ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি ছাত্রী হলকে ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বেগম রোকেয়া ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবসহ পাঁচটি হলের প্রভোস্টরা ভিন্ন ভিন্ন বিবৃতিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার স্বাক্ষর দিয়েছেন।
মঙ্গলবার গভীর রাতে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে প্রথম স্বাক্ষর করেন রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ড. নীলুফার পারভীন। রাত ১টার দিকে তিনি লিখিত অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন। এরপর রাত সোয়া তিনটায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট ড. ফারহানা হক একই ধরনের অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন। আধা ঘণ্টার ব্যবধানে শামসুন নাহার হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট হাফসা আক্তার, কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট ড. গাউসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী এবং কুয়েত মৈত্রী হলের প্রভোস্টও ছাত্র রাজনীতি বন্ধের অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন।
রোকেয়া হলের অঙ্গীকারনামায় বলা হয়, ‘আজ ১৭-০৭-২০২৪ তারিখ থেকে রোকেয়া হলের অভ্যন্তরে কোনো ধরনের ছাত্র রাজনীতি (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, যুবদল, জামাত-শিবির ইত্যাদি) নিষিদ্ধ করা হলো। কোনো পলিটিক্যাল রুম বা গণরুম থাকবে না, কোনো পলিটিক্যাল প্রোগ্রাম হবে না এবং কোনো ধরনের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা হলের সাথে থাকবে না।’ এতে আরও উল্লেখ করা হয়, আমরা হলের মেয়েরা যদি এসব দলের দ্বারা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই, তাহলে এই দায় প্রশাসন ও হল প্রভোস্টকে নিতে হবে। আজ থেকে রোকেয়া হলকে ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ঘোষণা করা হলো।
শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও কবি সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরাও একই ধরনের অঙ্গীকারনামা তৈরি করেছেন। শামসুন নাহার হলের অঙ্গীকারনামায় কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও মূল বক্তব্য ছিল একই।
এর আগে, রোকেয়া হলের ছাত্রলীগের সভাপতি পৃথা এবং সাধারণ সম্পাদক আতিকাকে হল থেকে বের করে দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা সভাপতি পৃথা এবং সম্পাদক আতিকাকে ধরে হলের গেট থেকে বের করে দিচ্ছেন। অন্যান্য ছাত্রী হলেও ছাত্রলীগ নেত্রীদের ওপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
ঢাবিতে রণক্ষেত্র, সংঘর্ষে ছাত্রলীগ-আন্দোলনকারীরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হলে সেখানকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বিস্তারিত আসছে…
ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ঢাবির ঐতিহ্য লুণ্ঠিত : সাদা দল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছে সাদা দল। ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে জড়িতদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সাদা দলের নেতৃবৃন্দ।
রবিবার সাদা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান দলটির নেতারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ছাত্র অধিকার পরিষদের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নির্ধারিত কর্মসূচি উদযাপনের উদ্দেশ্যে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশ করতে এলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়ে। এ বাধা অতিক্রম করে তারা এগিয়ে যেতে চাইলে একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নামধারী কিছু সন্ত্রাসী ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। তাদের হামলায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সহ সভাপতি আখতার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব এবং সাব্বিরসহ ২৫-৩০ জন আহত হন। আহতরা একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা যায়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তবুদ্ধি, স্বাধীন চিন্তা ও মতপ্রকাশের এক ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, বর্তমান সরকারের সমর্থক বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ঐতিহ্য ইতোমধ্যেই ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। আমরা আমাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠানে ভিন্নমতের ওপর হামলার পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না।
ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে জড়িতদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান সাদা দলের নেতৃবৃন্দ।
আপনার মন্তব্য লিখুন