বিএনপিসহ সমমনাদের ডাকা ১১ তম ধাপের ৩৬ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে মিছিলটি রাজধানীর কমলাপুর আইসিডি থেকে শুরু হয়ে টিটিপাড়া রেললাইনে কিছু সময় অবস্থান করে সাদেক হোসেন কমিউনিটি সেন্টার হয়ে মতিঝিলের মধুমিতা সিনেমার হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য, ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
মিছিল থেকে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, নির্বাচনের তফসিল বাতিল এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ সময় কয়েকটি গাড়িও ভাংচুর করে তারা।
মিছিলে অংশ নেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা সাগর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাবেক সদস্য ওভি আজাদ চৌধুরী নাহিদ, ছাত্রদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ন আহ্বায়ক আব্দুর রহিম ভুইয়াসহ ওয়ারী ও গেন্ডারিয়া থানা যুবদল এবং ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা।
আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, ইসি শেষ পেরেক ঠুকছে
আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে আর ইসি তাতে শেষ পেরেক ঠুকতে চাচ্ছে’— এমনটিই মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপিসহ সমমনাদের ডাকা ১১ ম ধাপের ৩৬ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে আয়োজিত মিছিলে নেতৃত্ব দেন রিজভী।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে মিছিলটি রাজধানীর মতিঝিলে আরামবাগ মোড় থেকে শুরু হয়ে নটরডেম কলেজের সামনের সড়ক ঘুরে কালভার্ট রোডে গিয়ে শেষ হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অবৈধ নির্বাচন কমিশনাররা ইসিকে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনে পরিণত করেছে। তাদের ভাবখানা দেখে মনে হচ্ছে- তারা গোটা দেশের মালিক হয়ে গেছে। এখন তারা দেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকারেও হস্তক্ষেপ করতে চাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে নানা ফরমুলা বের করার অপচেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশন। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে আর ইসি তাতে শেষ পেরেক ঠুকতে চাচ্ছে। কিন্তু, এতে কোনো লাভ হবে না। কোনো পরিপত্র জারি করে জনগণের আন্দোলন দমানো যাবে না, অবৈধ সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না। এবার জনগণ বিজয় নিশ্চিত করেই ঘর ফিরবে।’
রিজভী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের জনগণ ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব বলছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এটা তো জনগণের ন্যায্য দাবি। সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা এত বড় বড় কথা বলেন কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা শুনলে তারা আতঙ্কিত হয়ে যান। তারা রাষ্ট্র শক্তি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করছে। যাতে কেউ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি না জানায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দায়ের করে গ্রেফতার ও হয়রানি অব্যাহত রেখেছে। তবু আমাদের নেতা-কর্মীরা দাবি আদায়ে রাজপথে বুক চিতিয়ে যেভাবে চলমান কর্মসূচি সফল করছেন তা বীরোচিত।’
মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, মৎস্যজীবী দল কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মো. আবদুর রহিম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক ওমর ফারুক পাটোয়ার, মো. শাহ আলম, কেন্দ্রীয় সদস্য ইব্রাহিম চৌধুরী, হাজী আনোয়ার হোসেন, হাজী আবু বকর সিদ্দীক, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মো. বাকিবিল্লা ও দক্ষিণের সদস্য সচিব কেএম সোহেল রানা, নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি এইচ এম হোসেন ও মহানগর দক্ষিণের নেতা শাহাদত হোসেনসহ অনেকে।
মিছিলে অংশ বিএনপির নেওয়া নেতা-কর্মীরা সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
আপনার মন্তব্য লিখুন