মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। তবে ইরানের কোথায় কোথায় আঘাত করা হয়েছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। এখন পর্যন্ত ইসরায়েল শুধু সামরিক স্থাপনার কথা উল্লেখ করেছে।
শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে ইসরায়েলি হামলায় রাজধানী তেহরান এবং তার আশপাশের এলাকাগুলো মুর্হুমুহু বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে। রাজধানীতে মোট সাতটি বিস্ফোরণের শব্দ পেয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
হামলার পর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইসরায়েলে কয়েক মাস ধরে ইরানের হামলার জবাবে, এই মুহূর্তে ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলোয় সুনির্দিষ্টভাবে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।’
ইরানের প্রতিক্রিয়া কেমন
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম গুলো পরিস্থিতি শান্ত আছে এমনটি দেখানোর চেষ্টা করছে। তবে দেশটির সামাজিক মাধ্যমে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসির এর সিনিয়র ফেলো বেহনাম বেন তালেবলু।
তিনি বলেছেন, ইরানের কিছু টার্গেটে ইসরায়েল হামলা করলেও দেশটির দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হুমকিকে সমূলে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়নি বলে তার মনে হয়েছে।
বিবিসি পার্সিয়ানের বাহমান কালবাসি বলছেন, ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যমে বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতির কথা অস্বীকার করা হয়েছে। তারা ইসরায়েলের হামলা সফল হয়নি বলে দাবি করেছে।
তার মতে ইরান সবসময়ই হামলার পর এমন দাবি করে থাকে। ‘তবে পাল্টাপাল্টি হামলা বন্ধে এটি মুখরক্ষার একটি উপায়ও হতে পারে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। সম্প্রতি লেবাননেও ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে তারা। এসব হামলায় সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও হিজবুল্লাহর প্রধান নিহত হওয়ার পর ১ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। গত ছয় মাসের মধ্যে এটি ছিল ইসরায়েলে ইরানের দ্বিতীয় হামলা।
সূত্র : বিবিসি।
বাংকারে বসে ইরানে হামলা পর্যবেক্ষণ করেন নেতানিয়াহু
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট অজ্ঞাত একটি জায়গা থেকে হামলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে ইসরায়েলি হামলায় রাজধানী তেহরান এবং তার আশপাশের এলাকাগুলো মুর্হুমুহু বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে। রাজধানীতে মোট সাতটি বিস্ফোরণের শব্দ পেয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
হামলার সময় বাংকারে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট।
ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম হায়োমের প্রতিবেদনের বরাতে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানে যখন হামলা হচ্ছিল, তখন তেল আবিবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে একটি ভূগর্ভস্থ কক্ষে (বাংকার) ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট। তারা সেখানে বসে ইরানে হামলা পর্যবেক্ষণ করেন।
ইরানে হামলা শুরুর পরপরই এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
ইরানে হামলার সঙ্গে আমেরিকা জড়িত নয়: পেন্টাগন
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তবে এই হামলার সঙ্গে আমেরিকা জড়িত নয় বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দফতর পেন্টাগন।
পেন্টাগন জানিয়েছে, ইরানে চালানো ইসরায়েলি বিমান হামলার সাথে তারা জড়িত নয়। তবে ইসরায়েল হামলার বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলা নিয়ে আলোচনা করবেন।
মার্কিন একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকেও ইসরায়েলি হামলা সম্পর্কে অবহিত করা হয়ের্ছে। তিনি এর ওপর কড়া নজর রাখছেন।
ইরানে বিমান হামলার বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, তারা ইরানের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, রাজধানী তেহরানে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলি এই হামলায় খুব সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আপনার মন্তব্য লিখুন