কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে পাকিস্তান ও সৌদি আরব। দেশ দুইটির কোনো একটির বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালানো হলে, একে উভয় দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে চুক্তিটিতে। অর্থাৎ আক্রান্ত হলে সৌদি আরব ও পাকিস্তান একে অপরকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে।
দুই দেশের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এরফলে দশকের পর দশক ধরে চলমান নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সৌদি আরবে রাষ্ট্রীয় সফরের সময় এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেখানে আল-ইয়ামামাহ প্রাসাদে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তাকে স্বাগত জানান।
গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল: মার্কিন সিনেটর স্যান্ডার্সগাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল: মার্কিন সিনেটর স্যান্ডার্স
চুক্তি স্বাক্ষরের পর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভ্রাতৃত্ব, ইসলামি সংহতি ও অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থের ভিত্তিতে এবং প্রায় আট দশকের দীর্ঘ অংশীদারত্বের ওপর দাঁড়িয়ে দুই পক্ষ কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই চুক্তি দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক ও বিশ্ব শান্তিতে অবদান রাখার জন্য একটি যৌথ প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে। এর লক্ষ্য প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরো উন্নত করা এবং যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, চুক্তিতে বলা হয়েছে একটি দেশের বিরুদ্ধে যেকোনো আগ্রাসন উভয় দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে বিবেচিত হবে।
সম্প্রতি ইসরায়েল কাতারের রাজধানী দোহায় হামলা চালিয়ে হামাসের নেতাদের টার্গেট করার কয়েক দিন পরই এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো। এ হামলায় মুসলিম বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা এ চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহতযুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
কাতারে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরাইলের হামলার কয়েকদিন পর এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো। ওই হামলা মুসলিম দেশ এবং বিশ্ব নেতাদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ শুধু পাকিস্তান–সৌদি সম্পর্ককেই দৃঢ় করছে না, বরং দক্ষিণ এশিয়া ও মুসলিম বিশ্বের জন্যও এর গুরুত্ব রয়েছে। এতে পাকিস্তানকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার সবচেয়ে সক্ষম মুসলিম শক্তি হিসেবে তুলে ধরা হলো।
তারা বলেছেন, এই চুক্তি ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে সৌদি আরবের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে পাকিস্তানের ওপর আস্থার প্রতিফলন।
এ সময় পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ এবং অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব উপস্থিত ছিলেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ সৌদি যুবরাজের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাকে এবং তার সফরসঙ্গী প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ অভ্যর্থনা এবং উদার আতিথেয়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সৌদি বাদশাহ প্রধানমন্ত্রী শেহবাজের সুস্থতা এবং পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের আরো অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।