ইরানের কুদস ফোর্সের সাবেক কমান্ডার লে. জেনারেল কাসেম সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ না নিতে ইরানকে অনুরোধ করে বারবার বার্তা দিচ্ছে আমেরিকা। তারা এ জন্য ইরানকে কিছু পুরস্কার ও পাশাপাশি কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ‘প্রেস টিভি’ এক প্রতিবেদনে এ দাবি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র নৌ ইউনিটের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল আলীরেজা তাংসিরি বলেছেন, তার দেশের কুদস ফোর্সের সাবেক কমান্ডার লে. জেনারেল কাসেম সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ অবশ্যই নেবে ইরান। কোনও আলোচনায় অন্য কোনও কিছুর বিনিময়ে প্রতিশোধ গ্রহণের প্রত্যয় থেকে তেহরান কোনওভাবেই সরে আসবে না।
ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শিরাজ নগরীতে দেওয়া এক বক্তৃতায় তাংসিরি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, আমেরিকার পক্ষ থেকে সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য বারবার ইরানকে বার্তা পাঠানো হচ্ছে। এর পরিবর্তে তারা কিছু পুরস্কারের পাশাপাশি ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করতে চায়।
অ্যাডমিরাল তাংসিরি এ প্রস্তাবকে ‘দিবাস্বপ্ন’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা প্রতিশোধ গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন; কাজেই আমরা সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ নেবই। তিনি বলেন, কোথায় এবং কখন প্রতিশোধ নেব সেটা আমরাই ঠিক করব।
আইআরজিসি’র এই কমান্ডার বলেন, জেনারেল সোলাইমানি হত্যায় যারা জড়িত ছিল তাদের প্রত্যেকের বিচার করা হবে। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনির ভাষণ উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “তারা তাদের নোংরা কর্মের জন্য এই পৃথিবীতেই শাস্তি পাবে ইনশাআল্লাহ।”
২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন ড্রোন হামলায় জেনারেল সোলাইমানি এবং ইরাকের জনপ্রিয় হাশদ আশ-শাবি বাহিনীর কমান্ডার আবু মাহদি আল-মুহান্দিস নিহত হন। মধ্যরাতের ওই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের জের ধরে আমেরিকার সঙ্গে ইরানের মুখোমুখি সামরিক সংঘাত বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি নির্দেশ ও তত্ত্বাবধানে এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় এবং এ কাজে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর প্রকাশ্য সম্মতি ছিল। যেসব সেনা কমান্ডার এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল তাদের নামও ইরানের পক্ষ থেকে একাধিকবার প্রকাশ করা হয়েছে।
আপনার মন্তব্য লিখুন