রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৫০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে অবস্থান নেয় পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে আন্দোলনকারীদের দিকে রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। রামপুরা ব্রিজ থেকে বাড্ডার ইউলুপ পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
ঘটনাস্থল থেকে মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার জানান, রামপুরা-বাড্ডায় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছে। টিয়ার সেল ছুড়ছে পুলিশ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারাও যোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার পরে সেখানে অবস্থান নেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে।
পরে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে সেখানে অবস্থান নেয়। বাইরে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নিয়েছে।
সেখানে বেশ কয়েকটি দোকানপাট, স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সারা দেশে আজ বৃহস্পতিবার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
ঢাকা-চট্টগ্রাম যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করছেন আন্দোলনকারীরা। এতে মহাসড়কটিতে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সেখানে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কারণে কোনো যানবাহন ঢাকা থেকে বের হতে পারছে না। আবার কোনো যানবাহন ঢুকতেও পারছে না। এমনকি রিকশা, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলও যেতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে অনেক গাড়ি আটকা পড়েছে। এর মধ্যে পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্যা বেশি। পাশাপাশি দূরপাল্লার বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশাও রয়েছে।
এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায়-দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কাজলা থেকে শনিরআখড়া পর্যন্ত এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সকাল ১০টার দিকে শনিরআখড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা এই মহাসড়কটি অবরোধ করে রাখে। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় টায়ার ও কাঠ জ্বালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। পরে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন দেয়া হয়।
এছাড়া সংঘর্ষের সময় শর্টগানের গুলিতে শিশুসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন এবং সিয়াম নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহতরা জানান, সন্ধ্যায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় এলোপাতাড়ি গুলিতে তারা আহত হন। তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাদের স্থানান্তর করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
আপনার মন্তব্য লিখুন