হয় ড্রেজিং করো, নয় বাঁধ ভেঙে দাও। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য নিয়ে প্রবল রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলগুলি। দুই দিনের উত্তরবঙ্গের বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর দার্জিলিংয়ে এক প্রশাসনিক সভা থেকে ভারত সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে মমতা ফারাক্কা বাঁধ ভেঙে দেওয়ার কথা বলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ফারাক্কাতে ড্রেজিং হয় না। তার ফলে পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার উভয়েই প্রতি বছর দুর্ভোগে পড়ছে। তাই এমন ড্যামের প্রয়োজন কি? মমতা জানান, তিনি বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার এ সংক্রান্ত রিপোর্ট পড়েছেন। বিজ্ঞানী সাহা বলেছিলেন, ড্যামের জলাধার প্রয়োজন নেই। ভারত সরকারকে উদ্দেশ্য করে মমতা বলেন, ড্রেজিং কমসে কম করো। আর ড্রেজিং যদি না করো ড্যামের প্রয়োজন নেই। ড্যাম ভেঙে দাও। নদীকে নিজের মতো চলতে দাও।
মমতা আরও অভিযোগ করেন, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন ২০ বছর ধরে ড্রেজিং করে না। ফারাক্কার মতো পাঞ্চেত, মাথিন জলাধার এবং কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে ড্রেজিং হচ্ছে না। মমতার মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়ে দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী ফারাক্কা বাঁধ ভেঙে দিন। উনি একটা আঙুল অন্যের দিকে তুললে, তিনটি আঙুল ওর নিজের দিকে উঠে রয়েছে।
এদিকে,বুধবার দার্জিলিংয়ের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে উত্তরবঙ্গে বন্যা বিপর্যয়ে ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ানের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতিকে নিয়ে খেলা যায় না। নদীকে নিজের মতো বইতে দিতে হয়। এক দিকে ড্রেজ়িং না করা, অন্য দিকে রাজ্যের মাইথন, পাঞ্চেতের মতো জলাধার থেকে জল ছাড়ার কারণে ‘ম্যানমেড’ বন্যাপরিস্থিতি তৈরি হওয়া নিয়ে অতীতেও একই সুর শোনা গিয়েছে মমতার মুখে।অ্যাক্টিভওয়্যার
মমতা জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গের সাম্প্রতিক বিপর্যয়ে সব মিলিয়ে মারা গিয়েছেন ৩২ জন।দার্জিলিং ২১, জলপাইগুড়িতে ৯ এবং কোচবিহারে ২ জন মারা গিয়েছেন। মৃত সকলের পরিবারের হাতে ৫ লক্ষ টাকা করে তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রতি পরিবারের এক জনকে স্পেশ্যাল হোমগার্ডের চাকরিও দেওয়া হয়েছে।