মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌর শহরের বাসিন্দা শিউলি বেগম। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) কিছু তথ্যে অসংগতি ছিল। এটা তিনি সংশোধনের আবেদন করেছিলেন। ২৯ জুলাই তিনি এনআইডি ডাউনলোড করে দেখেন, তাঁর জন্মস্থান ভেনিজুয়েলা।
সংশোধন করতে গিয়ে এনআইডি নিয়ে আরো বিড়ম্বনায় পড়েন শিউলি। তিনি বলেন, ‘সব ডকুমেন্ট দিয়ে আবেদন জমা দিয়েও অনেক দিন নির্বাচন অফিসে ঘুরতে হয়েছে। অবশেষে সংশোধনের মেসেজ পেয়ে ২৯ জুলাই এনআইডি ডাউনলোড করে দেখি, আমার জন্মস্থান ভেনিজুয়েলা। এখন এই কার্ড তো কোনো কাজে লাগবে না। বড় সমস্যায় পড়েছি।
শিউলির মতো বড়লেখা উপজেলার অন্তত ১২ জনের এনআইডিতে জন্মস্থান ভেনিজুয়েলা। একই অবস্থা মৌলভীবাজার শহরের অনেক বাসিন্দার। এনআইডিতে তাঁদেরও জন্মস্থান ভেনিজুয়েলা। সবার এনআইডি শিগগিরই সংশোধন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন।
কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একাডেমিক সনদ, পাসপোর্ট, জন্ম নিবন্ধন কিংবা মা-বাবার কাগজপত্রের সঙ্গে তথ্যগত অমিলের কারণে অনেকেই এনআইডির তথ্য সংশোধনের জন্য স্থানীয় নির্বাচন কার্যালয়ে আবেদন করেন। দিনের পর দিন ধরনা দিয়ে অনেক ভোগান্তির পর সংশোধন সম্পন্ন হওয়ার মেসেজ পেয়ে নির্বাচন কমিশনের সার্ভার থেকে এনআইডি ডাউনলোড করে বিপাকে পড়ছেন তাঁরা। এনআইডিতে কারো কারো জন্মস্থান ভেনিজুয়েলা লেখা থাকায় নতুন করে বিড়ম্বনায় পড়ছেন তাঁরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বড়লেখার বর্ণি ইউনিয়নের একজন অভিযোগ করেন, ‘প্রায় দুই মাস আগে সংশোধনের আবেদন করি। এরপর উপজেলা নির্বাচন অফিসে কত দিন যে গেছি তার হিসাব নেই। অনেক দূর থেকে গিয়েও শোনা যায় অফিসার নেই। নানা হয়রানির শিকার হয়ে অবশেষে আবেদন মঞ্জুরের মেসেজ পেয়ে শনিবার দুপুরে এনআইডি ডাউনলোড করে দেখি, আমার জন্ম ভেনিজুয়েলায়। জরুরি পাসপোর্ট করার জন্য এনআইডি সংশোধন করেছিলাম। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে এনআইডিতে ভেনিজুয়েলা লেখা থাকায় দুশ্চিন্তায় আছি। এখন আর পাসপোর্ট করা হচ্ছে না। ’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম সাদিকুর রহমান জানান, বিষয়টি অনেকেই তাঁকে জানিয়েছেন। তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। আশা করছেন, দ্রুত তা সমাধান হয়ে যাবে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘মৌলভীবাজার শহরে আমি এ পর্যন্ত যে কজন ভুক্তভোগী পেয়েছি, তাঁদের সবার এনআইডিতে জন্মস্থান ভেনিজুয়েলা লেখা। সার্ভারের সমস্যা থেকে এটি হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ’
তিনি আরো বলেন, বড়লেখা উপজেলাতেও একই অবস্থা। কত এনআইডিতে ভুল আছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এ ধরনের পরিসংখ্যান নেই। কী পরিমাণ প্রিন্ট হয়েছে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে। তবে দ্রুতই সমস্যা সমাধান করা হবে। ’
আপনার মন্তব্য লিখুন