শ্রীলঙ্কায় ঘটে যাওয়া একের পর এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা দেশটির অর্থনৈতিক বিপর্যয়কে নতুনভাবে তুলে ধরছে। শ্রীলঙ্কা পুলিশ গতকাল রবিবার জানিয়েছে, সস্তায় কেরোসিন এবং পেট্রোল কেনার জন্য দীর্ঘ সারিতে অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অন্তত দু’জন মারা গেছেন।
সম্প্রতি কাগজ সঙ্কটের কারণে দেশটির লাখ লাখ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারেনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ১৯৪৮ সালের পর এমন তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়েছে দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কা।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় অর্থনীতিক সঙ্কট আরও বেশি তীব্র আকার ধারণ করেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ঘাটতির কারণে প্রয়োজনীয় আমদানি করতে পারছে না শ্রীলঙ্কা। ফলে দেশটিতে খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বিদেশি ঋণের ফাঁদে আটকা পড়েছে শ্রীলঙ্কা।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের স্মরণাপন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। শ্রীলঙ্কাকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ঋণ দিয়েছে চীন। অর্থনীতিতে বিদ্যমান বিপর্যয় এড়াতে চীনের সাহায্যও চেয়েছে শ্রীলঙ্কার সরকার।
দেশটির এমন সঙ্কটের জন্য অনেকে শ্রীলঙ্কার প্রভাবশালী রাজাপাক্ষে পরিবারকে দোষারোপ করছেন। বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় সরকার পরিচালনার দায়িত্বে আছেন রাজাপাক্ষে পরিবারের একাধিক সদস্য। দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাক্ষে। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন গোতাবায়ার ভাই মাহিন্দা রাজাপাক্ষে। ২০০৪ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ও ২০০৫ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন মাহিন্দা। ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যান তিনি।
সেসময়ও রাজাপাক্ষে পরিবারে বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছিল। শ্রীলঙ্কার বর্তমান সরকারে রাজাপাক্ষে পরিবারের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। বলা হয়ে থাকে যে, জাতীয় বাজেটের ৭০ ভাগের ওপরই রাজাপাক্ষে পরিবারের ভাইদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
আপনার মন্তব্য লিখুন