মহাকবি আল্লামা ইকবাল, তার প্রণীত মুসলিম জাতীয়তাবাদ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা একসূত্রে গাঁথা বলে অভিহিত করেছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হরণ করার মতলবে এ দেশের স্বাধীনতার আসল ম্যান্ডেট মুসলিম জাতীয়তাবাদকে জাতীয় জীবন থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, ভারতপন্থি সরকারগুলোর সময়ে বাংলদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হরণ করার মতলবে এ দেশের স্বাধীনতার আসল ম্যান্ডেট মুসলিম জাতীয়তাবাদকে জাতীয় জীবন থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। এরই অংশ হিসেবে মুসলিম জাতীয়তাবাদী মতবাদের প্রণেতা আল্লামা মুহাম্মদ ইকবালকে একাত্তরের যুদ্ধের সঙ্গে জড়ানো হয়েছে। তার নামে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। অথচ আল্লামা ইকবাল ১৯৩৮ সালে ইন্তেকাল করেছেন, যে সময় পাকিস্তান ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মই হয়নি।
সোমবার আল্লামা মুহাম্মদ ইকবালের ৮৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলায়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন আল্লামা ইকবাল সোসাইটির সেক্রেটারি গবেষক ড. আবদুল ওয়াহেদ ও জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. শামসুদ্দীন।
ড. আবদুল ওয়াহেদ বলেন, স্বৈরাচারী শাসনের সময়ে আল্লামা ইকবালের কথা বলতে দেওয়া হয়নি। তাকে নিয়ে দর্শন চর্চা করতে দেওয়া হয়নি। তবে এখন মুক্ত পরিবেশে আল্লামা ইকবালের কথা তরুণ প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে পড়ছে।
মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, ১৯৩৮ সালের ২১ এপ্রিল ড. আল্লামা ইকবালের মৃত্যু হয়। তার চেতনা ও স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয় ১৯৪৭-এ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আর সেই ধারাবাহিকতায় আজকের বাংলাদেশ।
আরো পড়ুন : রাষ্ট্রীয়ভাবে আল্লামা ইকবালকে স্মরণের দাবি এনআরসির
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখতে আধিপত্যবাদী আগ্রাসন মোকাবিলা করতে হবে এবং এ জন্য আল্লামা ইকবাল চর্চা জারি রাখতে হবে। যারা এতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে তারা দিল্লির দালাল, তারা সার্বভৌম বাংলাদেশের শত্রু।
এ সময় তিনি আল্লামা ইকবালের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নতুন হল নির্মাণের দাবি জানান।
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় আল্লামা মুহাম্মদ ইকবাল প্রণীত মুসলিম জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে স্বাধীনতার দাবি করায় ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের পূর্বাংশ হিসেবে পূর্ববাংলা স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল। তা নাহলে পূর্ব বাংলা আজ স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ না হয়ে পশ্চিমবঙ্গ আসাম ও ত্রিপুরার মতোই ভারতের অঙ্গরাজ্য হতো এবং আমরা ভারতীয় মুসলমানদের মতো নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হতাম। তাই আমরা আল্লামা মুহাম্মদ ইকবালের জন্য প্রাণভরে দোয়া করি। আমাদের দীপ্ত প্রত্যয়-আল্লামা ইকবাল প্রণীত মুসলিম জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে অপার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নবাব সলিমুল্লাহ একাডেমির সভাপতি আবদুল জব্বার, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ, সহকারী সদস্য গালীব ইহসান ও অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, ঢাকা মাদ্রাসা-ই-আলীয়া শাখার আহ্বায়ক রাকিব মণ্ডল, সদস্য সচিব মো. জিনাত হোসেন, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব শরীফ খান, সহকারী সদস্য সচিব রুকুনুজ্জামান ও সদস্য মো. ইব্রাহিম প্রমুখ।