ইসরায়েল যদি সম্পূর্ণ গাজা ধ্বংসে অবতীর্ণ হয় তাহলে ইরান ও লেবাননের হিজবুল্লাহও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে বলে মনে করছে হামাস। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির একজন নেতা এই তথ্য জানিয়েছেন।
আলী বারাকেহ নামে এই হামাস নেতা এখন লেবাননে নির্বাসিত জীবন-যাপন করছেন। এএফপির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তাদের ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনা সংগঠনের জ্যেষ্ঠ নেতারাও জানতো না। মিত্রদের সঙ্গেও অভিযানের সঠিক সময় উল্লেখ করা হয়নি।
তিনি বলেন, হামাস ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে যুদ্ধকরতে প্রস্তুত। ইসরায়েল ও বিদেশে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তির জন্য গাজায় আটক কয়েক ডজন জিম্মিকে ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন এই হামাসের এই জ্যেষ্ঠ সদস্য।
তিনি বলেন, হামাসের কাছে রকেটের ভাণ্ডা রয়েছে যা দীর্ঘদিন স্থায়ী হবে। আমরা এই যুদ্ধের জন্য এবং সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ভালভাবে প্রস্তুত হয়েছি। এমনকি দীর্ঘ যুদ্ধের পরিস্থিতিও আছে।
তিনি বলেন, হামাস ইসরায়েলি কারাগারে আটক ব্যক্তিদের এবং এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বন্দী কিছু ফিলিস্তিনিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে জিম্মিদের ব্যবহার করবে।
বারাকেহ বলেন, গাজার অভ্যন্তরে অল্প সংখ্যক শীর্ষ কমান্ডার শনিবারের ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ সম্পর্কে জানতেন এবং এমনকি গোষ্ঠীটির নিকটতম মিত্রদেরও সময় সম্পর্কে আগাম অবহিত করা হয়নি। ইরানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা হামলার পরিকল্পনায় সহায়তা করেছে এমন খবর তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ইসরায়েল যুদ্ধে না জড়াতে ইরানের প্রতি আমেরিকার হুঁশিয়ারি
ইসরায়েল যুদ্ধে না জড়াতে ইরানের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল চার্লস কিউ ব্রাউন এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, আমরা চাই না এই সংঘা আরো প্রসারিত হোক। সুতরাং ইরান যেন এই যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে।
তিনি আরো বলেন, ইসরায়েলের কাছে একটি মার্কিন বিমান রণতরী মোতায়েনের উদ্দেশ্য হলো দেশটির (ইসরায়েল) জন্য ‘সমর্থনের শক্তিশালী বার্তা’। একই সঙ্গে এই বিশেষ সংঘাতকে আরো বিস্তৃত করা হলে তা প্রতিরোধের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা এটি।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ভোরে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ঢুকে অভিযান শুরু করে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যোদ্ধারা। এতদিন ইসরায়েলের বিপক্ষে শুধুমাত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়েছে ফিলিস্তিন। শনিবারই প্রথমবারের মতো আগে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।
তবে অনতিবিলম্বে ইসরায়েলও পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। তারা ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। পাল্টা আক্রমণে দেশটি গাজায় মুহুর্মুহু বোমা বর্ষণ করছে। এরই মধ্যে ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
এছাড়াও ইসরায়েলের হামলায় বহু সংখ্যক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইসরায়েল’ দাবি করেছে, হামাসের হামলায় এরই মধ্যে ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়েছে। সেখানেও বহু সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা
সত্যিই কি হামাসের অভিযানে সহযোগিতা করেছে ইসরায়েলের কিছু সেনা?
ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে নজিরবিহীন যুদ্ধ চলছে। গত শনিবার ভোরে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ঢুকে অভিযান শুরু করে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যোদ্ধারা। এতদিন ইসরায়েলের বিপক্ষে শুধুমাত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়েছে ফিলিস্তিন। শনিবারই প্রথমবারের মতো আগে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।
তবে অনতিবিলম্বে ইসরায়েলও পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। তারা ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। পাল্টা আক্রমণে দেশটি গাজায় মুহুর্মুহু বোমা বর্ষণ করছে। এরই মধ্যে ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
এছাড়াও ইসরায়েলের হামলায় বহু সংখ্যক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইসরায়েল’ দাবি করেছে, হামাসের হামলায় এরই মধ্যে ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়েছে। সেখানেও বহু সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছে।
হামাসের এই আকস্মিক হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ইসরায়েল। বিষয়টি কোনোভাবেই টের পায়নি ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ। হামাসের কৌশল বুঝতেই পারেনি তারা।
