ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় সমঝোতা নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছে। শনিবার ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস জানিয়েছে, দেশটির দেওয়া প্রস্তাব তারা খতিয়ে দেখছে।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযানের প্রস্তুতির পাশাপাশি নতুন করে যুদ্ধবিরতির আলোচনার ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। স্থবির যুদ্ধবিরতির আলোচনা নতুন করে শুরু করতে ইসরায়েল পৌঁছেছে মিসরের একটি প্রতিনিধিদল।
এক বিবৃতিতে হামাসের রাজনৈতিক শাখার উপপ্রধান খালিল আল-হাইয়া বলেছেন, ১৩ এপ্রিল মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে দেওয়া প্রস্তাবের বিষয়ে ইহুদিবাদী দখলদারদের আনুষ্ঠানিক জবাব পেয়েছে হামাস। প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখবে সংগঠন। খতিয়ে দেখার পর এর জবাব দেওয়া হবে।
জিম্মি মুক্তি দিতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ওপর জোর দিয়ে আসছে হামাস। তবে হামাসের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৩৪ হাজার ৩৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৭৭ হাজার জন।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে রিয়াদে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) সম্মেলনের ফাঁকে গাজায় শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও কয়েকজন বৈশ্বিক কর্মকর্তা অংশ নেবেন। ডব্লিউইএফের সভাপতি বোর্গে ব্রেন্ডে এ কথা জানিয়েছেন।
সম্মেলনে গাজার পরিস্থিতিও আলোচনায় আসবে জানিয়ে ডব্লিউইএফের সভাপতি বলেন, এ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন অংশগ্রহণ করবেন। একই সঙ্গে কাতারের প্রধানমন্ত্রী, সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ওমানের যুবরাজ ও বাহরাইনের কর্মকর্তারাও এতে অংশ নেবেন।
হামাস এক শর্তে ইসরায়েলের সঙ্গে সশস্ত্র লড়াই বন্ধে ইচ্ছুক
শর্তসাপেক্ষে ইসরায়েলের সঙ্গে সশস্ত্র লড়াই বন্ধে ইচ্ছুক ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন গাজা ভিত্তিক গোষ্ঠীটির একাধিক নেতা।
তবে এক্ষেত্রে একটি শর্ত দিয়েছেন তারা, সেটি হল- ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল যেসব অঞ্চল দখল করেছিল, ওই অঞ্চলগুলো নিয়ে একটি ‘স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা’।
২০০৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা শাসন করছে হামাস। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির মূল লক্ষ্য ইসরায়েলের পতন। সেই লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি। কিন্তু গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় হামাসের ভবিষ্যৎ অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে এমন ইঙ্গিত দিলেন সংগঠনটির নেতারা।
হামাসের এই নেতাদের একজন তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বসবাসকারী বাসেম নাইম। তিনি হামাসের রাজনৈতিক শাখার সদস্য।
বৃহস্পতিবার তিনি সিএনএনকে বলেন, “জেরুজালেমকে রাজধানী করে যদি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করা হয়, আর শরণার্থীদের সেখানে ফেরার অধিকার দেওয়া হয়, তাহলে আল কাশেম ব্রিগেডকে (হামাসের সামরিক শাখা) ভবিষ্যতে জাতীয় সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।”
হামাসের শর্ত মেনে নেওয়া হলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই ‘অবশ্যই’ বন্ধ করা হবে বলেও জানিয়েছেন বাসেম নাইম। তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) যদি তাদের গঠনতন্ত্র ও প্রশাসনে ‘সংস্কার’ আনে, তাহলে সংগঠনটির সঙ্গে যোগ দিতে চায় হামাস।
এর আগে একই ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছেন হামাসের আরেক শীর্ষ নেতা খলিল আল-হাইয়া। সংগঠনটির এই প্রবাসী নেতা বলেন, “গোষ্ঠীটি ইসরায়েলের সাথে পাঁচ বছর বা তার বেশি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে এবং একটি রাজনৈতিক দলে রূপান্তর হতে ইচ্ছুক যদি ‘দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান’ বাস্তবায়িত হয়।”
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল-হাইয়া তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে এপির সাথে একটি সাক্ষাত্কারে বলেন, হামাস গাজা এবং পশ্চিম তীরের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠনে অংশ নিতে চায়।
তিনি বলেন, “অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়- বিশ্বজুড়ে যারা দখলদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, যখন তারা স্বাধীন হয়েছে এবং তাদের অধিকার ও রাষ্ট্র পেয়েছে, তখন তারা কী করেছে? তারা রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে এবং তাদের রক্ষাকারী যুদ্ধ বাহিনী জাতীয় সেনাবাহিনীতে পরিণত হয়েছে।”
আল-হাইয়া আরও বলেন, রাফা শহরে ইসরায়েলের পরিকল্পিত স্থল আক্রমণ হামাসকে ধ্বংস করতে সফল হবে না।
