প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে বিক্ষোভ এবং রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পর সিরিয়ার আরব লীগের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়। ওই সময় আরব লীগের ২২ সদস্য সিরিয়াকে নিষিদ্ধ করে।
রবিবার আরব লীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের পর সর্বসম্মতিক্রমে সিরিয়াকে লীগে ফেরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, সিরিয়ার সরকারি প্রতিনিধিরা আরব লীগের বৈঠকে অংশ নিতে পারবেন।
মিত্র সিরিয়াকে আরব লীগের সদস্যপদ ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে রাশিয়া। বৈশ্বিক পরিসরে আরবদেশগুলোর এটা স্বাধীন নীতির বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছে মস্কো।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘আরব লীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সিদ্ধান্ত দেখিয়েছে, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ইস্যুতে তারা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় শক্তিশালী করতে উচ্চাকাঙ্ক্ষী। বৈশ্বিক পরিসরে ভবিষ্যতে নিজেদের মৌলিক স্বার্থ ধরে রাখতে তারা আগ্রহী এই সিদ্ধান্ত সেটার প্রকাশ।’
আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবদুল ঘেইত বলেন, রবিবার থেকেই আরব লিগের পূর্ণ সদস্য হয়ে গেছে সিরিয়া। আজ সোমবার থেকেই তাদের আসন রাখার অধিকার রয়েছে। আরব লীগের সম্মেলনের আয়োজক সৌদি আরবের পক্ষ থেকে তাদের আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে। যদি আসাদ আসতে ইচ্ছা করেন, তবে তিনি এতে যোগ দিতে পারবেন।
খবরে বলা হয়েছে, আরবের অনেক দেশ ধীরে ধীরে আসাদকে মেনে নিতে শুরু করেছে। কারণ, তিনি ধীরে ধীরে বিদ্রোহীদের কাছে হারানো এলাকা ফিরে পেতে শুরু করেছেন। এ জন্য তিনি ইরান ও রাশিয়ার সমর্থন পাচ্ছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০১৮ সালে সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে। আরব লীগে সিরিয়াকে ফেরাতে দেশটি নেতৃত্ব দিয়েছে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। আসাদ সরকারের পক্ষ থেকে আরব দেশগুলোর কাছে পৌঁছানোর একটি সুযোগ তৈরি হয়। গত মার্চ মাসে সৌদি আরব ও ইরান কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ নিলে সিরিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পথে গতি আসে।
গত মার্চে সৌদির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, রিয়াদ ও দামেস্ক দূতাবাস চালু করার বিষয়ে আলোচনা করছে। গত এপ্রিলে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান দামেস্ক সফর করেন। সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল মিকদাদ সৌদি আরবসহ আরব দেশগুলো সফর করে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের প্রচেষ্টা চালান। গত সোমবার তিনি আম্মানে জর্ডান, সৌদি, ইরাক ও মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে চলমান সংঘাত বন্ধ নিয়ে আলোচনা করেন।
সূত্র: আল আরাবিয়া
আপনার মন্তব্য লিখুন