ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ সেদেশের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিতে আপত্তি তুলে নিয়েছে যুক্তরাজ্য।
মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে দেশটির নীতি ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিল ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি, যা ইসরায়েল বিষয়ে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ দেশটির।
এ ধরনের সিদ্ধান্ত না নেওয়ার ব্যাপারে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের চাপকে উপেক্ষা করেও এই পদক্ষেপ নিয়েছে ব্রিটেনের লেবার পার্টি সরকার।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট শুক্রবার জানায়, আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে ওই আদালতের এখতিয়ার নিয়ে যুক্তরাজ্যের সরকার কোনও চ্যালেঞ্জ জানাবে না।
যুক্তরাজ্যের এ পদক্ষেপে এখন করিম খানের আবেদন আইসিসির গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আরও বেশি সম্ভাবনা তৈরি হল। আদালত এ আবেদন গ্রহণ করলে তা হবে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবচেয়ে বড় তিরস্কারের ঘটনা। সেই সঙ্গে দেশের বাইরে ভ্রমণে গ্রেফতার হওয়ার ঝুঁকিতেও পড়বেন নেতানিয়াহু।
যুক্তরাজ্যের ওই সিদ্ধান্ত ইসরায়েল নিয়ে দেশটির গত কয়েক মাস ধরে গ্রহণ করে চলা নীতির একেবারে বিপরীত। কেননা, আগের কনজারভেটিভ সরকার দেশটির প্রতি তার সমর্থনের ব্যাপারে ছিল অনমনীয়; যা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানেরই অনুরূপ।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে যুক্তরাজ্যের নতুন সরকারের মন্ত্রীরা ইসরায়েলকে নিয়ে নতুন আরও কিছু সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যার মধ্যে থাকবে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন কতটুকু প্রতিপালন করছে সে বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের অনুরোধে শুরু হওয়া পর্যালোচনার ফলাফলও। ইতোমধ্যে, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিও ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইসরায়েলে কিছু অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করার কথা বিবেচনা করছেন তিনি। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শিরিন হত্যার নিন্দা জানাল বাংলাদেশ
অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করা আল-জাজিরার প্রতিনিধি শিরিন আবু আকলেহ এর হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জঘন্য হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে তদন্ত ও জবাবদিহিতা আওতায় আনার দাবি জানায়। আজ সোমবার (১৬ মে) পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি-নীতির স্পষ্ট লঙ্ঘনের শামিল।
বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে, ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের তথ্য নথিভুক্তির দায়িত্ব পালন করা সাংবাদিক আবু আকলেহের ওপর ইসরায়েলের দখলদার বাহিনীর হামলার ঘটনা সংবাদ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা লঙ্ঘনের প্রেক্ষাপটে ঘটেছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবিকে নীরব করার উদ্দেশ্যে দখলদার ইসরায়েল তা ঘটিয়েছে।
বিবৃতিতে পূর্ব জেরুজালেমে আবু আকলেহ এর জানাজায় অংশ নেওয়া শোকাহত মানুষের ওপর ইসরায়েলি পুলিশের বলপ্রয়োগ ও অসম্মান প্রদর্শনের নিন্দা জানানো হয়। কোনো ধরনের হয়রানি ও অপমান ছাড়াই শোকার্তদের শোক প্রকাশ ও প্রয়াত আত্মার জন্য প্রার্থনার অনুমতি দেওয়া মানবিক শালীনতার ন্যূনতম প্রত্যাশা হলেও ইসরায়েল তা করেনি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সাংবাদিক আবু আকলেহকে হত্যার জন্য দখলদার ইসরায়েল সরকারকে পুরোপুরি দায়ী বলে অভিযোগ করা হয়। এছাড়াও এ জঘন্য হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশ মনে করে, অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে কর্মরত সাংবাদিক ও গণমাধ্যম পেশাজীবীদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইসরাইলকে বাধ্য করা উচিত।
বিবৃতিতে ফিলিস্তিন ইস্যুর সমাধানে বাংলাদেশ নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে জানায় যে ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমান্ত এবং পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানই মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ।
আপনার মন্তব্য লিখুন