ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ নিয়ে আবারও আমেরিকা ও ইসরায়েলের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলো ইরান।
ইরান বলেছে, দখলদার ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নিরীহ বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর আগ্রাসন বন্ধ না করলে মধ্যপ্রাচ্যের ইসরায়েলবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনগুলো চুপ করে বসে থাকবে না।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানয়ানি সোমবার তেহরানে সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মার্কিন সমর্থনে গাজায় চলমান ইসরায়েলি অপরাধযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান প্রতিবাদ একথা প্রমাণ করছে যে, বিশ্বের দেশগুলো গাজা-বিরোধী যুদ্ধে অসন্তুষ্ট এবং তারা এই পাশবিকতার অবসান চায়।
কানয়ানি বলেন, ইহুদিবাদী সরকারের অপরাধযজ্ঞ মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধ গ্রুপগুলোকে ক্ষুব্ধ করেছে। আমেরিকা ও ইসরায়েলকে যদি এসব গ্রুপের প্রতিশোধপরায়ণতা থেকে রক্ষা পেতে হয় তাহলে গাজাবাসীর ওপর বর্বরতা অবিলম্বে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে। সেইসঙ্গে ওই অবরুদ্ধ উপত্যকায় মানবিক ত্রাণ প্রবেশ করার অনুমতি দিতে এবং গাজাবাসীকে বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তুচ্যুত করা বন্ধ করতে হবে।
গাজায় ইহুদিবাদী বর্বরতার প্রতিবাদে ইয়েমেনের নৌবাহিনী যেদিন ইসরায়েলের মালিকানাধীন একটি বড় জাহাজ আটক করার ঘোষণা দিয়েছে সেদিনই ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের এ সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়।
ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলন হুমকি দিয়ে বলেছে, গাজায় ইসরায়েলি পাশবিকতা বন্ধ না হলে লোহিত সাগর দিয়ে চলাচলকারী প্রতিটি ইসরায়েলি জাহাজ হবে তাদের হামলার বৈধ লক্ষ্যবস্তু।
নাসের কানয়ানি বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও শান্তি রক্ষার স্বার্থে গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতি সমর্থন বন্ধ করতে মার্কিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্যদেরকে সংঘাতের বিস্তার না ঘটানোর আহ্বান জানানোর পরিবর্তে ওয়াশিংটনের উচিত তেল আবিবের প্রতি অন্ধ সমর্থন বন্ধ করা। ইরানের এই মুখপাত্র বলেন, মার্কিন সরকার ইসরায়েলকে রক্ষা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের স্বার্থ জলাঞ্চলি দিচ্ছে।
সূত্র: প্রেসটিভি
যুদ্ধবিরতির সময় গাজার আকাশে ইসরায়েলের কোন বিমান দেখতে চায় না হামাস
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম বলছে, ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে হামাসের একটি চুক্তি আসন্ন। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবাদের বিষয় হলো-হামাসের একজন নেতা ইঙ্গিত দিয়েছেন, তারা চান না যে যুদ্ধবিরতির সময় গাজার আকাশে কোনো ধরনের ইসরায়েলি বিমান থাকুক। শুধু বিমান হামলা বন্ধ নয়, নজরদারির ক্ষেত্রেও কোনো বিমান থাকুক চায় না হামাস।
খবরে বলা হয়েছে, এটি ইসরায়েলের জন্য বিবাদের বিষয়। কারণ এটি তাদের জন্য বিশেষত স্থল সৈন্যদের জন্য সম্ভাব্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
তারা আরও বলছে যে, বন্দীদের মধ্যে ৫০ জনকে মুক্তি দেওয়ার সম্ভাব্য চুক্তি রয়েছে এবং যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর বিনিময়ে পরে বাকি ১০০ জনকে মুক্তি দেওয়া হবে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি আজ ঘোষণা করা হতে পারে। কাতারের মধ্যস্থতায় হতে যাওয়া এই চুক্তিটি নিয়ে ইসরায়েল এখনও নিশ্চিত করেনি।
ক্ষোভে নেতানিয়াহুর সভা ত্যাগ করলেন জিম্মিদের স্বজনরা
ক্ষোভে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সভা ত্যাগ করলেন ফিলিস্তিনের গাজায় আটক জিম্মিদের স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, নেতানিয়াহু আটক জিম্মিদের ব্যাপারে এখন সরকারের পদক্ষেপ ও উদ্দেশ্য নিয়ে মিশ্র তথ্য দিচ্ছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইসরায়েল’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি জিম্মিদের স্বজনরা সোমবার রাতে তেল আবিবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সঙ্গে দেখা করতে যান। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় রাখার পর তাদের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এ সময় জিম্মিদের স্বজনদের আশ্বস্ত করে বক্তব্য দিচ্ছিলেন নেতানিয়াহু। কিন্তু তার বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে না পেরে সভার মাঝ পথে সেখান থেকে কিছু স্বজন বেরিয়ে যান।
তারা বলেন, “কিছু দিন আগে তারা যুদ্ধমন্ত্রী বেনি গ্যান্তজ ও আরেক মন্ত্রী গাদি এইসেনকটের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তখন তারা জানিয়েছিলেন- জিম্মিদের উদ্ধার করে নিয়ে আসাই এই যুদ্ধের প্রধান উদ্দেশ্য। কিন্তু এখন নেতানিয়াহু বলছেন- জিম্মিদের উদ্ধারের পাশাপাশি হামাসকে নির্মূল করার বিষয়টিও সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”
আর এই বিষয়টিই তাদেরকে মর্মাহত করেছে বলে জানিয়েছেন তারা। তাদের বক্তব্য, ইসরায়েল সরকারের এই পদক্ষেপের কারণে জিম্মিদের আরও বেশি সময় ধরে গাজায় থাকতে হবে। এতে তারা ক্ষুব্ধ।
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল