দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতায় ২৫টি আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আগে থেকেই আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী না থাকায় মোট ২৬টি আসন নিশ্চিত করেছে দলটি। সমঝোতা হওয়া ২৫টি আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী থাকবে না বলে জানা গেছে।
নৌকা হারালেন যে ২৫ প্রার্থী-
ঠাকুরগাঁও-৩ মো. ইমদাদুল হক, কিশোরগঞ্জ-৩ মো. নাসিরুল ইসলাম খান
রংপুর-১ মো. রেজাউল করিম রাজু রংপুর-৩ তুষার কান্তি মণ্ডল, নীলফামারী-৪ মো. জাকির হোসেন বাবুল
কুড়িগ্রাম-১ মো. আছলাম হোসেন সওদাগর, কুড়িগ্রাম-২ মো. জাফর আলী, গাইবান্ধা-১ আফরুজা বারী, গাইবান্ধা-২ মাহবুব আরা বেগম গিনি
সিলেট-৩ হাবিবুর রহমান, নীলফামারী-৩ মো. গোলাম মোস্তফা, বগুড়া-৩ মো. সিরাজুল ইসলাম খান রাজু
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ মো. শাহজাহান আলম, চট্টগ্রাম-৮ নোমান আল মাহমুদ, বগুড়া-২ তৌহিদুর রহমান মানিক
সাতক্ষীরা-২ মো. আসাদুজ্জামান বাবু, ফেনী-৩ মো. আবুল বাশার, চট্টগ্রাম-৫ মোহাম্মদ আবদুস সালাম,
পটুয়াখালী-১ মো. আফজাল হোসেন, ময়মনসিংহ-৫ মো. আব্দুল হাই আকন্দ, ময়মনসিংহ-৮ মো. আব্দুছ ছাত্তার,
পিরোজপুর-৩ মো. আশরাফুর রহমান, হবিগঞ্জ-১ ডা. মো. মুশফিক হুসেন চৌধুরী, মানিকগঞ্জ-১ মো. আব্দুস সালাম, বরিশাল-৩ সরদার মো. খালেদ হোসেন।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে বিরোধী দল জাপার কয়েকদিন ধরে চলা আলোচনায় গতকাল এ অগ্রগতি হয়। তবে জাপা আরও বেশি আসন চায়। ফলে এ আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।
গত শুক্রবার রাতেও সংসদ ভবনে উভয় দলের নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়। কয়েক দফা বৈঠকের পর জাপাকে ২৬ আসনে ছাড় দিতে সম্মত হয় আওয়ামী লীগ। তবে ঢাকার কোনো আসন জাপাকে দিতে রাজি নয় ক্ষমতাসীনরা। টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্র জাপার এবারের দাবি ছিল ৫০ আসন। ৩৫-এর কম আসনে সমঝোতায় রাজি নয়—এমন মনোভাবও জানিয়েছিল দলটি।
১৯৯৬ সালে জাপাকে নিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এরপর ২০০৮ থেকে সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত আসন ভাগাভাগি হয়েছে দুই দলের মধ্যে। এবার জাপা পৃথক নির্বাচন করার ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত উভয়পক্ষই আসন বণ্টন করতে সম্মত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চলছে আলোচনা।
ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় রয়েছে। পরদিন ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। সবশেষ আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ।
আসন পেলেন না জাতীয় পার্টির যেসব হেভিওয়েট প্রার্থী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতায় ২৬টি আসনে ছাড় পেয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। সমঝোতা অনুযায়ী এসব আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী থাকবে না। তবে এসব আসনে আওয়ামী লীগের যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তারা ভোটের মাঠে থাকবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ছাড় পাওয়া এই ২৬ আসনে নাম নেই জাতীয় পার্টির অন্তত তিনজন হেভিওয়েট প্রার্থীর। তারা হলেন- দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, দলের কো-চেয়ারম্যান ও জাতীয় মহিলা পার্টির সভাপতি সালমা ইসলাম; দলের কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা।
এর আগে গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হয়। সবশেষ শনিবার এ বিষয়ে এ অগ্রগতি হয়। তবে জাপা আরও বেশি আসন দাবি করেছে। ফলে এ আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।
