কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নাগরিক সমাবেশে হামলা মামলায় গ্রেপ্তার দু’আসামি মোহাম্মদ আবীর আহমেদ শরীফ ও কোরবান শেখ হিল্লোলের দ্রুত জামিন হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ। সোমবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান আনিছুর রহমান।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ সহকারী সদস্য সচিব গালীব ইহসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি আসামি শরীফ ও হিল্লোলের জামিন অবিলম্বে বাতিল ও অপর দু’আসামি সাইফুল ইসলাম ও তন্ময়কে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে হামলার পর ফোন করে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীদের হত্যার হুমকি ও মারধরের জন্য ফেসবুকে প্রচারণা চলছে জানিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে আনিছুর রহমান শহীদ মিনারে হামলার বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরে বলেন, চব্বিশের জুলাই বিপ্লবে জড়িত ছাত্র-জনতার প্রথম রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের’ অভিষেক উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে অতিথি হিসেবে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য ও দু’শতাধিক আহত ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও নানা শ্রেণি পেশার নাগরিকরা অংশ গ্রহণ করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নাগরিক সমাবেশে অংশ নেওয়া গণঅধিকার পরিষদের নেতা ফারুক হাসান বেশ কয়েকবার জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সাংগঠনিক প্রধান মো: শফিউর রহমানকে অনুরোধ করেন তাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিতে। এরপর তিনি তিনি বিপ্লবী সরকার গঠন করার দাবি জানিয়ে বলেন,‘বর্তমান সংবিধান ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আমরা জুলাই-আগস্টে বিপ্লব করেছি। আর আজকে এই সংবিধানের দোহাই দিয়ে আমাদেরকে হাইকোর্ট দেখানো হয়।’ সমাবেশে তিনি শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসনে সরকারের অবহেলার সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ফারুকের বক্তব্যকে সরকার বিরোধী বক্তব্য দাবি করে সর্বপ্রথম সাইফুল ইসলাম নামে এক হামলাকারী চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে। তখন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নেতাকর্মীরা ফারুক হাসানকে উদ্ধার করে মঞ্চে শহীদ পরিবারের মাঝে বসার ব্যবস্থা করেন। এর আধাঘণ্টা পর ফারুক হাসান তার কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে বিদায় নেন। তিনি সমাবেশ থেকে বের হওয়ার পরপর সাইফুল, শরীফ, হিল্লোল ও তন্ময়ের নেতৃত্বে ফারুকের ওপর হামলা হয়। ওই সময় হামলা থেকে ফারুক হাসানকে রক্ষা করতে গিয়ে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম ও এস.এম রাফসানযানি, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম সাকিব, সলিমউল্লাহ ও হিযবুল্লাহ আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রাফসানযানির একটি দাঁত ভেঙে গেছে ও সাইয়েদ কুতুবের পিঠ কেটে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।
বিবৃতিতে ভিডিও দেখে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। এক্ষেত্রে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আহ্বায়ক খোমেনী ইহসান ভিডিও দেখে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের পরিচয় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে জানিয়েছেন। এমনকি হামলার নেপথ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা সারজিস আলমের সম্পৃক্ততার প্রমাণ হিসেবে নাগরিক সমাবেশে না আসতে শহীদ পরিবারের সদস্যদেরকে পাঠানো তার ভয়েস রেকর্ড তথ্য উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে।
এদিকে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান আনিছুর রহমান গণঅধিকার পরিষদকে আসামিদের ভিডিও ক্লিপিংস ও পরিচয় জানান। এর ফলে ফারুক হাসানের উপর হামলাকারী প্রকৃত অপরাধীদের আসামি করে মামলা করা সহজ হয় এবং নিরীহ কেউ আসামি হওয়া থেকে রেহাই পায়।
বিবৃতিতে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা করায় গণঅধিকার পরিষদকে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ ধন্যবাদ জানিয়েছে।
আপনার মন্তব্য লিখুন