ইসরায়েলি বাহিনী “[হামাসের] ক্ষমতার ২০ শতাংশের বেশি ধ্বংস করতে সক্ষম হয়নি, না যোদ্ধা বা মাঠে,” যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “তারা যদি হামাসকে ধ্বংস করতে না পারে, তাহলে সমাধান কী? সমাধান হল ঐক্যমতের দিকে যাওয়া।”
তবে হামাসের এই নেতারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শর্ত সাপেক্ষে অস্ত্র প্রত্যাহারের কথা বললেও আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এখনও কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। আর বিদেশে অবস্থান করা হামাসের নেতাদের বক্তব্য গাজায় থাকা সংগঠনটির সামরিক শাখার নেতাদের চিন্তাভাবনার সঙ্গে মেলে কি না, তাও স্পষ্ট নয়।
গাজা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের আরেকটি বৈঠক চায় রাশিয়া
জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি বলেছেন, গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আরেকটি অধিবেশন ডাকার পরিকল্পনা করছে রাশিয়া।
সোলোভিভ লাইভ টিভি চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বলেন, আমরা অবশ্যই নিরাপত্তা পরিষদের নতুন বৈঠক আহ্বান করব। অনুশীলনে দেখা গেছে, আমরা ছাড়া আর কেউ এটা করার সাহস করি না। তবে কবে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
হামাসের হামলার উদ্দেশ্য সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক বাধাগ্রস্ত করা : বাইডেন
সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা হামাসের হামলার লক্ষ্য বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, হামাসের ইসরায়েলের দিকে অগ্রসর হওয়ার একটি কারণ তারা জানত যে আমি সৌদিদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুক্রবার আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে তহবিল সংগ্রহের প্রচার চালান। এ সময় হামাসের হামলার একটি কারণ সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টিকে বাধাগ্রস্ত করা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাইডেন সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একই কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন। তবে সেখানে তিনি এ-ও বলেন, সৌদি আরব-ইসরায়েল সম্পর্ক ‘এখনো অটুট, এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র’।
ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে লন্ডনের রাজপথে লাখো মানুষ
ফিলিস্তিনি মানুষের সমর্থনে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে বিক্ষোভ করেছেন লাখো মানুষ। স্থানীয় সময় শনিবার দুপুরে এ বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ।
খবর অনুসারে,ফিলিস্তিনের পক্ষে শনিবার লন্ডনের বিক্ষোভ বিগত কয়েক বছরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ স্থানীয় সময় বেলা দুইটার দিকে জানায়, অন্তত এক লাখ মানুষ এ বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা ডাউনিং স্ট্রিটের দিকে এগোতে থাকেন। এর দেড় ঘণ্টা পরও বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন মানুষ।
বিক্ষোভকারীরা প্রথমে মার্বেল আর্চের সামনে জড়ো হন। এ সময় তাদের হাতে ‘মুক্ত ফিলিস্তিন চাই’ ও ‘গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করো’ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইন এ বিক্ষোভের সহ-আয়োজক। তারা গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া সেখানে পুরোদমে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। এ সময় পুরো এলাকা যেন জনসমুদ্র পরিণত হয়। চারদিকে অনবরত একটি স্লোগান ভেসে বেড়াচ্ছিল, ‘ফিলিস্তিন মুক্ত হবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও বেশ কয়েকটি আরব দেশে ফিলিস্তিনের ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ মানুষ।
সূত্র: আল জাজিরা
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একাট্টা আরব নেতারা
মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির নেতৃত্বে শুরু হয়েছে শান্তি সম্মেলন। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলা বন্ধের চেষ্টা হিসেবে মিসরে শুরু হয়েছে শান্তি সম্মেলন। এ সম্মেলনে পশ্চিমাদের দ্বিমুখী হিসেবে অভিহিত করেছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। এ ছাড়া ইসরায়েলের কড়া সমালোচনা করেছেন জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহও। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাও ইসরায়েলের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন।
