মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধায়নে করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) সুবিধা সংবলিত কেবিনে চিকিৎসাধীন আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
বুধবার (২৪ জুলাই) সকালে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এসব কথা বলেন।
হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ৭ জুলাই ভোর ৪টা ২০ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল নেওয়া হয়। পরে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেদিন থেকেই তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এর আগে, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শার্টডাউনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী ব্যাপক সহিংসতা ও নাশকতা মোকাবিলায় শুক্রবার (১৯ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি এবং সেনা মোতায়েন করা হলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে খালেদা জিয়া মারা গেছেন।
এরই প্রেক্ষিতে পরের দিন ডা. এ জেড এম জাহিদ হাসন এবং পরবর্তী সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, খালেদা জিয়াকে নিয়ে যে সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে, তা সঠিক নয়, গুজব। তিনি আগের মতোই আছেন। সিসিইউ সুবিধা সংবলিত কেবিনে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি, তার অবস্থা স্থিতিশীল।
৭৯ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া বার্ধক্যজনিত নানা জটিল রোগে ভুগছেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে জামিন পাওয়ার পর গুলশানের বাসা ফিরোজা’য় অবস্থান করছেন তিনি। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে দফায় দফায় হাসপাতালে যেতে হচ্ছে তাকে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেশে আর সম্ভব নয়: মেডিকেল বোর্ড
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেশে আর সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। তারা বলেছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে হবে। তার শরীরে প্রতিনিয়ত পানি জমছে। বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার আর তেমন কোনো চিকিৎসার অপশন নেই।
সোমবার (০৯ অক্টোবর) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও শারীরিক সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে করা এক সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য প্রফেসর নুরুদ্দিন বলেন, আমাদের হাতে আর কোনো চিকিৎসা নেই। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য আমরা আপাতত শুধু অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে পারছি। এর ফলে খালেদা জিয়ার শরীর অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে যাচ্ছে।
পরবর্তীতে উনার ওপর হয়তো আর কোনো অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না। তাই এ দেশে উনার আর কোনো চিকিৎসা নেই। উনার বুকে এবং পেটে প্রতিনিয়ন পানি জমে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। উনার শরীর থেকে পানি বের করার জন্য কিছুদিন পর পর সিসিউতে নেওয়া হচ্ছে। তাই খালেদা জিয়ার ভালো উন্নত চিকিসার জন্য তাকে বিদেশ নিতে হবে।
বোর্ডের অপর চিকিৎসক অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী বলেন, মূল চিকিৎসা পাচ্ছেন না বেগম জিয়া। লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে তার। আমরা যে চিকিৎসা দিচ্ছি তা তাৎক্ষণিক। জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। লিভারের সংক্রমণের কারণে বার বার পেটে পানি চলে আসছে বেগম খালেদা জিয়ার। উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হলেও কাজ হচ্ছে না। পেট থেকে পানি হৃদযন্ত্র পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। এ জন্য এরই মধ্যে তাকে দুই দুই বার সিসিইউতে নেয়া হয়েছে।
আপনার মন্তব্য লিখুন