তার মধ্যে ভোট হয় ২৬৬টি আসনে। বাকি ৭০টি আসন মহিলা এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এর মধ্যে মহিলাদের জন্য ৬০ এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ১০টি আসন। এ বার মোট ১৬৭টি নথিভুক্ত রাজনৈতিক দল পাক নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৫,১২১। প্রাদেশিক আইনসভার নির্বাচনে লড়াই করছেন মোট ১২ হাজার ৬৯৫ জন প্রার্থী। ৯০ হাজার ৬৭৫টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটদাতার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৪ লক্ষেরও বেশি।
পাকিস্তানে দীর্ঘ দিন ধরে চালু রয়েছে ‘এক দেশ এক ভোট’ ব্যবস্থা। পাকিস্তান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির পাশাপাশি বৃহস্পতিবার পাক পাঞ্জাব, সিন্ধ, খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তানে প্রাদেশিক আইনসভার ভোটগ্রহণও হবে। স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে পাকিস্তানে। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তার পর শুরু হবে গণনাপর্ব।