পাকিস্তান পার্লামেন্ট নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার বাতিল করেছে । বৃহস্পতিবার নির্বাচন সংশোধনী-২০২২ নামের বিলটি পাশ করেছেন সংসদ সদস্যরা। এ সংশোধনীর ফলে দেশের বাইরে থাকা পাকিস্তানিরাও নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার হারিয়েছেন। এদিকে বুধবারের লংমার্চকে ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থানের শঙ্কার কথা জানিয়েছে পাকিস্তানের শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ডন।
খবরে বলা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে বিলটি উত্থাপন করেন পার্লামেন্টারি এফেয়ার্স মন্ত্রী মুরতাজা জাভেদ আব্বাসি। এই বিলটিকে ‘ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে উলেখ করেন আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার। তিনি বলেন, সাবেক পিটিআই সরকার ২০১৭ সালের নির্বাচনি আইনে বেশ কিছু সংশোধনী আনে। এরমধ্যে ছিল ইভিএম এবং বিদেশি পাকিস্তানিদের ভোট দেওয়ার সুযোগ। ২০২১ সালের নভেম্বরে জাতীয় পরিষদে এই বিল পাশ করে পিটিআই সরকার। সে সময় তৎকালীন বিরোধীরা এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করেছিল।
ডনের সম্পাদকীয়তে বলা হয়, আগাম নির্বাচনের দাবিতে রাজধানী ইসলামাবাদে আন্দোলন-বিক্ষোভে মুখর ইমরানের দল। এতে ব্যাপক পুলিশি ধরপাকড়ের মুখে পড়তে হয়েছে তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থকদের। লংমার্চ নিয়ে ছাড় দিতে নারাজ বর্তমান সরকার। এ অবস্থায় সরকার ও পিটিআইয়ের ক্ষমতার লড়াই দেশটিতে এক তিক্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
বলা হচ্ছে, দেশটির অস্থিতিশীল রাজনীতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে। নিয়ন্ত্রণহীন এই অস্থিরতার জন্য দুপক্ষই সমানভাবে দায়ী। এ কারণেই পাকিস্তানে অগণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর হস্তক্ষেপের পথ সুগম হচ্ছে। গত এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান। তারপর থেকেই নতুন নির্বাচনের দাবিতে তার সমর্থকরা নানা সময়ে মিছিল-সমাবেশ করেছেন। পাকিস্তানে ভীতি ছড়ানোর কৌশল অতীতে কাজে আসেনি।
বিশ্লেষণে বলা হয়, ইসলামাবাদমুখী লংমার্চের আগে ইমরানের দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গণগ্রেপ্তারে সরকারি সংস্থাগুলোকে ব্যবহারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত কেবল রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতিই ঘটাবে। সহিংসতা ছড়িয়ে দিয়ে পিটিআইয়ের পুনর্জাগরণ ঠেকিয়ে মাঠ দখলে নেওয়া সহজ হবে না। তবে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ইমরানের কর্মসূচিতে কেনো বাধা দিচ্ছে তা বোঝা যাচ্ছে না।
খবর অনুসারে পিএমএল-এন বলছে, আগাম নির্বাচন হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত ইমরান খানের নির্দেশনা অনুসারে নেওয়া হবে না। পিটিআইয়ের বিক্ষোভ দমনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহকে পরিপূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা পেয়েই গত সোমবার থেকেই পুলিশ বাহিনীকে পিটিআইয়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা ও তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন তিনি। তবে পুলিশের পদক্ষেপের ভিডিও ও ছবিতে ব্যাপক নিন্দা এবং ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
আপনার মন্তব্য লিখুন