ঢাকায় নতুন মিশন চালু করতে যাচ্ছে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন। এ লক্ষ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করার তথ্য জানালো সরকার। এর আগে ওএইচসিএইচআর এর পক্ষ থেকে এ খবর জানানো হয়।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। এছাড়া, শনিবার দুপুরে প্রেস উইংয়ের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ঘটে যাওয়া গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রেক্ষিতে জবাবদিহিতা ও সংস্কারের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই মিশনের উদ্দেশ্য হলো সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সিভিল সোসাইটি সংগঠনগুলোর জন্য প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান। এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিশ্রুতি পূরণে আইনি সহায়তা, সক্ষমতা বৃদ্ধি, এবং প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণে সহায়তা করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রেক্ষিতে এই উদ্যোগটি আমাদের সংস্কার ও জবাবদিহিতার প্রতি অব্যাহত অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভাবধারাগত অবস্থান নিয়ে নাগরিকদের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যে গড়ে উঠা সমাজ। নাগরিকদের পক্ষ থেকে আমরা যে বার্তাটি পেয়েছি তা হলো, যেকোনো আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব যেন দেশের মূল্যবোধকে সম্মান করে। সে কারণে, ওএইচসিএইচআর এর এই মিশন পূর্ববর্তী সরকারের সময় সংঘটিত অপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিতসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় কাজ করবে।
দেশের প্রচলিত আইন, সমাজ ও সংস্কৃতির কোনো সামাজিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে এই মিশন ব্যবহৃত হবে না এমন মন্তব্য করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই মিশন সর্বদা স্বচ্ছতা বজায় রাখবে এবং স্থানীয় অংশীজনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় কাজ করবে। জাতিসংঘ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বাস্তবতার প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
বাংলাদেশ সরকার এই চুক্তি থেকে সরে আসার সার্বভৌম ক্ষমতা রয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার যদি মনে করে এই মিশন জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় তবে সরকার এই এই চুক্তি থেকে সরে আসার সার্বভৌম ক্ষমতা তার হাতে ন্যস্ত থাকবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এ ধরনের একটি দপ্তর বিদ্যমান থাকলে, বিনাবিচারে হত্যাকাণ্ড ও গণহত্যা যথাযথভাবে তদন্ত, নথিভুক্ত ও বিচারের আওতায় আনা যেত। আমাদের মানবাধিকার রক্ষার অঙ্গীকার আদর্শিক নয়, এটি ন্যায়ের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সরকার মনে করে, আমাদের মূল্যবোধ ও আইন দ্বারা পরিচালিত এবং আমাদের জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক থেকে এই মিশন আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো শক্তিশালী করবে এবং আমাদের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে সহায়তা করবে।