আরব দেশ মিশর আর্থিক সংকট কাটাতে তাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিক্রি করছে। চলতি সপ্তাহে দুবাইয়ে এক সম্মেলনে দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেছেন, মিসরের বেসরকারি খাতের আকার ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৬৫ শতাংশ করা হবে। এ জন্য রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বিমা, জ্বালানি প্রতিষ্ঠান বিক্রি করা হবে। সরকারি ব্যয়ে কাটছাঁট করা হবে।
দুবাইয়ের সম্মেলনে সিসি আরও বলেন, প্রতিবছর মিসরে তিন ট্রিলিয়ন ডলারের (তিন লাখ কোটি) বাজেট দরকার। কিন্তু আমাদের কাছে এই অর্থ নেই। বাজেট মেটাতে আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও কুয়েতের সহায়তা কামনা করেন তিনি।
দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটের উদ্বোধনী দিনে মিসরের প্রেসিডেন্ট তার বক্তব্যে আরব আমিরাতের সঙ্গে সুসম্পর্কের প্রশংসা করেন। তিনি তাদের মিসরে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
মিসরের অর্থনীতি অনেকটা ভেঙে পড়েছে। এই বিপর্যয় ঠেকাতে প্রেসিডেন্ট সিসি সম্মেলনে তার দেশের সংস্কারের ফিরিস্তি তুলে ধরেন।
গত বুধবার বেশ কয়েকটি বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়, উপসাগরীয় অঞ্চলের সৌদি আরব, কুয়েত, কাতারসহ যেসব দেশ তেল-গ্যাস নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে তাদের অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করতে চায়, তারা মিসরে সম্পদ ও ভূমি কিনতে আগ্রহী। এখন সেখানে বিনিয়োগ করার সবচেয়ে ভালো সময়। গত ১১ মাসে মিসরের মুদ্রা পাউন্ড মার্কিন ডলারের বিপরীতে অর্ধেক মূল্য হারিয়েছে। মিসরের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবমতে, গত জানুয়ারিতে মুদ্রাস্ফীতি ২৬ দশমিক ৫০ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। উপসাগরীয় দেশের মতো বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য মিসরের বর্তমান অবস্থা বেশ আকর্ষণীয়। সস্তায় সেখানে বিনিয়োগ করা যাবে।
সিসি বলছেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য এ ধরনের প্রকল্প জরুরি। এই প্রকল্প দেশের ক্ষয়িষ্ণু অবকাঠামোর পুনঃনির্মাণে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে তিনি এসব প্রকল্পের কারণে মিসরের অর্থনীতির অস্থিতিশীলতার অভিযোগ উড়িয়ে দেন। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে স্থানীয় মুদ্রার ব্যাপক অবমূল্যায়ন হয়েছে এবং মুদ্রাস্ফীতি অনেক বেড়েছে।
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জিওর্জিভা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের নিকট-ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভালো কোনো স্বপ্ন দেখাতে পারছে না। ২০২৩ সালে জিডিপি ৩ দশমিক ২ শতাংশ কমতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আবার ২০২৪-এ বাড়বে সামান্যই।
সূত্র: ফ্রান্সনিউজ২৪