১৮ এপ্রিল ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী দিবস। ২০০১ সালের এই দিনে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বিনা উস্কানিতে দ্বিপক্ষীয় সীমান্তের ১০৬৭/৩ পিলার অতিক্রম করে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী গ্রামে অতর্কিতভাবে প্রবেশ করে তাণ্ডব চালায়। শেষ পর্যন্ত তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) ও গ্রামবাসীদের মিলিত প্রতিরোধে পিছু হটে বিএসএফ। এ ঘটনায় প্রাণ হারায় বিডিআরের তিন সদস্য। আহত হন অনেকেই।
সেদিন ভোররাতে বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্তে অনধিকার প্রবেশ করে বড়াইবাড়ী গ্রামে হামলা চালায়। ওইদিন হামলার জবাব দিয়েছিল গ্রামবাসী ও তৎকালীন বিডিআর। সেই প্রতিরোধে বিএসএফ তাদের ১৬ সদস্যের লাশ ফেলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। সেই সংর্ঘষে শহীদ হন বাংলাদেশের ৩৩ রাইফেল ব্যাটালিয়নের ল্যান্স নায়েক ওহিদুজ্জামান, সিপাহী মাহফুজার রহমান এবং ২৬ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের সিপাহী আব্দুল কাদের। এছাড়া আহত হন হাবিলদার আব্দুল গনি, নায়েক নজরুল ইসলাম, ল্যান্স নায়েক আবু বক্কর সিদ্দিক, সিপাহী হাবিবুর রহমান ও সিপাহী জাহিদুর নবী। স্থানীয়দের মধ্যে ছবিরন বেওয়া (৮০), মোস্তফা মুন্সিসহ (৪৫) আরও অনেকে আহত হন।
সিলেটের পাদুয়ায় অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে জবর দখল করতে গিয়ে তৎকালীন বিডিআর জোয়ানদের প্রতিরোধের মুখে শোচনীয় পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই বিএসএফ এ বর্বরোচিত আক্রমণ চালায় বলে ধারণা এলাকাবাসীর।
সে সময় বিএসএফ’র তাণ্ডবে পুড়ে ছাই হয়েছিল বড়াইবাড়ী গ্রামের ৬৯টি বাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ। সেই থেকে ঐতিহাসিকভাবে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে ‘বড়াইবাড়ী দিবস’ হিসেবে। দিবসটি উপলক্ষে বড়াইবাড়ীতে মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা সেখানে।
এদিকে গ্রামের মানুষ এখনও দুঃসহ স্মৃতি মনে হলে আঁতকে ওঠে। বর্তমানে দুই শতাধিক পরিবার ওই গ্রামে বসবাস করছে। সরকার,রেড ক্রিসেন্ট ও এনজিও’র দেওয়া সহায়তা নিয়ে কোনওরকম মাথা গোজার ঠাঁই করে নিয়েছে এসব পরিবার। তাদের দাবি, সরকারি আশ্বাসের বাস্তবায়ন ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ বড়াইবাড়ী দিবসকে যেন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বড়াইবাড়ী দিবস এর কর্মসূচী :
ঐতিহাসিক ১৮ এপ্রিল ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী বড়াইবাড়ী দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের দাবিতে সমাবেশ ডাকল জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ (এনআরসি)
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আহ্বায়ক খোমেনী ইহসান বলেন, ঐতিহাসিক ১৮ এপ্রিল ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী বড়াইবাড়ী দিবস। এ দিনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে “জাতীয় প্রতিরোধ দিবস” হিসেবে পালনের দাবিতে সবাই আওয়াজ তুলুন।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ সামান্য সামর্থে এ দাবিতে আগামীকাল বুধবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করবে৷ যাদের জনবল আছে তারা লোকজন নিয়ে সমাবেশে আসুন। আমাদের কর্মসূচিতে বড়াইবাড়ির লড়াইয়ের সূত্রপাতকারী বীর নেতা উপস্থিত থাকবেন৷ তাই আপনারাও আসুন। আর হ্যা, দেশপ্রেমিক হলে বিএনপি জামায়াত এনসিপি যেন বড়াইবাড়ী দিবসকে উদযাপন করে।