সিরিয়ার ‘আত্তানাফ’ ও ইরাকের ‘আইন আল-আসাদ’ সামরিক ঘাঁটিতে সাম্প্রতি হামলায় ৪৫ মার্কিন সেনা আহত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগন এ তথ্য জানিয়েছে।
পেন্টাগনের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, পশ্চিম এশিয়ায় (মধ্যপ্রাচ্য) মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার কারণে আহত মার্কিন সেনাদের মধ্যে ২৪ জন মস্তিষ্কের ট্রমায় আক্রান্ত হয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার বলেছেন, গত ১৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইরাক ও সিরিয়ায় অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে ৩৮ দফা হামলা হয়েছে।
গাজায় বর্বর আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে ইরাকের ইসলামি প্রতিরোধ সংগঠনগুলো ইরাকের পাশাপাশি সিরিয়ায় অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে আসছে।
এসব হামলার কারণে গত এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ ইরাকে মোতায়েন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুই-তৃতীয়াংশকে সেদেশ থেকে সরিয়ে নিয়েছে।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
গাজা যুদ্ধে ‘কৌশলগত সাময়িক বিরতি’ঘোষণায় সম্মত নেতানিয়াহু: রিপোর্ট
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার যুদ্ধে ‘কৌশলগত সাময়িক বিরতি’ ঘোষণায় সম্মতি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে তিনি একথাও বলে দিয়েছেন- এটি কোনোভাবেই ‘যুদ্ধবিরতি’ হবে না।
মার্কিন টিভি চ্যানেল এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এক ঘণ্টা বা তার কিছু বেশি সময় ছোটোখাট কৌশলগত বিরতি হতেই পারে; গাজায় ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পাঠানো এবং মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের গাজা থেকে বের হতে যতক্ষণ সময় লাগবে, ততক্ষণ। কিন্তু আমি মনে করি না সেখানে একটি ‘সাধারণ যুদ্ধবিরতি’ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফিলিস্তিনের গাজায় ‘তিন দিনের বিরতি’ ঘোষণা করার জন্য তেল আবিবের প্রতি আহ্বান জানানোর পর নেতানিয়াহু ‘কৌশলগত সাময়িক বিরতির’র কথা বললেন।
মঙ্গলবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপে বাইডেন এই আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই বিরতি হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
একজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস নিউজ জানিয়েছে আমেরিকা, ইসরায়েল ও কাতার একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছে। তিন দিনের বিরতি এজন্য দেওয়া হবে যাতে হামাস ১০ থেকে ১২ জন বন্দিকে মুক্তি দিতে পারে। এছাড়াও হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলিদের একটি তালিকা করে সেগুলো যাচাই–বাছাইও করা যাবে।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালায়। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের বিমান বাহিনী গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।
বিগত এক মাসে ইসরায়েলের হামলায় নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী। অন্যদিকে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ। হামলার প্রথম দিনই ইসরায়েল থেকে অন্তত ২৪০ জনকে যুদ্ধবন্দী হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। অন্তত ১৫ লাখ বেসামরিক লোক হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর আটদিনের মাথায় ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তুলেছিল রাশিয়া। কিন্তু আমেরিকা ও ব্রিটেনের আপত্তির কারণে সেই প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে আপত্তি তুলে ওয়াশিংটন ও লন্ডন দাবি করেছিল, গাজায় এখন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলে তা হামাসের পক্ষে যাবে ও এই যুদ্ধবিরতির ফলে তারা আবারও ইসরায়েলে হামলার সুযোগ পাবে।
সূত্র: রয়টার্স, ভয়েস অব আমেরিকা, এবিসি নিউজ
গাজা নিয়ে জরুরি তিনটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করছে সৌদি আরব
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার চলমান সংকট নিয়ে জরুরি তিনটি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। এগুলোর মধ্যে শুধু আরব দেশগুলোকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে একটি সম্মেলন। আরেকটি হবে ইসলামিক দেশগুলো নিয়ে। আর অন্যটি হবে আফ্রিকান দেশগুলোর অংশগ্রহণে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
তবে ঠিক কবে এসব শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে তারিখ উল্লেখ করা হয়নি প্রতিবেদনে। শুধু বলা হয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এসব সম্মেলনের আহ্বান জানাবে সৌদি আরব।
সৌদি আরবের বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ আল-ফালিহ সিঙ্গাপুরে ব্লুমবার্গ নিউ ইকোনমি ফোরামে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সৌদি আরব রিয়াদে তিনটি জরুরি শীর্ষ সম্মেলন আহ্বান করবে।”
তিনি আরো বলেন, “সৌদি আরব এই সপ্তাহে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রাজধানী রিয়াদে একটি জরুরি আরব শীর্ষ সম্মেলন ডাকবে। আফ্রিকা-সৌদি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করা হবে। তারপর অনুষ্ঠিত হবে ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলন।”
খালিদ আল-ফালিহ বলেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে সৌদি আরবের নেতৃত্বে এই তিনটি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এসব সমাবেশের উদ্দেশ্য হবে বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান নিয়ে আলোচনা করা। সূত্র: আল জাজিরা
আপনার মন্তব্য লিখুন