পুলিশ বাহিনীতে ফ্যাসিবাদের দোসররা ২০০৯ সালের পর থেকে প্রায় ১৬ বছর নিয়মিত পদোন্নতি, গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টিং, পিপিএম, বিপিএম পদকসহ সব ধরনের সুবিধা নিয়েছেন। কারো কারো বিরুদ্ধে রয়েছে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নারীঘটিত অভিযোগ। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী অনেক পুলিশ কর্মকর্তা এখনো বহাল তবিয়তে। কেউ কেউ পেয়েছেন আগের মতোই ভালো জায়গায় পোস্টিং।
নিজেকে বঞ্চিত দাবি করে একাধিক প্রমোশন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টিং নিয়েছেন কেউ কেউ। এই তালিকায় থাকা কর্মকর্তারা অনিয়ম, দুর্নীতি ও নারীঘটিত কারণে প্রমোশন পাচ্ছিলেন না। পটপরিবর্তনের পর এভাবে ফ্যাসিবাদের দোসররা গুরুত্বপূর্ণ পোস্টিংসহ বিতর্কিত কর্মকর্তাদের দাপটের কারণে দীর্ঘদিনের সত্যিকারের বঞ্চিত ও মেধাবী কর্মকর্তাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
ধারাবাহিকভাবে সুবিধাভোগী
শেখ হাসিনা সরকারের বিশেষ সুবিধাভোগী পুলিশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত আইজিপি আবু হাসান মুহম্মদ তারিক। ১৯৯১ সালের বিশেষ বিসিএস-এর এই কর্মকর্তা সাবেক আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন (জুলাই-আগস্টের গণহত্যা মামলায় কারাগারে) ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসেবে আলোচিত সাবেক অতিরিক্ত আইজি আতিকুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ। শেখ হাসিনার শাসনকালে দীর্ঘদিন পুলিশ সদর দপ্তরে ছিলেন আবু হাসান মুহাম্মদ তারিক। জুলাই বিপ্লবে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও হয়েছে। এই কর্মকর্তা বর্তমানে পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর হিসেবে কর্মরত।
পুলিশ কর্মকর্তা ১৫তম বিসিএস-এর কুসুম দেওয়ান। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক অপারেশনস হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে সুপারনিউমারারি (পদ খালি না থাকার পরও সৃষ্ট পদ) অতিরিক্ত আইজি পদে পদোন্নতি পান। সাধারণত শেখ হাসিনা সরকারের আস্থাভাজন না হলে সুপারনিউমারি প্রমোশন দেওয়া হতো না। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর যে কর্মকর্তার চাকরি থাকাটাই একটি বিস্ময়, সেখানে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সুপারনিউমারারি পদকে স্থায়ী করে নৌ-পুলিশের প্রধান (অতিরিক্ত আইজি) হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে যান। উপজাতীয় কোটায় চাকরি পাওয়া এই কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নিজেকে মুজিববাদী বলে পরিচয় দিয়ে সব পদোন্নতি ও সুবিধা বাগিয়ে নেন.
আরেক বিস্ময়ের নাম মিজানুর রহমান। ১৮তম বিসিএস-এর এই কর্মকর্তা ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় গোপালগঞ্জ জেলার এসপি ছিলেন। এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসপি হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসপি থাকাকালীন ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর রসরাজ দাস নামে এক হিন্দু জেলের ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে নাসিরনগর থানার হরিপুর গ্রামের জেলে পল্লিতে হামলা হয়। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর তিনি বিস্ময়করভাবে ডিআইজি পদে পদোন্নতি পান। বর্তমানে তিনি নৌপুলিশ সদর দপ্তরে ডিআইজি হিসেবে কর্মরত।
২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা নাজির আহমেদ খান, সাবেক সরকারের সময়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘদিন ডিএমপির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। ফ্যাসিবাদী আমলের বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছিল নিবিড় সম্পর্ক। বিশেষ করে শেখ হাসিনার গুম, খুনের অন্যতম সহযোগী ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ডিএমপিতে লালবাগ জোনের এডিসি ছিলেন। ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রথম দফায় এসপি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে হাসিনা সরকারের সময়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে (জিএমপি) ডিসি দক্ষিণ (ক্রাইম) পোস্টিং পান।
জুলাই আন্দোলনের সময় জিএমপির বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৬টি মামলা হয়েছে। ঢাকার পর মূলত গাজীপুরে বেশি হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। সে সময় বেশ কয়েকটি লাশ হাসপাতাল থেকে গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ক্ষেত্রে জিএমপির তৎকালীন কমিশনার মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা নাজির আহমেদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় সাংবাদিক ও একাধিক সূত্র। এসব হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা থেকে পরিত্রাণ পেতে কুমিল্লার এসপি নাজির আহমেদ খান বর্তমান পদবী ও উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে তদন্ত কাজে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ৫ আগস্টের পর খোলস বদলে আওয়ামী বিরোধী হিসেবে জাহির করে গুরুত্বপূর্ণ কুমিল্লা জেলার এসপি হিসেবে পোস্টিং পেয়ে যান। এক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগের কথাও আলোচনা হচ্ছে। ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়।
