পুরুষদের সঙ্গে যৌনতা, সম্পর্ক, বিয়েতে ‘না’। সন্তান জন্ম দিতেও রাজি নন আন্দোলনকারীরা। কারণ ডনাল্ড ট্রাম্পকে জিতিয়েছেন পুরুষরা। এমনই দাবি তুলে ক্ষোভে ফুঁসে উঠে ‘ফোর বি’ আন্দোলন শুরু করেছেন হাজার হাজার মার্কিন নারী। আসলে নির্বাচনে ডনাল্ড ট্রাম্প ও তার দল রিপাবলিকান পার্টির জয়ের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন নারীরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে উঠেছেন।
আর এই শঙ্কা বা উদ্বেগ থেকে পালে নতুন করে হওয়া পেয়েছে নারীদের পুরুষবিরোধী আন্দোলন ‘ফোর বি’। ‘কমালা পারেননি, আমরা গড়ব ইতিহাস।’ এই ডাক দিয়ে আগামী চার বছর ট্রাম্পের শাসনকালে পুরুষ সঙ্গীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে ‘না’ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমেরিকার বহু নারী। সমাজমাধ্যম থেকে রাস্তাঘাট— সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে প্রতিবাদ।
এককথায় এবার দক্ষিণ কোরিয়ার ঐতিহাসিক ‘ফোর বি’ মুভমেন্ট হতে চলেছে মার্কিন মুলুকেও। কোরিয়ান ভাষায় ‘বি’ শব্দের অর্থ ‘না’। ২০১৬ সালে ‘ফোর বি’ মুভমেন্ট শুরু হয় দক্ষিণ কোরিয়ায়।
কী এই ‘ফোর বি’? চারটি কাজে ‘না’ বলতে শুরু করেন নারীরা। ১) কোনও পুরুষের সঙ্গে ডেটে যাবেন না। ২) কোনও পুরুষের সঙ্গে যৌনসঙ্গম করবেন না। ৩) পুরুষদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যাবে না। ৪) সন্তান প্রসব নয়।
২০১৬ সালে সিওলে একজন মহিলাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। কারণ? অভিযুক্ত ব্যক্তি মনে করেছিলেন, ওই মহিলা তাকে অবহেলা করেছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে শুরু হয়েছিল ‘ফোর বি’ মুভমেন্ট। মার্কিন নারীদের আশঙ্কা, রিপাবলিকান পার্টির মতাদর্শ অনেক বেশি ‘কনজারভেটিভ’ বা রক্ষণশীল হওয়ায় তাদের ব্যক্তিস্বাধীনতা ও স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে সংকুচিত হতে পারে।
আর এই আশঙ্কা থেকেই তারা আগেভাগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ‘ফোর বি’ আন্দোলন শুরু করেছেন। কমালা হ্যারিস নির্বাচিত হলে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পেত আমেরিকা। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। ম্যাজিক ফিগার ২৭০ টপকে ট্রাম্পের পক্ষে ভোট পড়েছে ২৯৫টি, সেখানে কমালাকে থামতে হয়েছে ২২৬-এ।
এই হারে বেজায় চটেছেন মার্কিন নারীদের একাংশ। তাদের দাবি, এবারের নির্বাচনের ফলাফল বুঝিয়ে দিয়েছে তাদের মতামত কোনও গুরুত্বই পায় না। একজন মার্কিন নারী বলছেন, ‘পুরুষরা যদি আমাদের অধিকার খর্ব করার জন্যই এই নির্বাচনে ভোট দিয়ে থাকেন, তবে তারাও যেন আশা না করেন, কোনও নারী তাদের স্পর্শ করবে।’
আপনার মন্তব্য লিখুন