হামাসের অভিযান শুরু হয় রকেট নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে। প্রথমে ইসরায়েলে পাঁচ হাজার রকেট নিক্ষেপ করে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিন প্রতিরোধ সংগঠনটি। তাও আবার মাত্র ২০ মিনিটে। একই সঙ্গে বুলডোজার, গ্লাইডার এবং মোটরবাইক নিয়ে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে হামাস যোদ্ধারা, যা ছিল নজিরবিহীন। এটি নিঃসন্দেহে ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় আঘাত।
বিগত ৫০ বছর আগে সিরিয়া ও মিশর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালিয়ে পুরো প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছিল। সেই স্মৃতিই যেন ফিরিয়ে আনলো হামাস।
এদিকে, কোনো কোনো গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ইসরায়েল বিরোধী চলমান ‘আল-আকসা ফ্লাড’ অভিযানে কিছু ইসরায়েলি সেনা সদস্য গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছে। একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইরানের তাসনিম বার্তা সংস্থার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেছেন ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা।
তবে ওই সাক্ষাৎকারের বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়াও অন্য কোনো প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও এমন কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
তাসনিম নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চরম নিরাপত্তা ব্যবস্থা-বেষ্টিত ইসরায়েলে কীভাবে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এত বড় একটি অভিযান চালাতে সক্ষম হলো তা নিয়ে যখন তেল আবিবের ঘোর কাটছে না, তখন এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা তাসনিমকে বলেন, সুনির্দিষ্ট কিছু ইসরায়েলি সেনা সদস্যের সঙ্গে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর বহুদিন ধরে সম্পর্ক রয়েছে। ওই সম্পর্কের জের ধরে ইসরায়েলের বহু গোপন ও স্পর্শকাতর তথ্য পেয়ে যাচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা।
তিনি বলেন, “আল-আকসা ফ্লাড অভিযানের শুরুতে ইসরায়েলি এলাকাগুলোতে অনুপ্রবেশ করতে বিশেষ করে ইসরায়েলি সেনা ঘাঁটিগুলোতে সহজে ঢুকে পড়তে ওই সব তথ্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।”
ওই ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েলি সেনাদের সহযোগিতা শুধুমাত্র গোয়েন্দা তথ্যের মধ্যে সীমিত ছিল না বরং ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে তাদের অস্ত্রসস্ত্রের একটি বড় অংশ সংগ্রহ করে আসছিল।
ইসরায়েলের হিব্রু ভাষার বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা তাসনিম জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে বিশেষ করে রিজার্ভ সেনাদের মধ্যে মাদকাসক্তির পরিমাণ বেড়ে গেছে। এ কারণে এসব সেনা মাদক কেনার অর্থ সংগ্রহ করতে বা সরাসরি মাদকের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের কাছে তাদের অস্ত্রসস্ত্র বিক্রি করে দেয়। বিষয়টি ইসরায়েলি সেনা কমান্ডারদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ইসরায়েলের ১৩ নম্বর টিভি চ্যানেল খবর দিয়েছিল, এই অবৈধ রাষ্ট্রের আলেক্সান্দ্রনি ব্রিগেডের একটি ঘাঁটি থেকে এম১৬ রাইফেলের এক লাখ গুলি চুরি হয়ে গেছে। পরে ইসরায়েলি পুলিশ জানায় চুরি যাওয়া গুলির সংখ্যা ছিল দেড় লাখ।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে একথাও জানা গেছে, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এমন কিছু সমরাস্ত্র ব্যবহার করেছে যা ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ব্যবহার করে থাকে।
সূত্র: তাসনিম নিউজ এজেন্সি, প্রেসটিভি
ইসরায়েলকে সমর্থন করে তোপের মুখে কাইলি জেনার
ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের অতর্কিত হামলার পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে গোটা বিশ্ব। এই হামলার পক্ষে-বিপক্ষে দুই ভাগে বিভক্ত সবাই। এই অতর্কিত হামলা ও পরবর্তী সময়ে ইসরায়েলের পাল্টাহামলা প্রসঙ্গে তারকারাও নিজেদের আওয়াজ তুলেছেন।
হলিউড, বলিউড থেকে শুরু করে বিশ্বের অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় তারকারা নিজ নিজ জায়গা থেকে সমর্থন ও নিন্দা করছেন এই যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতির। কেউ কেউ প্রকাশ্যে সহমর্মিতা প্রকাশ করে সমর্থন করছেন ইসরায়েলকে। সেই তালিকায় রয়েছেন টিভি ব্যক্তিত্ব এবং মেকআপ উদ্যোক্তা কাইলি জেনার। তবে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন করে রীতিমতো তোপের মুখে পড়েছেন কাইলি।
শনিবার ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর কাইলি ইসরায়েলের পতাকার একটি ছবি শেয়ার করেছেন সামাজিক মাধ্যমে। ছবিটি শেয়ার করে কাইলি লিখেছেন, ‘এখন এবং সর্বদা, আমরা ইসরায়েলের জনগণের পাশে আছি।’ কাইলির এই পোস্টে রীতিমতো সমালোচনার ঝড় তোলে ফিলিস্তিন এবং হামাসের পক্ষে সমর্থনকারী ব্যক্তিরা। সমালোচনার মুখোমুখি হওয়ার পরে কাইলি তার পোস্টটি মুছে দেন।
তবে তার পোস্টের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। আর সেই স্ক্রিনশট শেয়ার করেই কাইলিকে আক্রমণ করা হচ্ছে। সমালোচনার বোমাবর্ষণ চলছে জনপ্রিয় এই টিভি ব্যক্তিত্বের ওপর। রাজনৈতিক বিষয়ে নিজেকে জড়িত করার জন্য এবং ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার জন্য তার সমালোচনা করছে বেশির ভাগ মানুষ। কেউ কেউ ফিলিস্তিনি পতাকা পোস্ট করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।