রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের ৪টি অঞ্চলে গণভোট শেষ হয়েছে। প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, গণভোটে রাশিয়ার অংশ হওয়ার পক্ষে ৯৬ শতাংশের বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। তবে, কিয়েভ ও পশ্চিমারা এই গণভোটকে জোরালো ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। খবর রয়টার্স।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিজ্জিয়া এবং খেরসন- এই ৪টি অঞ্চলে ৫ দিন ধরে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা ইউক্রেনের প্রায় ১৫ শতাংশ এলাকা। ইউক্রেন ও পশ্চিমারা বলেছে, ওই ৪টি অঞ্চল দখলে এটি রাশিয়ার একটি আইনি অজুহাত তৈরির অবৈধ, দমনমূলক প্রক্রিয়া। যেন এই ৪টি অঞ্চলে পুনরায় দখলে ইউক্রেনের যে কোনো প্রচেষ্টাকে রাশিয়ার ওপর আক্রমণ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
গত সপ্তাহে পুতিন বলেন, রাশিয়ার ‘আঞ্চলিক অখণ্ডতা’ রক্ষায় তিনি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পিছপা হবেন না। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা ভোটের শাস্তি হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে রাশিয়ার ওপর আরও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে, রাশিয়ার এই উদ্যোগ যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের কর্মকাণ্ডে পরিবর্তন আনবে না।
কিয়েভ বারবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, রাশিয়ার অতিরিক্ত অঞ্চল দখল করলে তা শান্তি আলোচনার যে কোনো সুযোগ নষ্ট করে দেবে। এতে বলা হয়েছে, যেসব ইউক্রেনীয়রা রাশিয়াকে ভোট আয়োজনে সহায়তা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হবে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, প্রাথমিক গণনায় দেখা গেছে- খেরসন অঞ্চলে ৯৬.৯৭ শতাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং জাপোরিজ্জিয়ায় রাশিয়ার পক্ষে ৯৮.১৯ পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। দোনেৎস্ক এবং লুহানস্কে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল ৯৮ শতাংশের নিচে।
ইউক্রেন দাবি করেছে, অনেক ক্ষেত্রে বন্দুকের ভয় দেখিয়ে ভোট দিতে বাধ্য করা হয়েছে। পুতিন মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, জাতিগত রাশিয়ান ও রুশভাষীদের রক্ষা করতে এই ভোট। যা যা কিয়েভ অস্বীকার করেছে। তিনি বলেন, যেসব অঞ্চলে এই গণভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানকার মানুষকে বাঁচানো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও আমাদের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে।
সংযুক্তির ঘোষণা আসতে পারে শুক্রবার
আগামী শুক্রবার রুশ পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন পুতিন। ওই ভাষণে গণভোট হওয়া অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের তরফে বলা হয়েছে, ‘রাশিয়ার নেতারা ধরেই নিয়েছেন, ইউক্রেনের অঞ্চলগুলো রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করার ঘোষণা তাদের “বিশেষ সামরিক অভিযান” ঘিরে রুশ জনগণের মধ্যে যে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, তা দূর করবে এবং যুদ্ধের পক্ষে জনসমর্থন বাড়বে।
তবে যুদ্ধে পিছু হঠার পর রাশিয়ার মানুষের মধ্যে যে সচেতনতা দেখা গেছে, আর “আংশিক সেনা নিযুক্তি”র ঘোষণায় দেশটিতে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে, তাতে মনে হয় না রুশ নেতাদের এই আশা পূরণ হবে।’
আপনার মন্তব্য লিখুন