ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি লোহিত সাগরে ইসরায়েলের একটি পণ্যবাহী জাহাজ জব্দ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রবিবার ব্রিটিশ মালিকানাধীন জাপানি ওই জাহাজ জব্দ করা হয় বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
এ ঘটনায় ইসরায়েল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুথিদের এই ঘটনা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
একই সঙ্গে ইরানকে দায়ী করে ইসরায়েল বলেছে, এটি ইরানের সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সাথে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর থেকেই ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে হুথিরা।
গত সপ্তাহের ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী বলেছিল, তাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলার পরিমাণ আরো বৃদ্ধি করবে। একই সঙ্গে লোহিত সাগর এবং বাব আল-মান্দেব প্রণালীতে ইসরায়েলি সব জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর হুমকি দেয় তারা।
পণ্যবাহী জাহাজ জব্দ করার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে হুথিদের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে রবিবার হুথির একজন মুখপাত্র বলেন, ইসরায়েলি কোম্পানিগুলোর মালিকানাধীন, পরিচালিত কিংবা ইসরায়েলি পতাকা বহনকারী সব জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করা হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, “আমরা লোহিত সাগরে জাহাজ জব্দের বিষয়ে অবগত এবং এই ঘটনা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, একটি জাহাজ জব্দ করা হয়েছে। এই জাহাজ ইসরায়েলের মালিকানাধীন নয়। এমনকি এটি পরিচালনা কিংবা এতে ইসরায়েলি কোনো ক্রুও নেই। জাহাজটির নামও প্রকাশ করেনি ইসরায়েল।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, “জাহাজে কোনো ইসরায়েলিও নেই।”
সূত্র: রয়টার্স
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তি নিয়ে যা বলছে কাতার
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি বলেছেন, গত মাসে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গাজায় ২০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি বন্দীর মুক্তির জন্য ‘একটি চুক্তি’তে পৌঁছাতে কেবল ‘সামান্য’ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
আল জাজিরার খবর অনুসারে, কাতারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ কিছু অতিরিক্ত বিবরণ দিয়েছেন এইকসঙ্গে কিছু সময় প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আলোচনায় যে চ্যালেঞ্জগুলি রয়ে গেছে তা বড় চ্যালেঞ্জগুলির তুলনায় খুব সামান্য। সেটা বাস্তব এবং লজিস্টিক।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
শনিবার ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা জানায়, যুদ্ধ বিরতির বিনিময়ে বন্দীদের মধ্যে নারী ও শিশুদের মুক্ত করার জন্য একটি সম্ভাব্য সমঝোতা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি জানিয়েছে, সব পক্ষই অন্তত পাঁচ দিনের জন্য যুদ্ধ আক্রমণ বন্ধ রাখবে এবং বন্দীদের ছোট ছোট দলে ভাগ করে মুক্তি দেবে। যদিও হোয়াইট হাউস এই প্রতিবেদন ‘ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করেছে।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এখন আরও আত্মবিশ্বাসী যে, আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর যথেষ্ট কাছাকাছি আছি।
গাজার শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফ করল মালয়েশিয়া-তুরস্ক
গাজার শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে মালয়েশিয়া ও তুরস্ক। এর জন্য দেশ দুটির প্রতি ‘কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ খালেদ নরদিন বুধবার বলেন, ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিদের ফি মওকুফ করা হবে।
মোহাম্মদ খালেদ বলেন, সরকার এই সময়ের মধ্যে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ৮০০ ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে মাসিক ভাতা দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেন, তার সরকার গাজার শিক্ষার্থীদের জন্য বছরের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ব্যয় বহন করবে।
হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন ইরানের
হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করলো ইরান। প্রথমবারের এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করলো দেশটি। এর মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির জগতে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছলো ইরান। কেননা, বর্তমানে ইরানসহ বিশ্বের মাত্র চারটি দেশের কাছে এ ধরনের হাইপারসনিক অস্ত্রের প্রযুক্তি রয়েছে।
ইরানের হাইপারসনিক এই ক্ষেপণাস্ত্রের নাম ফাত্তাহ-২। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী এটি উন্মোচন করেন।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র এরোস্পেস ফোর্সের নয়া অর্জন নিয়ে আয়োজিত সামরিক মেলা পরিদর্শনকালে আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ওই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটির পর্দা উন্মোচন করেন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার সকালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী, আইআরজিসি’র এরোস্পেস ফোর্সের নতুন নতুন উদ্ভাবনী মেলা পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি ফাত্তাহ-২ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রথমবারের মতো উন্মোচন করেন। ফাত্তাহ-২ হাইপারসনিক মিসাইলের গ্লাইড এবং ক্রুজ ক্ষমতা রয়েছে। ফাত্তাহ-২’কে এইচজিভি এবং এইচসিএম হাইপারসনিক অস্ত্রের বিভাগে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আজ ইরানের তৈরি ‘গাজা’ ড্রোনও পরিদর্শন করেন। এই ড্রোন একটানা ৩৫ ঘণ্টা আকাশে উড়তে পারে। ৩৫ হাজার ফুট উপর দিয়ে উড়ে গিয়ে ৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তু পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি আঘাত হানতে সক্ষম। গাজা ড্রোন একসঙ্গে ১৩টি বোমা বহন করতে পারে। পরিদর্শনকালে তিনি “মেহরান” প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, “নাইন্থ-দেই” আপগ্রেড সিস্টেম এবং “শাহেদ-১৪৭” ড্রোনও উন্মোচন করেন।
‘আইডিয়া থেকে সকল ইরানি পণ্য পর্যন্ত’-শিরোনামে আয়োজিত প্রদর্শনী মেলায় আইআরজিসি এরোস্পেস ফোর্সের তরুণ বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞদের নতুন এবং আপডেট করা অর্জনগুলো তুলে ধরা হয়েছে।