তবে ঢাকার কোনো আসন জাপাকে দিতে রাজি নয় ক্ষমতাসীনরা। টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্র জাপার এবারের দাবি ছিল ৫০ আসন। ৩৫-এর কম আসনে সমঝোতায় রাজি নয়—এমন মনোভাবও জানিয়েছিল দলটি।
উভয় দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাড়তি আসন ছাড় দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হবে বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়; কিন্তু এতেও স্বস্তিতে নেই জাপা। দলটির অনেক হেভিওয়েট নেতার কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। কারণ, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয় নিশ্চিত করা কঠিন। ফলে আসন নিয়ে আলোচনা আরও দীর্ঘ হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
তিনি কালবেলাকে বলেন, আসনসহ নানা বিষয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনা চলছে। নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত আলোচনা হতে পারে।
১৯৯৬ সালে জাপাকে নিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এরপর ২০০৮ থেকে সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত আসন ভাগাভাগি হয়েছে দুই দলের মধ্যে। এবার জাপা পৃথক নির্বাচন করার ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত উভয়পক্ষই আসন বণ্টন করতে সম্মত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চলছে আলোচনা।
জাপার একাংশ রওশনপন্থিরা এবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। এ অংশে রওশন এরশাদ, সাদ এরশাদ, মশিউর রহমান রাঙ্গা, রুস্তম আলী ফরাজীসহ বর্তমান চারজন এমপি রয়েছেন। রওশনের পক্ষ থেকে জিএম কাদেরের কাছে দাবি ছিল, তার অনুসারী অন্তত ৬০ জনের মনোনয়ন নিশ্চিত করা। এ ছাড়া বহিষ্কৃতদের আবারও দলে ফিরিয়ে নেওয়া।
রওশন, সাদ ও রাঙ্গা ছাড়া জিএম কাদেরপন্থিরা আর কাউকে মনোনয়ন দিতে রাজি নয়। এ কারণে কাদেরপন্থিদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন বিরোধী দলের এ নেতা। সর্বশেষ তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কাদেরের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে তার সঙ্গে কোনো জোট না করারও আবদার করেন।
যে ২৬ আসন পেল জাতীয় পার্টি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতায় ২৬টি আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। এ আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী থাকবে না বলে জানা গেছে।
জাতীয় পার্টির ২৬ আসনের প্রার্থীরা হলেন—ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে মো. মুজিবুল হক চুন্নু, রংপুর-১ আসনে হোসেন মকবুল শাহরিয়ার, রংপুর-৩ আসনে জিএম কাদের, নীলফামারী-৪ আসনে আহসান আদেলুর রহমান, কুড়িগ্রাম-১ আসনে মুস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম-২ আসনে পনির উদ্দিন আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সেলিম ওসমান, গাইবান্ধা-১ আসনে শামীম পাটোয়ারী, গাইবান্ধা-২ আসনে মো. আব্দুর রশিদ সরকার, সিলেট-৩ আসনে মো. আতিকুর রহমান, নীলফামারী-৩ আসনে রানা মোহাম্মদ সোহেল ও বগুড়া-৩ আসনে নুরুল ইসলাম তালুকদার
এ ছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আব্দুল হামিদ, চট্টগ্রাম-৮ আসনে সুলেমান আলম শেঠ, বগুড়া-২ আসনে শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, সাতক্ষীরা-২ আসনে মো. আশরাফুজ্জামান, ফেনী-৩ আসনে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৫ আসনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পটুয়াখালী-১ আসনে রুহুল আমিন হাওলাদার, ময়মনসিংহ-৫ আসনে সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তি, ময়মনসিংহ-৮ আসনে ফখরুল ইমাম, পিরোজপুর-৩ আসনে মো. মাশরেকুল আজম রবি, হবিগঞ্জ-১ আসনে মো. আব্দুল মুনিম চৌধুরী, মানিকগঞ্জ-১ আসনে জহিরুল আলম রুবেল ও বরিশাল-৩ আসনে গোলাম কিবরিয়া টিপু।