দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হয়েছে সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এটি সে দেশে কিছুটা ‘বিরল’ তো বটেই, পদ্ধতিতেও আর দশটি গতানুগতিক নির্বাচনের চেয়ে আলাদা।
গোটা দেশ থেকে মাত্র ৩২৯ জন ভোট দেন সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। এছাড়া ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় ব্যাপকভাবে সুরক্ষিত একটি স্থানে।
গতকাল রবিবারই এবারের ভোট হয়েছে। সেই ভোটে হাসান শেখ মাহমুদ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।
ব্যতিক্রমধর্মী এ নির্বাচনীপ্রক্রিয়ায় মূলত সোমালিয়ার নিরাপত্তাগত সমস্যা ও দেশটির গণতান্ত্রিক গ্রহণযোগ্যতার অনুপস্থিতি উঠে এসেছে।
সব মিলিয়ে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৩৬ জন। তাঁদের মধ্যে বিজয়ীকে লড়তে হয়েছে দেশে বিরাজমান খরা পরিস্থিতির সঙ্গে। তাঁর আরেকটি বড় কাজ হবে জঙ্গিগোষ্ঠী আল শাবাবের প্রভাব খর্ব করা। আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত উগ্র ইসলামপন্থী এ সংগঠন দেশটির বড় অংশজুড়ে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছে। রাজধানী মোগাদিসু ও অন্যান্য এলাকায় প্রায়ই আক্রমণ চালিয়ে আসছে তারা।
সোমালিয়ায় ‘এক ব্যক্তি এক ভোট’ ধরনের গণতান্ত্রিক নির্বাচন ১৯৬৯ সালের পর আর হয়নি। সেবারের ওই ভোটের পর অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এসেছিল স্বৈরশাসন। দেখা দিয়েছিল গোষ্ঠীভিত্তিক মিলিশিয়া বাহিনী ও ইসলামী উগ্রবাদীদের মধ্যে সংঘর্ষ। এ অস্থিরতা সোমালিয়ায় প্রত্যক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে না পারার অন্যতম কারণ।
সোমালিয়া এবার তৃতীয়বারের মতো নিজ দেশের মাটিতে পরোক্ষভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে। এর আগের দুটি নির্বাচন প্রতিবেশী রাষ্ট্র কেনিয়া ও জিবুতিতে হয়েছিল।
যেভাবে হওয়ার কথা নির্বাচন
সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ আবদুল্লাহি ‘ফারমাজো’র চার বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে রাজনৈতিক মতপার্থক্য ও অস্থিরতার কারণে নির্বাচন পিছিয়ে যায় এবং ফারমাজো ক্ষমতায় থেকে যান। তিনি এবারের নির্বাচনেরও প্রার্থী ছিলেন।
রবিবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটার ছিলেন মূলত এমপিরা। তাঁরা নিজেরা আবার নির্বাচিত হয়েছেন দেশের প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলোর মনোনীত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণের স্থান নির্ধারিত হয়েছিল সুরক্ষিত হালানে ক্যাম্প বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গার। ভোটগ্রহণ হয়েছে গোপন ব্যালটে।
আপনার মন্তব্য লিখুন