ইসরায়েলে আকস্মিক আক্রমণে হামাসকে সহায়তা করেছে ইরান। ইরানের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই বড় ধরনের অভিযানে নামে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল এই খবর প্রকাশ করেছে।
আল আরাবিয়ার খবর অনুসারে, হামাসকে সহায়তার তথ্য স্বীকার করেছে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। এমনকি হামাস নেতারাও এই তথ্য স্বীকার করেছেন।
খবর অনুসারে, ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলশনারি গার্ড কর্পস (সংক্ষেপে আইআরজিসি নামে পরিচিত) এই হামলায় তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাদের পরিকল্পনা এবং অনুমোদনক্রমে হামলা শুরু করে হামাস।
রিপোর্ট অনুসারে, আইআরজিসির অফিসাররা আগস্ট থেকে হামাসের সাথে বিমান, স্থল এবং সমুদ্র পথে আক্রমণের সাথে জড়িত একটি জটিল অপারেশন তৈরি করতে সহযোগিতা করেন। এটা ১৯৭৩ সালের ইয়োম কিপপুর যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েলের সীমানাগুলির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য লঙ্ঘনের একটি ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে৷
শনিবার ভোরে ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা শুরু করে হামাস যোদ্ধারা। এই হামলাকে স্বয়ং ইসরায়েলের সামরিক নেতৃবৃন্দও নজিরবিহীন ঘটনা বলে উল্লেখ করছেন। ইসরায়েলের রয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। কিন্তু ইসরায়েলি গোয়েন্দারা এমনভাবে হামলা হবে তা আঁচ করতে পারেনি।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েলে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি
দীর্ঘ ইসরায়েলি অবরোধের পর প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন হামাস। হঠাৎ করেই তারা ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ঢুকে হামলা করেছে। গাজা থেকে চালানো হামাসের ত্রিমুখী হামলায় এরইমধ্যে ছয় শতাধিক ইসরায়েলির প্রাণ গেছে বলে নিশ্চিত করেছে তেলআবিব। এছাড়াও দুই হাজারের বেশি ইসরায়েলি নাগরিক আহত হয়েছে। শতাধিক ইসরায়েলিকে অপহরণ করেছে হামাস যোদ্ধারা।
অন্যদিকে ইসরায়েলের চালানো হামলায় গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১৩ জনে দাঁড়িয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় আহত হয়েছে ২৩০০ ফিলিস্তিনি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখনো গাজার বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে নিহত স্বজনদের জানাজা ও দাফন শেষ করার সময় হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে গাজায়। বিবিসির প্রতিবেদনে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, ছোট ছোট মরদেহ দুই হাতে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে।
অন্যদিকে রবিবারও ইসরায়েলের ফিলিস্তিন সীমান্তবর্তী এলাকার রাস্তায় হামাসের হামলায় নিহতদের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ওইসব এলাকায় এখনো হামাসের রকেট হামলা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সূত্র: বিবিসি
ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ‘বিজয়’ আখ্যা দিয়ে যা বলছে ইরান
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে ইরান। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ফিলিস্তিনি সেনা ও ফিলিস্তিনের সব দলের জন্য এ ঘটনাকে ‘বিজয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান এক টুইটে এ হামলাকে বছরের পর বছর ধরে চলা হত্যা ও অপরাধের বৈধ প্রতিক্রিয়া হিসেবে অভিহিত করেছেন।
হামাস দাবি করেছে, ইরানের কাছ থেকে তারা সহায়তা পেয়েছে। এ কারণে শনিবার ভোরে রকেট ও ড্রোন হামলা চালানো তাদের পক্ষে সহজ হয়েছে।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র হামলায় ইরানের সরাসরি জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলশনারি গার্ড কর্পস (সংক্ষেপে আইআরজিসি নামে পরিচিত) হামাসের হামলায় তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাদের পরিকল্পনা এবং অনুমোদনক্রমে হামলা শুরু করে হামাস।