ডিআইজি শ্যামল কুমার নাথের বিরুদ্ধে কক্সবাজারে এসপি থাকাকালীন সময়ে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও ইয়াবা চোরাকারবারীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার ব্যাপক অভিযোগ ওঠে। কিন্তু হাসিনার বিশ্বস্ত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ হেডকোয়ার্টার সে সময় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমনকি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও সমীহ করতেন পুলিশ কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথকে। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে কর্মরত।
শেখ হাসিনার গুম, খুন ও জঙ্গি নাটক চক্রের অন্যতম কুশিলব ইন্সপেক্টর মাহমুদুল হাসান জুয়েল। সাবেক এডিশনাল আইজি মনিরুল ইসলাম, সিটিটিসির আসাদুজ্জামান, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ, সোয়াতের সাবেক দুর্ধর্ষ কিলার এডিশনাল এসপি জাহাঙ্গীর হাসান এবং এই ইন্সপেক্টর মাহমুদুল হাসান জুয়েল চক্রের সক্রিয় সদস্য হিসেবে শেখ হাসিনার শাসনকে প্রলম্বিত করতে সব ধরনের অন্যায় করেছেন।
২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর গাজীপুরে ৭ তরুণকে জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে হত্যা করার মিশনে সরাসরি জড়িত ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। এ ঘটনায় নিহত তরুণ ইব্রাহিমের বাবা আজিম উদ্দিন গত বছরের ২ ডিসেম্বর বাদী হয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মনিরুল ইসলাম, ডিবি হারুন, সোয়াতে জাহাঙ্গীর হাসান ও ইন্সপেক্টর মাহমুদুল হাসান জুয়েলের নাম রয়েছে।
ঘটনার সময় ইন্সপেক্টর জুয়েল গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। ওই ৭ তরুণ হত্যার ঘটনার তদন্ত একাই শেষ করেন ইন্সপেক্টর জুয়েল। আওয়ামী লীগ সরকারের চাহিদামতো স্থানীয় কিছু মানুষকে জোর করে হুমকি-ধমকি দিয়ে সাক্ষী বানিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেন মাহমুদুল হাসান জুয়েল। ট্রাইব্যুনাল সূত্র আমার দেশকে নিশ্চিত করেছে, খুব দ্রুত এই মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার কাজ শুরু হবে।
শুধু তা-ই নয়, হেফাজত ইসলামের নিরীহ হাফেজদের ওপর ২০১৩ সালের ৫ মে চালানো নির্মম হত্যাযজ্ঞে পুলিশ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জুয়েলের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছে তদন্ত সংস্থা। ৫ মে দিনের বেলায় হেফাজত আমির আল্লামা শফি হুজুরকে জোর করে লালবাগ মাদ্রাসা থেকে হেলিকপ্টারে তুলে হাটহাজারি পাঠিয়ে দেওয়ার মূল দায়িত্বে ছিলেন লালবাগ ডিভিশনের তৎকালীন ডিসি হারুন অর রশিদ (ডিবি হারুন) ও পুলিশ কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মাহমুদুল হাসান জুয়েল (তখন সাব ইন্সপেক্টর)। সর্বশেষ ডিবি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডিবি হারুন এই ইন্সপেক্টর জুয়েলকেও ডিবিতে নিয়ে যান। ডিবিতে থাকাবস্থায় বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীসহ নিরীহ মানুষের কাছে এক মূর্তিমান আতঙ্ক ছিলেন ডিবি হারুনের সব অপকর্মের দোসর পুলিশ কর্মকর্তা জুয়েল। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর এই কর্মকর্তাকে ৬ এপিবিএন, মহালছড়ি, খাগড়াছড়িতে বদলি করা হয়। ট্রাইব্যুনালের মামলার কার্যক্রম চলমান থাকা এবং বিস্তর অভিযোগের পরও বিস্ময়করভাবে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) পোস্টিং অর্ডার করিয়ে নেন ঈদুল ফিতরের বন্ধের আগেই।
বিপিএম সেবা পদক পাওয়া ১৮তম বিসিএস কর্মকর্তা হায়দার আলী খান ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় পুলিশ সদর দপ্তরে থেকে ডামি নির্বাচনে কৌশলগত ভূমিকা রাখেন। বর্তমানে তিনি পিটিসি, নোয়াখালীর কমান্ড্যান্ট হিসেবে রয়েছেন। গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা ২২তম বিসিএস কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি তানভীর মমতাজও বিপিএম সেবা পদক পেয়েছেন ২০২৪ সালে। প্রেষণে দায়িত্ব পালন করেন লোভনীয় স্থান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে। পটপরিবর্তনের পরও রয়েছেন বহাল তবিয়তে।
