মানুষ প্রতিদিন যেসব কাজ করে, সেগুলোর প্রতিদান অবশ্যই পাবে। ভালো কাজ করলে ভালো প্রতিদান পাবে এবং মন্দ কাজ করলে মন্দ পরিণতি ভোগ করতে হবে। মানুষকে ভালো প্রতিদান কিংবা মন্দ প্রতিফল প্রদান করা হবে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে। মানুষের প্রতিটি কর্মের সাক্ষ্য প্রস্তুত আছে।
সেসব সাক্ষ্য মানুষের পক্ষে বা বিপক্ষে দাঁড়াবে। কিয়ামত দিবসে যা মানুষের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে, তা হলো এমন সাত সাক্ষী, যা অস্বীকার করার কোনো উপায় ও সুযোগ থাকবে না। নিম্নে সে সাত সাক্ষী নিয়ে কোরআন-সুন্নাহর আলোকে আলোচনা তুলে ধরা হলো—
১. স্থান বা জায়গা : শয়তানের ধোঁকায়, নফসের প্ররোচনায়, পরিবেশের তাড়নায় কমবেশি সবাই গুনাহ করে থাকে, তো এই গুনাহ যে স্থান বা জায়গায় করা হয়, কাল কিয়ামতের বিভীষিকাময় দিনে জমিনের ওই অংশ আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। পবিত্র কোরআন ইরশাদ হয়েছে, ‘সেদিন পৃথিবীর তার যাবতীয় সংবাদ জানিয়ে দেবে।’ (সুরা : জিলজাল, আয়াত : ৪)
বোঝা গেল, ভূমিতে মানুষ যত ভালো বা মন্দ কাজ করে, সেদিন জমিন সে সম্পর্কে আল্লাহর দরবারে সাক্ষ্য দেবে।
২. জিহ্বা : মহান আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি মানুষের এক ক্ষুদ্রাকায় অঙ্গ হলো জিহ্বা। জিহ্বা আকারে ছোট হলেও এর প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া অনেক বড়। এই জিহ্বার মাধ্যমে মানুষ তার মনের ভাব, অভিব্যক্তি ও কামনা-বাসনা আদান-প্রদান করে থাকে।
ভাব প্রকাশের এই মাধ্যমটিকে সত্য-সঠিক ও কল্যাণকর ক্ষেত্রে ব্যবহার করাই যুক্তিযুক্ত। এর বিপরীতে অনর্থক ও অপ্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে জিহ্বা ব্যবহার করা মারাত্মকতম গুনাহ। রাসুল (সা.) বলেছেন, যেকোনো ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অনর্থক কথা ত্যাগ করা। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৭)
এই জিহ্বার মাধ্যমে মানুষ যেসব গুনাহ করে থাকে, কাল কিয়ামতের ময়দানে জিহ্বা তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। পবিত্র কোরআনের ইরশাদ হয়েছে, ‘যেদিন তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে তাদের বিরুদ্ধে তাদের জিহ্বা, হাত ও তাদের পা সাক্ষ্য দেবে।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ২৪)
৩. শরীরের অন্যান্য অঙ্গ : শরীরের মধ্যে আরো যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আছে, নির্দিষ্ট ওই অঙ্গ দ্বারা যে গুনাহ করা হয়েছে, শরীরের ওই অঙ্গ কাল কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহর দরবারে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আজ আমি তাদের মুখে মোহর লাগিয়ে দেব। ফলে তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে, এবং তাদের পা সাক্ষ্য দেবে তাদের কৃতকর্মের।’ (সুরা : ইয়াসিন, আয়াত : ৫৫)
উপরিউক্ত আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, মানুষ যখন তার কৃতকর্মের কথা অস্বীকার করবে, তখন আল্লাহ তাআলা তাদের হাত-পাকে বাকশক্তি দান করবেন, তখন শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো তাদের দ্বারা কৃতগুনাহের কথা সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে।
