মানুষের শরীরে শারীরিক বিপাকের ফলে যে বর্জ্য তৈরি হয় তা শরীর থেকে বের করে দেওয়ার জন্য ছাঁকনি হিসেবে কাজ করে কিডনি। যখন শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা যেমন উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের কারণে কিডনি ঠিকমতো কাজ করেনা তখন শরীরে টক্সিন জমা হয়। কিডনি ড্যামেজের লক্ষণগুলো এত সূক্ষ যে প্রাথমিকভাবে তা বোঝাই যায় না। কিডনি ড্যামেজকে বলা হয় ‘নীরব ঘাতক।’
পা ও গোড়ালি ফোলা:
কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত সোডিয়াম ফিল্টার করতে সাহায্য করে। যখন কিডনি তার কাজ ঠিকভাবে করতে পারেনা তখন শরীর সোডিয়াম ধরে রাখতে শুরু করে। এতে করে পায়ের গোড়ালি ফুলে যায়। এছাড়া চোখের ও মুখের অন্যান্য অংশে ফোলাভাব দেখা দেয়।
দুর্বলতা এবং ক্লান্তি:
ক্লান্ত বা দুর্বল বোধ করা সাধারণত লিভার সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ। কিডনির ব্যাধি গুরুতর হওয়ার সাথে সাথে ব্যক্তি আরও বেশি দুর্বল এবং ক্লান্ত বোধ করতে শুরু করে। এমনকি ঘরের কাজ করা বা হাটাহাটি করা তার জন্য কষ্টের মনে হতে পারে। রক্তে টক্সিন জমা হওয়ার কারণে এ সমস্যা হয়।
ক্ষুধা মন্দা:
শরীরে বিষাক্ত পদার্থ এবং বর্জ্য জমা হওয়ার ফলে ক্ষুধা কমে যেতে পারে, অবশেষে ওজন কমতে পারে। ক্ষুধা কম হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া। সব সময় পেট ভরা ভাব থাকবে আর খাওয়ার প্রতি কোন আগ্রহ থাকবে না।
প্রসাবে পরিবর্তন:
একজন স্বাভাবিক সুস্থ মানুষ দিনে ৬ থেকে ১০ বার প্রস্রাব করে। এর চেয়ে বেশি কিডনির ক্ষতির ইঙ্গিত হতে পারে। কিডনির সমস্যার ক্ষেত্রে, একজন ব্যক্তি হয় খুব কম বা খুব ঘন ঘন প্রসাব করতে থাকে। দুইটি অবস্থায় কিডনির ক্ষতি করে। কিডনি নষ্ট হতে শুরু করলে প্রসাবের সাথে রক্ত বের হয়ে যেতে শুরু করে।
শুষ্ক ত্বক ও চুলকানির সমস্যা:
কিডনি ক্ষতির অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে শুষ্ক ত্বক ও চুলকানির সমস্যা। যখন শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হতে পারেনা তখন এই সমস্যা দেখা দেয়। রক্তে টক্সিন জমা হতে হতে চুলকানি, শুষ্কতা এবং দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। কিডনি সমস্যা থেকে হতে পারে হাড়ের রোগ।
মোটকথা হলো প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে, যা শুধুমাত্র সময়মতো উপসর্গ নির্ণয় করা গেলেই সম্ভব। যারা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধির সমস্যায় ভুগছেন তাদের কিডনি রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এই ব্যক্তিদের কিছুদিন পর পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। মেডিক্যাল চেক-আপ প্রাথমিক পর্যায়ে সমস্যা সনাক্ত করতে পারে সেই সাথে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে সাহায্য করে।
আপনার মন্তব্য লিখুন