২৫তম ব্যাচের মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও মোহাম্মদ আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তরে নিয়োগ শাখায় থাকাকালে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে পুলিশে নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতেন বলে সে সময় পুলিশ সদর দপ্তরে আলোচনা হতো অহরহ। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পুলিশ পদকসহ ব্যাপক সুবিধাভোগী এই দুই কর্মকর্তা বেশ ফুরফুরে মেজাজে চাকরি করছেন।
পুলিশ পদক পাওয়াসহ ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগী কর্মকর্তা ২৪তম বিসিএসের মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান, মোহাম্মদ আবদুল আজিজ, মো. নাজমুল ইসলাম, মো. মোশাররফ হোসেন পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত। বিপিএম সেবা পদক পাওয়া ২৪তম বিসিএস কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিছুর রহমান ও মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান রয়েছেন এসবিতে। জুলাই বিপ্লবের সময় এসবি প্রধান থাকা শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠ মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে সংস্থাটির ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হলেও এই কর্মকর্তারা রয়েছেন বহাল তবিয়তে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-১ শাখার এসআই ওমর আল ফারুক। সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলার এসপি থাকাকালীন উভয় স্থানে রিজার্ভ অফিসার ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ডিআইজি হারুনের আস্থাভাজন হিসেবে তাকে পুলিশ সদর দপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ শাখায় পদায়ন করা হয়। হারুন পালিয়ে গেলেও রয়ে গেছেন হারুনের অনুচর ওমর আল ফারুক। যা কিনা পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্যতম আলোচনার বিষয়।
৫ আগস্ট পর্যন্ত মতিঝিলের ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা হায়াতুন নবী বিএনপির নেতা-কর্মীর কাছে ছিলেন রীতিমত আতঙ্কের নাম। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার আত্মীয় পুলিশ কর্মকর্তা এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় পুলিশ বিভাগের অনেক কর্মকর্তা হতাশা প্রকাশ করেন। পুলিশ পদকসহ সব ধরনের সুবিধা নেওয়ার পরও এখনো রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
বঞ্চিত দাবি করে প্রমোশন বাগিয়ে নিয়েছেন যারা
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বঞ্চিত দাবি করে ৫ আগস্টের পর প্রমোশন বাগিয়ে নিয়েছেন সুযোগ সন্ধানী বেশকিছু কর্মকর্তা। পর পর দুটি প্রমোশন নিয়ে কেউ কেউ এখন ডিআইজি। জানা যাচ্ছে, তারা দলীয় তকমার কারণে পদবঞ্চিত হননি। দুর্নীতি, অনিয়ম ও অন্যান্য কারণে মূলত পদোন্নতি পাচ্ছিলেন না।
১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা জমসের আলী এপিবিএন খাগড়াছড়ি ব্যাটেলিয়নের কমান্ডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটি দুর্নীতির সত্যতা পায়। এ কারণে তিনি পুলিশ সুপার থেকে আর পদোন্নতি পাননি। সাবেক অতিরিক্ত আইজি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ গোপালগঞ্জের বাসিন্দা হেমায়েত হোসেনকে ম্যানেজ করে সে যাত্রায় বেঁচে যান বর্তমান ডিআইজি জমশের আলী। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর নিজেকে বঞ্চিত দাবি করে দু’দফা পদোন্নতি পেয়ে ডিআইজি হন।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডিআইজি জিল্লুর রহমান বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) উপ-কমিশনার (প্রশাসন) থাকাকালে কনস্টেবল থেকে এএসআই পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিভাগীয় প্রার্থীদের কাছে মোটা অংকের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি জানাজানি হলে তদন্ত কমিটি হয়। বিএমপির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কমিশনার শৈবাল কান্তিকে ম্যানেজ করে জিল্লুর বিষয়টি ধামাচাপা দেন বলে অভিযোগ ওঠে।
আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আরেফ। ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে চাকরি জীবন, সব ক্ষেত্রেই বিতর্কিত। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করা ২০তম ব্যাচের পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ওই কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। বিমানবাহিনীর চাকরি হারান মানসিক অদক্ষতার কারণে। কিন্তু এখন নিজেকে বঞ্চিত দাবি করে পদোন্নতি বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম আমার দেশকে বলেন, স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে যারা ছিলেন, অন্যায়, জুলুমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারপরও যারা জড়িত বলে তথ্য পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মন্তব্য লিখুন