৪. দুই ফেরেশতা : মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ভালো-মন্দ, নেককাজ ও বদকাজ লেখার জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সম্মানিত লিপিকর দুইজন ফেরেশতা প্রত্যেক মানুষের জন্য নিয়োজিত আছেন। তাঁরা মানুষের কৃত সব কাজ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে লিপিবদ্ধ করে রাখেন। তাঁরাই কাল কিয়ামতের দিনে গুনাহগার ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আল্লাহর সামনে সাক্ষ্য দেবেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অথচ তোমাদের জন্য কিছু তত্ত্বাবধায়ক (ফেরেশতা) নিযুক্ত আছে, সম্মানিত লিপিকরবৃন্দ, যারা জানে তোমরা যা করো।’ (সুরা : ইনফিতার, আয়াত : ১১-১২)
৫. মানুষের আমলনামা : কিয়ামতের ময়দানে মানুষের আমলনামা তার কৃত গুনাহের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেবে। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমলনামা সামনে রেখে দেওয়া হবে। তখন তুমি অপরাধীদের দেখবে, তাতে যা (লেখা) আছে, তার কারণে তারা আতঙ্কিত এবং তারা বলেছে, হায়! আমাদের দুর্ভোগ! এটা কেমন কিতাব, ছোট-বড় যত কর্ম আছে সবই পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব করে রেখেছে, তারা তাদের সব কৃতকর্ম সামনে উপস্থিত পাবে, তোমার প্রতিপালক কারো প্রতি কোনো জুলুম করবেন না।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ৪৯)
৬. নবী মুহাম্মদ (সা.) : নবী মুহাম্মদ (সা.) কাল কিয়ামতের উম্মতের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন। হাদিসে বর্ণিত আছে, প্রতি জুমার রাতে সব নবী ও আম্বিয়াদের কাছে তাদের জাতির এবং পিতা-মাতার কবরে তাদের সন্তানদের আমল দেখানো হয়। (কানজুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল, হাদিস : ৪৫৪৯৩)
এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং (তারা ভেবে দেখুক) সেই দিন (তাদের অবস্থা) কেমন হবে, যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং (হে নবী), আমি তোমাকে ওই সব লোকের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব?’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৪১)
উপরিউক্ত আয়াত দ্বারা বোঝা গেল, কিয়ামতের দিন প্রত্যেক নবী-রাসুলরা নিজ নিজ উম্মতের ভালো-মন্দ কর্ম সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবেন। সেই ধারায় মহানবী (সা.)-কে তাঁর নিজ উম্মত সম্পর্কে সাক্ষীরূপে পেশ করা হবে।
৭. আল্লাহ তাআলা : স্বয়ং আল্লাহ তাআলা বান্দার ভালো-মন্দ কর্ম সম্পর্কে কাল কিয়ামতের ময়দানে সাক্ষ্য দেবেন। আল্লাহ বলেন, আমি রাহমান, রাহিম, গাফফার, সাত্তার, তবু কাল কিয়ামতের ময়দানে তোমাদের গুনাহ সম্পর্কে সাক্ষ্য দেব। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘(হে মানুষ!) তোমরা যে কাজই করো, তোমরা যখন তাতে লিপ্ত থাক, তখন আমি তোমাদের দেখতে থাকি। তোমার প্রতিপালকের কাছে অণু পরিমাণ জিনিসও গোপন থাকে না—না পৃথিবীতে, না আকাশে এবং তার চেয়ে ছোট এবং তার চেয়ে বড় এমন কিছু নেই।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৬১)
তাই আসুন! অপ্রতিরোধ্য ও ব্যতিক্রমী ওই সব সাক্ষীর কথা সদা-সর্বদা দেহমনে, চিন্তা-চেতনায় জাগ্রত রেখে ছোট-বড় সব গুনাহ বর্জনে সচেতন ও সচেষ্ট হই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সহায় হোন।
পার্থিব জীবন ও আখেরাতের ভাবনা
