মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা ইতোমধ্যে ‘অস্তিত্বগত হুমকির’ সম্মুখীন হয়েছে। এই মুহূর্তে বিশ্বের সমন্বিত নিষেধাজ্ঞা জান্তার ‘দুঃস্বপ্নের’ শাসনের অবসান ঘটাতে সাহায্য করতে পারে।
বুধবার মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ দূত এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ বলেছেন, জান্তা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা, সেইসাথে দলত্যাগ, আত্মসমর্পণ এবং নিয়োগের চ্যালেঞ্জগুলো সেনা সংখ্যা হ্রাসের দিকে পরিচালিত করেছে। বিষয়টি ‘মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর জন্য অস্তিত্বের হুমকি’ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, “যারা মিয়ানমারে শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য জান্তার সাথে বাজি ধরেছে তারা হেরে যাওয়ার বাজি রেখেছে।”
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানে ক্ষমতায় আসে সামরিক জান্তা। এরপর থেকে দেশটির আঞ্চলিক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো জান্তার ওপর হামলা শুরু করে। সম্প্রতি কয়েকটি অঞ্চলে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় যেতে বাধ্য হয়েছে সামরিক বাহিনী।
অ্যান্ড্রুজ বলেন, “জান্তা দেশের সহিংসতা, অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক অবনতি এবং অনাচারের প্রধান চালক।”
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো- আর্থিক প্রবাহের উপর বিধিনিষেধ এবং সামরিক ব্যবহারের জন্য সরঞ্জাম বিক্রি বন্ধ- জান্তার কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।
জাতিসংঘের এই দূত সিঙ্গাপুরের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুর মিয়ানমারের কাছে সামরিক ব্যবহারের জন্য সরঞ্জাম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে এবং গত বছর এই ধরনের বিক্রি ৮৩ শতাংশ কমেছে।
সূত্র: এএফপি
নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান রোহিঙ্গারা
বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দ্রুত নিজ দেশে ফিরে যেতে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে সমাবেশ করেছেন রোহিঙ্গারা। রবিবার (১৯ জুন) সকাল ১১টায় উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্পসহ বিভিন্ন ক্যাম্পে বৃষ্টি উপেক্ষা করে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকে বিভিন্ন ব্লক থেকে ‘গো হোমথ’ ব্যানার নিয়ে সমাবেশে অংশ নেন অসংখ্য রোহিঙ্গা।
এদিকে পূর্বনির্ধারিত এই সমাবেশে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের পাশাপাশি থানা পুলিশে সদস্যরা মোতায়েন ছিলেন বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।
লম্বাশিয়া অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আরকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) সংগঠনের সদস্য মাস্টার নুরুল আমিন, রোহিঙ্গা নেতা মৌলানা নুর হোসেন, মাস্টার ইউছুপ, মাস্টার কামাল, ডা. জুবাইর এবং মুফতি আব্দুর রহিম।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণ আমাদেরকে আশ্রয় দিয়ে যে মানবিক পরিচয় দিয়েছে তার জন্যে আমরা কৃতজ্ঞতা (শোকরিয়া) জানাচ্ছি। আমরা গত ৫ বছর এখানে অনেক ভালো আছি, কিন্তু এটি আমাদের দেশ নয়, তাই দ্রুত নিরাপদ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই। তারা আরো বলেন, বিশ্ববাসীর কাছে দাবি জানাচ্ছি, আমাদের দাবিগুলো মেনে নিয়ে স্বদেশে ফিরে যেতে সহায়তা করুন।
১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের এসপি নাইমুল হক জানান, পৃথক ভাবে ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য এপিবিএন পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল।
জানা গেছে, আগামী ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একসঙ্গে পৃথক পৃথক স্থানে কয়েকটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব সমাবেশে তারা গণহত্যার বিচার, দ্রুত প্রত্যাবাসনসহ ১৯টি দাবি তুলে ধরেন।
আপনার মন্তব্য লিখুন