বৃহস্পতিবার (২৬ মে) শেষ হয়েছে জনি ডেপ আর অ্যাম্বার হার্ডের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। পুরো বিশ্ব এখন চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায়। এই রায়ের ওপর নির্ভর করছে জনি-অ্যাম্বারের হলিউড ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ। সিএনএন
সাত সপ্তাহ ধরে চলা এই সাক্ষ্যগ্রহনে আদালতের ১০০ ঘণ্টার বেশি সময় ব্যয় হয়েছে। মানহানির অভিযোগ দিয়ে শুরু এই শুনানিতে দুই তারকার দাম্পত্যের তিক্ততা সম্পর্কে জানতে পারে গোটা বিশ্ব। এমন অনেক বিষয় উঠে আসে যা চমকে দিয়েছে ভক্তদের।
মামলার শুরু থেকেই সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনদের অধিকাংশ জনি ডেপকেই সমর্থন করছে। বিশেষ করে জনিতে দোষী প্রমাণ করার জন্য অ্যাম্বারের প্রকাশ করা একটি ভিডিও মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। সেই ভিডিও অ্যাম্বারের দিকেই তীর ছুড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে তার আচরণ নিয়ে।
সিএনএন-এর তরফ থেকে বেশ কয়েকজন হলিউড ইন্ডাস্ট্রি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে অ্যাম্বার-জনির ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তাদের প্রায় সবাই মনে করছেন, মামলায় যিনি হারবেন, হলিউড ক্যারিয়ারও হারাতে হবে তাকে। বিশেষজ্ঞদের একজন বলেছেন, ‘জনি ডেপ বিষয়টি নিয়ে দাঁড়ানোর আগে বুঝতে পারছিলাম না কী হতে চলেছে। এখন বোঝা যাচ্ছে যে এই বিষয়টি তার পাবলিক ইমেজ ফিরিয়ে এনেছে।’
আরেক ইন্ডাস্ট্রি বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ‘দুজনের একজনও কোনো কাজের উপযুক্ত নন। অর্থ বিষাক্ত এবং লোভ ধ্বংস করে। এখানে কেউ জিতবে না।’
অ্যাম্বারের মতে, জনি তাকে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে নির্যাতন করেছেন। শুধু তাই নয়, যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার দাবীও করেছেন অভিনেত্রী। ডেপ দাবি করেছেন, তিনি কখনই কোনো নারীর গায়ে হাত তোলেননি। হার্ডের সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন অভিনেতা।
জনি ডেপের টিম বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগ করছে যে অ্যাম্বারের মিথ্যা অভিযোগের কারণেই ‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান’ ফ্র্যাঞ্চাইজি হারাতে হয়েছে অভিনেতাকে। এদিকে ‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান’-এর প্রযোজক জেরি ব্রুকহেইমার বলেছেন, ‘ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু বলা আয় না। দুটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করা হচ্ছে।
একটিতে মার্গট রবি থাকবেন। আরেকটিতে থাকবেন না।’ অর্থাৎ, যেটিতে মার্গট রবি থাকছেন না, সেটির ক্ষেত্রে জনি ডেপকে নেয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। তাই মামলায় জনি ডেপ জিতে গেলে হয়তো ‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান’-এ আবারও দেখা যাবে তাকে ‘জ্যাক স্প্যারো’ রূপে।
এদিকে ‘অ্যাকুয়াম্যান টু’ থেকে বাদ পড়েছেন অ্যাম্বার। ‘অ্যাকুয়াম্যান ২’ অভিনেতা জেসন মোমোয়ার সঙ্গে অভিনেত্রীর রসায়ন ভালো নয়, এ অভিযোগে বাদ দেয়া হয়েছে তাকে। এতে ২০ লাখ ডলার ক্ষতি হলো অ্যাম্বারের। তার ক্যারিয়ার জনি ডেপের মতো প্রতিষ্ঠিতও নয়। তার মাঝেই এই আইনি লড়াইতে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে অ্যাম্বারের। এতে ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়েছে অভিনেত্রীর। তবে মামলায় জিতে গেলে হয়তো ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরতে পারে অ্যাম্বারের।
২০১৫ সালে ঘর বেঁধেছিলেন জনি-অ্যাম্বার। বিয়ের মাত্র দুই বছরের মাথায় ২০১৭ সালে জনি ডেপের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় অ্যাম্বার হার্ডের। ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন পোস্টে জনি ডেপের বিরুদ্ধে পারিবারিক সহিংসতার অভিযোগ তোলেন অ্যাম্বার। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অ্যাম্বারের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানহানি মামলা করেন ডেপ। এরপর ১০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে পাল্টা মামলা করেন অ্যাম্বার।
আপনার মন্তব্য লিখুন