মানবজীবনকে প্রবাহমান নদীর সাথে তুলনা করা হয়। নদীর বহতা যেমন থেমে না, তেমনি মানবজীবনের কোনো মুহূর্তই স্থির থাকে না। এর ক্ষয় আছে, আছে নিঃশেষ ও পরিসমাপ্তি। ইংরেজিতে বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ- ‘সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না।’
জীবন থেকে সময় একবার অতিক্রান্ত হলে তা আর কখনো ফিরে পাওয়া যায় না। সৃষ্টির শুরু থেকে এ পর্যন্ত পৃথিবীতে নতুন ও অভিনব অনেককিছু আবিষ্কৃত হলেও সময়কে ধরে রাখার মতো কোনো যন্ত্র এখনো তৈরি হয়নি। এজন্য মানুষের জীবনে সময়ের গুরুত্ব ও মূল্য সবচেয়ে বেশি।
জীবনকে সার্থক করতে হলে সময়ের সঠিক ব্যবহার অপরিহার্য। সময়ের শপথ করে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘সময়ের শপথ! মানুষ অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত; কিন্তু তারা নয়, যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্য ধৈর্যের উপদেশ দেয়।’- সূরা আসর : ১-৩
একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করা হলো- ‘ভাগ্যবান কারা? তিনি বললেন, ভাগ্যবান তারা, যারা দীর্ঘায়ূ লাভ করেছে এবং তা নেক আমলের মাধ্যমে অবিবাহিত করেছে। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হলো- দুর্ভাগা করা তিনি বললেন, দুর্ভাগা তারা, যারা দীর্ঘায়ূ পেয়েছে এবং তা বদ আমলে কাটিয়েছে বা আমলবিহীন অতিবাহিত করেছে।’- সুনানে তিরমিজি : ২৩২৯
অনন্তকালের এক জীবন- পরকাল। পরকালের পাথেয় সংগ্রহের একমাত্র জায়গা দুনিয়া। পরকালীন সুখ-শান্তি ও দুঃখ-কষ্ট নির্ভর করে দুনিয়াতে মানুষের কাজকর্ম ও জীবনাচার। মানুষের সৃষ্টি এবং তাকে দুনিয়াতে পাঠানো কোনো নিরর্থক বিষয় নয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমার ইবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি। আমি তাদের কাছে জীবিকা চাই না এবং এটাও চাই না যে, তারা আমাকে আহার্য যোগাবে। নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা জীবিকাদাতা, শক্তির আধার, পরাক্রান্ত।’- সূরা আয-যারিয়াত : ৫৬-৫৮
নির্দিষ্ট একটি গণ্ডি ও সীমারেখার মধ্যে থেকে মানুষকে দুনিয়ার জীবন অতিবাহিত করতে হবে। দুনিয়ার জীবনের স্বরূপ আলোচনায় পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহে অসংখ্য বর্ণনা এসেছে। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘এই পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক বৈ তো কিছুই নয়। পরকালের গৃহই প্রকৃত জীবন; যদি তারা জানত।’- সূরা আনকাবুত : ৬৪
‘তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ছাড়া আর কিছু নয়। যেমন এক বৃষ্টির অবস্থা, যার সবুজ ফসল কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, এরপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তাকে পীতবর্ণ দেখতে পাও, এরপর তা খড়কুটা হয়ে যায়। আর পরকালে আছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি।’- সূরা হাদিদ : ২০
‘প্রত্যেক প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যু। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলাপ্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, তার কার্যসিদ্ধি ঘটবে। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোনো সম্পদ নয়।’- সূরা আল-ইমরান : ১৮৫
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার কাঁধে হাত রেখে বলেন, ‘তুমি দুনিয়াতে এমনভাবে থাকে যেন তুমি একজন প্রবাসী অথবা পথচারী। আর তুমি নিজেকে একজন কবরবাসী বলে গণ্য করবে।’
