ওমের বলেন, ‘সকাল ১১টা, পরে দুপুরেও তো ওকে আমি ফোনে পাচ্ছিলাম। এরপর থেকে নম্বর বন্ধ পাচ্ছি। ওদের কাউকে পাচ্ছি না। ও এখানেই আছে। হয়তো তার ফোনের ব্যাটারির চার্জ চলে গেছে।’
ভোর থেকে ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকা পড়া ওমের এল কুনেদের বান্ধবী ও তার পরিবারের সদস্যরা এখন কেমন আছেন, কেউ তা জানে না। দুপুর পর্যন্তও ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল, তবে এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় যোগাযোগের নম্বরটি।
তুরস্কের সানলিউরফা শহরের এক ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে যুবক ওমের বিষণ্ন হয়ে তার বান্ধবী ও তাদের স্বজনদের খবরের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।
গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, ‘এই ধ্বংসস্তূপের নিচে একটি পরিবার আছে, আমি জানি।’
বান্ধবী ও তার পরিবারের সদস্যরা হয়তো বেঁচে ফিরবেন, উদ্ধারকর্মীরা তাদের বের করে আনবেন চূর্ণবিচূর্ণ হওয়া এই ভবন থেকে- এ আশায় কয়েক ঘণ্টা সময় কেটে গেছে তার।
ওমের বলেন, ‘সকাল ১১টা, পরে দুপুরেও তো ওকে আমি ফোনে পাচ্ছিলাম। এরপর থেকে নম্বর বন্ধ পাচ্ছি। ওদের কাউকে পাচ্ছি না। ও এখানেই আছে। হয়তো তার ফোনের ব্যাটারির চার্জ চলে গেছে।’
যেখানে ওমের দাঁড়িয়ে ছিলেন তার পাশেই ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ ও জীবিতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছিল অসংখ্য গাড়ি। বিপর্যস্ত এক পরিবারকে বৃষ্টির মধ্যে হেঁটে আশ্রয় খুঁজতে দেখা গেল।
শুধু ওমের না, এমন আরও বহু মানুষ অপেক্ষায় আছেন তাদের স্বজনদের। কেউ হারিয়েছেন স্বজন, কেউ বা বন্ধুবান্ধব। অবশ্য জীবিতও উদ্ধার হয়েছেন অনেকে।
স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয় সিরিয়া সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে, যার উৎপত্তিস্থল কাহরামানমারাস প্রদেশের পাজারসিক জেলায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) সংস্থার তথ্যমতে, প্রথমে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এরপর অন্তত ১০০ বার কেঁপে ওঠে (আফটার শক) এ দুই দেশ।
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল সোমবার দুপুর দেড়াটার দিকে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পটি। এর উৎপত্তিস্থল ছিল তুর্কির কাহরামানমারাস শহর।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ৪ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছে বিবিসি, সিএনএন ও রয়টার্সের মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
এরই মধ্যে বিশ্বের ৬৫টি দেশ থেকে আর্থিকসহ নানা ধরনের সহায়তা পাঠানো হয়েছে তুরস্কে। উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন ১৩ হাজারের বেশি কর্মী।
বৃষ্টি, অতি ঠান্ডা এবং তুষারপাতের কারণে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। অনেক মানুষকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।