সৌদি ক্রাউন প্রিন্স (যুবরাজ) মোহাম্মদ বিন সালমান ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টার ফলে ‘গুপ্ত হত্যার’ সম্মুখীন হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন।
আমেরিকান অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন পলিটিকোয় বুধবার প্রকাশিত একটি কলামে মার্কিন আইন প্রণেতাদের সাথে সৌদি রাজ কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক কথোপকথনের বরাত দিয়ে এই খবর প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি রাজ কর্মকর্তারা কংগ্রেস সদস্যদের কাছে উল্লেখ করেছেন যে তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের সাথে একটি বড় দর কষাকষি করে তার জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন। যার মধ্যে সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করা রয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আনোয়ার সাদাতের বিষয়টিও সামনে আনা হয়। ইসরায়েলের সাথে শান্তি চুক্তি করার পরই তিনি হত্যকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। সাদাতকে রক্ষা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কী করেছিল সেই প্রশ্নও তুলেছেন সৌদির রাজ কর্মকর্তারা।’
২০২০ সালে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান এবং মরক্কোর সাথে মার্কিন মধ্যস্থতায় সম্প্রীতি চুক্তিতে প্রবেশ করে।
ওয়াশিংটনও তেল আবিবের সাথে রিয়াদের সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।
মার্কিন নির্বাচনের আগেই সৌদি – ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে?
আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এর আগেই ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যকার সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে বলে শীর্ষস্থানীয় এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেছেন, হোয়াইট হাউসে বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে বৈঠকের সময় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ওই ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, এই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব কমানোর জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, এর মূল্য যদি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, তবেই চুক্তিটি হতে পারে। তা এমনকি মার্কিন নির্বাচনের আগেও হতে পারে। ইসরায়েল ও সৌদি আরবের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে।
টাইমস অব ইসরায়েলের খবর অনুযায়ী, ইতোপূর্বে সামগ্রিক বিষয়াদি বিবেচনা করে ধারণা করা হয়েছিল যে নভেম্বরে মার্কিন নির্বাচনের আগে সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি সম্ভব হবে না।
এছাড়া কংগ্রেসের একটি সূত্র টাইমস অব ইসরায়েলকে জানিয়েছিল- ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য সৌদি আরব নিরাপত্তার নিশ্চয়তাসহ যেসব শর্ত দিয়েছে, সেগুলো সমন্বয় করার জন্য যে সময়ের প্রয়োজন, তা নির্বাচনের আগে করা সম্ভব নয়।
তারা এ ধরনের চুক্তি করা অসম্ভব না বললেও নির্বাচনের আগে সময়ের সাথে পাল্লা দেওয়া বেশ কঠিন বলে জানান।
তাছাড়া ওই কর্মকর্তারা স্বীকার করেন- গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া ওই ধরনের চুক্তি করা সম্ভব নয়। গাজার যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে সৌদি আরব এবং শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তারা একমত পোষণ করেছেন। তারা বলছেন, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে রিয়াদের পক্ষে স্বাভাবিককরণ চুক্তিটি দেশে বা আঞ্চলিকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারবে না।
এদিকে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত প্রিন্সেস রিমা বিনতে বন্দর আল-সৌদ নিউ ইয়র্ক টাইমসকে গত এপ্রিলে বলেছিলেন, দ্বিরাষ্ট্র সমাধান ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব নয়।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর
ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কাছে সৌদি: যুবরাজ
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অনেকটাই কাছে তার দেশ। পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের অনেক দেশই সৌদির পথেই হাঁটছে।
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যেক দিন আমরা আরো কাছে যাচ্ছি।’
এসময় ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন বলে জানিয়েছেন সৌদি যুবরাজ। তিনি জানিয়েছেন, তারা দেখেশুনেই আগাচ্ছেন এবং তাদের এই যাত্রা সফল হলে ফিলিস্তিনিদের জীবন আরো সহজ হয়ে আসবে।
এই সিদ্ধান্তে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন আসবে বলেও মনে করেন সৌদি যুবরাজ।
ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে অনেকদিন ধরেই সৌদি আরবকে চাপ দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সাক্ষাৎকারে ইরানসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন সৌদি যুবরাজ।