সরকারের দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে সবাইকে ‘জেগে উঠা’র আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার (২৫ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে নজরুল ইসলাম এতো বেশি প্রাসঙ্গিক যে প্রায়ই তার কথা মনে পড়ে। তার কথা উচ্চারণ করতে ইচ্ছা করে।
দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু দুস্তর পারাপার…। এটাই হচ্ছে মূল কথা। আজকে এই দুর্গম গিরি কান্তার মরু পার হতে হবে। ’
‘দুঃশাসন, ফ্যাসিবাদ, অন্যায়-অত্যাচার-নির্যাতন আজ পুরো বাংলাদেশকে গ্রাস করে ফেলেছে। এখান থেকে বের হতে হবে। কিছুক্ষণ আগে একজন বলেছিলেন যে, ঘুমিয়ে থাকে। এই ঘুম থেকে জাগতে হবে। জেগে উঠে নিজেদেরকে মুক্ত করতে হবে। এই সেই মুক্তিই হচ্ছে আমাদের একমাত্র পথ। ’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অন্তরীণ, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব দেশের বাইরে নির্বাসিত। বাংলাদেশে গণতন্ত্রকামী ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা। ’
গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘এ যুগে এখনো আমাদের দেখতে হয় যে, নারীদের ওপর চরম নির্যাতন করা হচ্ছে। এখানেই নজরুল ইসলাম সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক। এখানেই জেগে উঠতে হবে। কারার ঐ লৌহকপাট, ভেঙে ফেল, কর যে লোপাট, রক্ত-জমাট, শিকল পূজার পাষাণ-বেদী। এভাবে নিজেদের উদ্দীপ্ত করতে হবে। আমাদের অন্যদেরকে জাগিয়ে তুলতে হবে। আজ তরুণ-যুবকদেরকে জেগে উঠতে হবে। ’
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করব, বিশেষত যারা রাজনীতি করছি, তাদের বেশি করে নজরুল গড়া উচিত। যারা সমাজের নেতৃত্ব দিচ্ছি, যারা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছি, নজরুলকে যদি আমরা সঠিকভাবে পড়ি, বুঝার চেষ্টা করি, অনুধাবণ করি তাহলে আমরা আমাদের নিজেদেরকে জানতে পারব, চিনতে পারব। ’
‘আমরা অন্যের কাছে মাথানত করে থাকব না। আধিপত্যবাদের লেজুড়বৃত্তি আমরা করব না, সামাজ্যবাদের লেজুড়বৃত্তি আমরা করব না। জাতির সেই সত্ত্বাকে বিকশিত করে আমাদের দাঁড়াতে হবে। এটার কোনো বিকল্প নেই। ’
গবেষকদের কবি নজরুল ইসলামের সাহিত্যির ওপর আরো গবেষণা করার অনুরোধ জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘কবি নজরুলকে এতো ছোট পরিসরে আলোচনা নয়। তার জন্য বিশাল আয়োজন করেন- হাজার হাজার লোক সেখানে আসুক। বড় প্যাণ্ডেল তৈরি হোক। সেখানে আমরা নজরুলের কথা শুনি। সেখানে বিশিষ্ট গবেষকদের নিয়ে আসুন। আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা আমরা করব। এই উদ্যোগ আপনাদের নিতে হবে। ’
তিনি বলেন, ‘নজরুল ইসলামকে আগামী দিনে বাংলাদেশের মানুষের আরো কাছে পৌঁছে দিতে এবং বর্তমানের ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমরা যে ভয়াবহ অবস্থায় আছি তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আসুন আমরা সবাই একসঙ্গে গাই –‘বল বীর-বল উন্নত মম শির’। ”
অনুষ্ঠানে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে কবি নজরুল ইসলামের কর্মময় জীবন-সাহিত্য তুলে ধরতে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরা হয়।
কবি আবদুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে ও হুমায়ুন কবির বেপারীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় কবি মাহবুব হাসান, ফজলুল হক সৈকত, কবি জাকির আবু জাফর, রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে কবি নজরুল ইসলামের লেখা কবিতা আবৃত্তি করেন সামিয়া নুজহাত, নাসিম আহমেদ ও লিপি।
আপনার মন্তব্য লিখুন