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলতেন, ‘যখন তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হবে তখন সকালের অপেক্ষা করো না, আর যখন তুমি সকালে উপনীত হবে তখন সন্ধ্যার জন্য অপেক্ষা করো না। অসুস্থ হওয়ার আগে তোমার সুস্থতাকে কাজে লাগাও এবং মৃত্যুর পূর্বে তোমার জীবনকে মূল্যায়ন করো।’- সহিহ্ বোখারি : ৬৪১৬
দিন, মাস ও বছর শেষে মানুষ অনেককিছুর অংক কষে। বিগত সময়ের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসেব করে আগামী দিনের পরিকল্পনা আঁকে। বৈচিত্রময় এ দুনিয়ার চাকচিক্য ও মোহ এবং দৈনন্দিন জীবনের কর্মব্যস্ততা অনেক সময় মানুষকে আল্লাহর ভয়, মৃত্যুর স্মরণ ও আখেরাতের ভাবনা থেকে দূরে ঠেলে দেয়। মুমিনের জীবন কখনো এমন হতে পারে না।
আল্লাহর স্মরণ ও মৃত্যুপরবর্তী জীবনের কল্পনা মুমিনহৃদয়কে সবসময় জাগরুক রাখে। আল্লাহতায়ালা মুমিনদেরকে সম্বোধন করে বলেন, ‘মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহতায়ালাকে ভয় করো। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত, আগামী কালের জন্য সে কী প্রেরণ করে, তা চিন্তা করা। আল্লাহতায়ালাকে ভয় করতে থাক। তোমরা যা করো, আল্লাহতায়ালা সে সম্পর্কে খবর রাখেন।’- সূরা হাশর : ১৮
অন্যত্র তিনি বলেন, ‘যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন- কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিমি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়।’- সূরা মুলক : ২
হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আখেরাতের জীবনের প্রত্যাশা করে সে পার্থিব শোভা সৌন্দর্য পরিহার করে।’- সুনানে তিরমিজি : ২৩৮২
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ‘পাঁচটি বিষয়কে পাঁচটি বিষয় আসার পূর্বে গনিমত মনে করো; বার্ধক্যের আগে যৌবনকে, অসুস্থতার আগে সুস্থতাকে, দারিদ্রের আগে স্বচ্ছলতাকে, কর্মব্যস্ততার আগে অবসরকে এবং মৃত্যুর আগে জীবনকে।’- সুনানে বায়হাকি : ১০২৪৮
অন্য এক হাদিসে এরশাদ হয়েছে, ‘কিয়ামতের দিন বনি আদমকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পা আগে সরাতে দেওয়া হবে না- তার জীবন কিসে নিঃশেষ করেছে, যৌবনকাল কী কাজে ব্যয় করেছে, কোন পথে আয় করেছে, কোন খাতে ব্যয় করেছে এবং জ্ঞান অনুযায়ী কতটুকু কাজে পরিণত করেছে?’- সুনানে তিরমিজি : ২৪১৬
দুনিয়াতে মানুষের বেচে থাকতে হলে আহার্যের প্রয়োজন রয়েছে। আর এ জন্য জীবিকা উপাজর্নের বিভিন্ন মাধ্যম তাকে গ্রহণ করতে হয়। এটা দুনিয়ার চিরাচরিত নিয়ম। আল্লাহকে স্মরণ রেখে বৈধ পন্থায় জীবিকা উপার্জনে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’- সূরা জুমআ : ১০
আল্লাহর ভয়, মৃত্যুর স্মরণ ও আখেরাতের ভাবনা মানুষের পার্থিব ও পরকাল জীবনকে স্বার্থক করে তোলে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার সকল চিন্তাভাবনা একমাত্র আখেরাতের চিন্তায় বিলীন করে দেয়, আল্লাহ তায়ালা তার দুনিয়ার সকল চিন্তার ব্যাপারে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।’- সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৩৩০
হাদিসে কুদসিতে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে বনী আদম, তুমি আমার ইবাদতের জন্য সকল প্রকারের ঝামেলা থেকে মুক্ত হও, তাহলে আমি তোমার অন্তর প্রাচুর্যপূর্ণ করে দেবো।’- সুনানে তিরমিজি : ২৪৬৬
আপনার মন্তব্য লিখুন