বিশ্বের প্রথম ইমাম হিসাবে নিজেকে সমকামী হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু মর্মান্তিক পরিণতি হল সেই মুহসিন হেনড্রিক্সের। গাড়িতে চেপে যাওয়ার সময়ে দুষ্কৃতীর গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে গেলেন তিনি। কেন এভাবে খুন করা হল মুহসিনকে, সেই এখনও ধন্ধে পুলিশ। ইমামের হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করেছে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়।
গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দক্ষিণাঞ্চলের শহর কুয়েবেরহাতে তাকে গুলি করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঠিক কীভাবে মৃত্যু হল মুহসিনের? ইস্টার্ন কেপ পুলিশ সূত্রে খবর, এক ব্যক্তির সঙ্গে গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন ওই ইমাম। সেসময়ে আচমকাই অন্য একটি গাড়ি চেপে আসে মুখ ঢাকা দুই দুষ্কৃতী। মুহসিনের গাড়ির দরজা আটকে দাঁড়ায় তারা, ফলে ওই ইমাম গাড়ি থেকে বের হতে পারেননি। এহেন পরিস্থিতিতেই এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে দেয় দুষ্কৃতী। সঙ্গে সঙ্গে পালিয়ে যায় তারা। পরে গাড়ির চালক দেখতে পান, রক্তাক্ত অবস্থায় পিছনের সিটে পড়ে রয়েছে মুহসিনের দেহ।
গোটা হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। তবে সেই ভিডিও আদৌ সত্যি কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে পুলিশের অন্দরেই। তাই আমজনতার কাছে আর্জি জানানো হয়েছে যেন তাঁরা কোনও তথ্য পেলে পুলিশকে জানান। কিন্তু মুহসিনকে কেন এইভাবে হত্যা করা হল, সেই মোটিভ নিয়েও ধন্ধে পুলিশ। তবে প্রাথমিকভাবে অনুমান, মুহসিনের হত্যা আসলে টার্গেট কিলিং। জনদরদি ইমামের এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকস্তব্ধ এলজিবিটিকিউ পরিবার। হত্যাকাণ্ডের যথাযথ তদন্ত দাবি করেছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে নিজেকে সমকামী বলে ঘোষণা করেছিলেন মুহসিন। সমকামী মুসলিমদের জন্য আলাদা মসজিদও চালু করেছিলেন তিনি। সেই মসজিদে প্রবেশাধিকার রয়েছে মহিলাদেরও। ২০২২ সালে মুহসিনকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি হয়। সেখানে জানিয়েছিলেন, আলাদা করে নিরাপত্তা নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না। কারণ কেউ তাঁর উপর হামলা চালাবে বলেই মনে করেন না মুহসিন। মসজিদ পরিচালনা ছাড়াও আরবি শিক্ষক এবং ফ্যাশন ডিজাইনার হিসাবে কাজ করেছেন।
আপনার মন্তব্য লিখুন