গতকাল মিসরের রাজধানী কায়রোতে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে আরব বিশ্বের নেতারা একত্রিত হয়েছেন। এ ছাড়া এতে যোগ দিয়েছেন আফ্রিকা ও ইউরোপের দেশগুলোর প্রতিনিধিরাও। পশ্চিমাদের সমালোচনা করে মিসরের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা আজ কায়রোতে মিলিত হয়েছি খুবই কঠিন একটি পরিস্থিতিতে। যেটি আমাদের মানবিকতা এবং মানবিকতার ওপর বিশ্বাসের দাবির পরীক্ষা নিচ্ছে। কয়েক শ বছর ধরে আমরা যে মানবিক সভ্যতার নীতি তৈরি করেছি সেটি কোথায়? দ্বিমুখী নীতি ছাড়া কোথায় নিরীহ মানুষের সমতা? মিসর পরিষ্কারভাবে এবং প্রকাশ্যে শান্তিপ্রিয় বেসামরিক মানুষদের হত্যার নিন্দা জানায়। গাজার সাধারণ মানুষের ওপর সামরিক আগ্রাসন চলার সময় যে বিশ্ব চুপ করে থাকতে পারে এ বিষয়টি তাকে আশ্চর্য করেছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, গাজার বাসিন্দাদের (মিসরের) সিনাই উপত্যকায় স্থানান্তরের বিষয়টির বিরোধিতা করেন তারা। কারণ তাদের সিনাইয়ে নিয়ে যাওয়া হলে ফিলিস্তিনিরা আর কখনো স্বাধীন রাষ্ট্র পাবে না।
অন্যদিকে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ ইসরায়েলের বোমা হামলার সমালোচনা করে বলেছেন, গাজায় অব্যাহত বোমা হামলা সবদিক দিয়ে নিষ্ঠুরতা। এটি অবরুদ্ধ ও নিরীহ মানুষের ওপর একটি সামগ্রিক নির্যাতন। এটি আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এটি যুদ্ধাপরাধ। নিষ্ঠুরতার মাত্রা যত ছাড়াচ্ছে, বিশ্ব যেন এটির ওপর ততই কম নজর দিচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, অন্য কোথাও যদি বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষকে ক্ষুধার্ত রাখা হতো, বিদ্যুৎ, পানি ও প্রয়োজনীয় পণ্য থেকে বঞ্চিত করা হতো তাহলে এর নিন্দা জানানো হতো। তাৎক্ষণিকভাবে দোষীদের দায়ী করা হতো। অন্য দ্বন্দ্বগুলোর ক্ষেত্রে এটি করা হয়েছে। কিন্তু গাজার ক্ষেত্রে নয়।
জর্ডানের বাদশাহ আরও বলেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের ক্ষুধার্ত রাখছে কিন্তু গত কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনিরা স্বাধীনতা, আশা ও ভবিষ্যতের জন্য ক্ষুধার্ত হয়ে আছে। ইসরায়েলের বোমা হামলা বন্ধ হওয়ার পর তাদের কখনো দায়ী করা হয় না। দখলদারিত্ব ও অবিচার চলতে থাকে এবং পরবর্তী সংঘাত শুরু না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ব দূরে থাকে। ফিলিস্তিনি সংকটের কোনো রাজনৈতিক সমাধান করতে না পারার কারণেই আজ এই রক্তক্ষরণ দেখা যাচ্ছে।
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান ইতালির প্রধানমন্ত্রীর
হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ বন্ধে মিসরের রাজধানী কায়রোতে শান্তি সম্মেলন শুরু হয়েছে। সেখানে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই, ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধের পরিধি অন্যত্র ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে হবে এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের মাধ্যমে স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
শনিবার (২১ অক্টোবর) কায়রোতে অনুষ্ঠিত শান্তি সম্মেলনে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে বক্তব্য রাখেন তিনি। এতে মেলোনি বলেন, ‘যদিও আমাদের অবস্থানে অনেক দূরত্ব রয়েছে। আমাদের স্বার্থগুলো ঠিকভাবে কাজ করতে হবে; গাজায় যা হচ্ছে সেটি যেন আরও বিস্তৃত দ্বন্দ্বে, একটি ধর্মীয় যুদ্ধে এবং সভ্যতার যুদ্ধে পরিণত না হয়।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি মনে করি হামাসের লক্ষ্য ছিল এটি। ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষায় হামলা করেনি তারা। কিন্তু এমন একটি হামলা যেটি ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের মধ্যে একটি অসংলগ্ন দূরত্ব তৈরি করবে। যার অর্থ এই হামলার লক্ষ্য আমরা সবাই, আমরা হামাসের এই ফাঁদে পড়তে পারি না। যেটি বোকার মতো কাজ হবে।’
ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি এর আগে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে একটি আলাদা বৈঠক করেন। এরপর তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করতে তেল আবিবে চলে যান।
সূত্র: রয়টার্স
গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করার ইসরায়েলি প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান সৌদির
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করার ইসরায়েলি প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি আরব। শনিবার মিশরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান এ কথা বলেন। খবর আল আরাবিয়ার।
তিনি বলেন, গাজায় যা হচ্ছে তা সত্যিই ‘হৃদয় বিদারক’। যুদ্ধ বিরতিতে পৌঁছানোর জন্য ‘দ্রুত পদক্ষেপ’ প্রয়োজন। একই সঙ্গে তিনি গাজায় সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি বন্ধের কথা বলেন।
প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, আমরা অবিলম্বে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিরাপদ পথ খোলার আহ্বান জানাই। ফিলিস্তিনের অধিকার রক্ষায় সব সময়ই তাদের পাশে আছে সৌদি আরব।
সম্মেলনে তিনি উভয় পক্ষকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সতর্ক করেন।