দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার দেওয়া এক বক্তৃতায় তিনি এ ঘোষণা দেন। এর মাধ্যমে তার ছেলে হুন মানেতের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ প্রশস্ত হলো।
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নতুন সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন মানেত। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও বিবিসি। এক বক্তৃতায় হুন সেন বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন এবং তার ছেলে হুন মানেত আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দায়িত্ব নেবেন।
তিনি বলেন, হুন মানেত…আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হবেন। আগামী ১০ আগস্ট নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হবে। আমি ক্ষমতাসীন দলের প্রধান এবং জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে কাজ চালিয়ে যাব। নবনির্বাচিত পার্লামেন্ট আগামী ২১ আগস্ট এবং নতুন মন্ত্রিসভা আগামী ২২ আগস্ট শপথ নেবে।
বহু বছর ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়া শাসন করছেন হুন সেন। চলতি সপ্তাহে কম্বোডিয়ায় সাধারণ নির্বাচনে তার দল ক্ষমতাসীন কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারও নির্বাচিত হওয়ার কয়েকদিন পর হুন সেন এই ঘোষণা দিলেন। নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বেগকে পাত্তাই দেননি তিনি। নির্বাচনে জয়ী হলে তার বড় ছেলে হুন মানেতের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন হুন সেন।
একতরফা নির্বাচন: কম্বোডিয়ার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা
এক তরফা নির্বাচন করায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল আমেরিকা। একইসঙ্গে দেশটিতে কিছু বিদেশি সহায়তা কর্মসূচিও স্থগিত করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
শক্তিশালী প্রতিপক্ষহীন একতরফা সাধারণ নির্বাচনে দেশটির ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী জয়ের দাবি করার পর আমেরিকা এই পদক্ষেপের ঘোষণা দিল।
রবিবার দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিনই দেশটির বিরুদ্ধে মার্কিন এই পদক্ষেপের ঘোষণা আসে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কম্বোডিয়ায় সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) ভূমিধস বিজয়ের ঘোষণা দেওয়ার পর আমেরিকা বলেছে, তারা কম্বোডিয়ায় কিছু বিদেশি সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করছে এবং গণতন্ত্রকে অবমূল্যায়ন ও ধ্বংসসাধনের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে।
জানা গেছে, রবিবার অনুষ্ঠিত ওই সাধারণ নির্বাচনে কোনও শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ছিল না। মূলত এটি ছিল একতরফা নির্বাচন। এতে ভূমিধস জয়ের দাবি করেন ক্ষমতাসীন কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টির (সিপিপি) নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। বিগত ৩৮ বছর ধরে ৭০ বছর বয়সী হুন সেন কম্বোডিয়ার ক্ষমতায় আছেন।
উল্লেখ্য, বিতর্কিত ওই নির্বাচনে ৮১ লাখ ভোটার ভোট দিয়েছেন বলে দেশটির নির্বাচন কমিটি জানিয়েছে। নির্বাচন কমিটির মতে, রবিবারের নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ছিল ৮৪ শতাংশ। চলতি বছরের মে মাসে ‘কাগজে ত্রুটি থাকার’ অভিযোগে সিপিপির একমাত্র প্রতিপক্ষ ক্যান্ডেললাইট পার্টিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
এদিকে, নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বেগকে পাত্তাই দেননি প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। নির্বাচনে জয়ী হলে তার বড় ছেলে হুন মানেটের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
আপনার মন্তব্য লিখুন