যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও দলটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারার ওপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।
দলটি বলছে, জুলাই গণহত্যা ঘটিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে বিদেশে যাওয়ার পরও সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম অব্যাহত রেখে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে নিষিদ্ধ ও জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য হওয়ার অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আহ্বায়ক খোমেনী ইহসান এ কথা বলেন বলে দলটির সহকারী সদস্য সচিব আব্দুস সালাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিউইয়র্ক বিমানবন্দরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হওয়া এনসিপির নেতা আখতার হোসেনকে ডিম নিক্ষেপ ও তাসনিম জারাকে কটূক্তি করেছে। এ ঘটনায় প্রমাণ হয়েছে চব্বিশের জুলাইয়ে শত শত ছাত্র-জনতাকে গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগ তাদের অপরাধের জন্য বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নয় বরং জুলাই যোদ্ধাদের এখনো দেখতে পেলে ঝাঁপিয়ে পড়তে দ্বিধা করে না লীগের ফ্যাসিস্টরা।
খোমেনী ইহসান নিউইয়র্কে হামলার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বহীনতার কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সফরে প্রধান উপদেষ্টার পাশাপাশি তার সফরসঙ্গীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু সরকার শুধু প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা দিয়েছে ও সফররত রাজনৈতিক নেতাদের হামলার মুখে ঠেলে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে উধাও হয়ে গেছে। বিশেষ করে জুলাই বিপ্লব সমর্থক প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিমানবন্দরের ভিন্ন গেটে অপেক্ষমাণ রেখে সফররত নেতাদের আওয়ামী নেতাকর্মীদের জটলা করা গেট দিয়ে বের করা হয়। ফলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল, প্রোটোকল ও নিরাপত্তায় জড়িত কর্মকর্তারা হামলার দায় এড়াতে পারেন না।
বিবৃতিতে জুলাই গণহত্যায় জড়িত ফ্যাসিবাদী দল ও সংগঠনের বিচারে সরকারকে গড়িমসি ও কালক্ষেপণের কৌশল ত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, চব্বিশের জুলাইয়ে বাংলাদেশের নিরপরাধ মানুষকে পদ্ধতিগতভাবে টার্গেট করে নির্মূল করার মধ্য দিয়ে মানবতার বিরুদ্ধে অমার্জনীয় অপরাধ সংঘটিত করা হয়েছে। হাসিনা রেজিমের পাশাপাশি এ অপরাধে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দল, সংগঠন এবং তাদের সহযোগী গোষ্ঠীগুলো জড়িত ছিল। ফ্যাসিবাদবিরোধী সাংবিধানিক আইন করে এসব রাজনৈতিক সত্ত্বাকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিচারের মুখোমুখি করা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কর্তব্য। এ কর্তব্য পালনে গড়িমসি করলে ফ্যাসিবাদ যে পুনরায় ফিরে আসতে পারে তা নিউইয়র্কের হামলায় প্রমাণিত হয়েছে।
বিবৃতিতে ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দল, সংগঠন এবং তাদের সহযোগী গোষ্ঠীগুলোর উত্থানের বিরুদ্ধে জনগণ, অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজকে চিরকাল সতর্ক